নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় আড়াই বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার দায়ে হৃদয় সরকার নামে এক কিশোরকে ১০ বছরের বিনাশ্রম আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ আদেশ দেন।
রায়ে আদালত বলেন, অভিযুক্ত হৃদয় সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে ১০ বছরের বিনাশ্রম আটকাদেশ দেওয়া হলো। ইতিমধ্যে আসামি যে কয়েক দিন আটক ছিল, তা রায়ে ঘোষিত আটকাদেশ থেকে বাদ যাবে।
মামলার সময় হৃদয়ের বয়স ১৭ বছর থাকলেও বর্তমানে ২২ বছরের যুবক। সাজাপ্রাপ্ত হৃদয় সরকার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারপাড়া এলাকার প্রদীপ সরকারের (৪১) ছেলে। অপরদিকে হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু দৃষ্টি ঘোষ একই এলাকার মোহন কুমার ঘোষের মেয়ে।
রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি আইনজীবী আনিছুর রহমান জানান, ঘটনার সময় হৃদয়ের বয়স ছিল ১৭। অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে তার বিচার হয়েছে। রায় দেওয়ার সময় হৃদয় প্রাপ্তবয়স্ক হলেও ঘটনার সময়ের বয়স বিবেচনায় নিয়ে শিশু আইন অনুযায়ী তার দণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামি হৃদয়ের বাবা ও মা। জেলা দায়রা জজ আদালতে তাদের মামলা চলছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ মে বেলা ১১টায় উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারপাড়া এলাকার মোহন কুমার ঘোষের মেয়ে দৃষ্টি নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানান শিশুটির বাবা। পরের দিন মোহনের প্রতিবেশী প্রদীপ সরকারের বাড়িতে একটি টিনের বাক্স থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ প্রদীপ সরকার (৪১), তার স্ত্রী সন্ধ্যা রিতা (৩৫) ও ছেলে হৃদয় সরকারকে আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দৃষ্টিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা মোহন সরকার বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
উপ-পরিদর্শক সুব্রত কুমার মাহাতো তদন্ত করে হৃদয়ের বিরুদ্ধে হত্যা এবং অন্যদের বিরুদ্ধে হত্যায় সহায়তা ও লাশ গুম করার অভিযোগে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ঘটনার সময় হৃদয় অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় নাটোরের শিশু আদালতে তার বিচার হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই