বগুড়ায় দফায় দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগের ফলে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। জেলায় চালের পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তা প্রতি ১’শ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বাড়তি দরে চাল বিক্রি করার উপযুক্ত কোন কারণ দেখাতে পারেননি অনেক খুচরা ব্যবসায়ী। ঘুরে ফিরে তেলের বাড়তি দামের অজুহাত দেখিয়ে আসছে। এবার জেলা প্রশাসন সজাগ হওয়ায় চালের দাম কমতে শুরু করলো।
সোমবার শহরের কালিতলা, রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার ও গোদার পাড়া পাইকারি বাজার ও বিভিন্ন খুচরা দোকান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে কাটারীভোগের দাম ছিল ৭০-৭২ টাকা কেজি। তা এ সপ্তাহে কমে পাইকারীতে ৬৬-৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রনজিত জাতের চাল কেজিতে ২টাকা কমে ৫২-৫৩ টাকা, আটাশ ৫৬ টাকা কেজি থেকে কমে ৫৪ টাকায়, নাজিরশাইল ৭৫টাকা থেকে কমে ৭৪টাকা, ২৯ জাতের চাল ৫৬ টাকা থেকে কমে ৫২-৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে, পাইকারী বাজারে চালের দাম কমলেও খুচরা বাজারে আগের দামেই বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বাজারে কাটারীভোগ ৭০-৭২ টাকা, রনজিত ৫৫-৫৬ টাকা, আটাশ ৫৬-৫৮, নাজির ৭২ টাকা এবং ২৯ জাতের চাল কেজিতে ৫৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ফতেহ আলী বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী শ্রীকৃষ্ণ চাউল ভান্ডারের মিন্টু জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি পর্যায়ে চালের বাজার কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে। বস্তা প্রতি চালে ১’শ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। চালের সরবরাহ ভালো। দামটাও কিছুটা কমেছে। তবে চালের বাজার দর তো বিভিন্ন কারণে ওঠা-নামা করে। হুট করে আবার কখন আবার বেড়ে যায় বলা মুশকিল।
বগুড়া কালিতলা বাজারের পাইকারী চাল ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা বলেন, বিক্রি কমে গেছে। সেই তুলনায় চালের সরহরাহ বেশি। তাই পাইকারীতে দাম কমতে শুরু করেছে।
বগুড়া শহরের গোদারপাড়ার চাল ব্যবসায়ী মাসুদ রানা জানান বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ার কারণে পাইকারীতে দাম কমেছে। দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে খুচরা বাজারেও চালের দাম কমবে।
বগুড়া শহরের কালিতলা বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা ফরিত উদ্দিন জানান, আমাদের দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পরিবহন খরচ, শ্রমিকের মজুরি অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়। তাই খুচরায় দু চার টাকায় বাড়তি বিক্রি না করলে পোষায় না।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আশ্রাফুজ্জামান জানান শীঘ্রই চালের বাজার স্বাভাবিক হবে। পাইকারীতে কমতে শুরু করেছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে
খুচরা বাজারেও চালের দাম কমে আসবে। চালের বাজার যেন বিনা অজুহাতে না বাড়ে সে দিকে নজরদারি করা হচ্ছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক জানান, চালের বাজার হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার পর অনিয়ম রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। যেখানে পাইকারি বাজার সেখানে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। বিনা কারণে চালের দাম যেন না বাড়ে। জেলা প্রশাসন থেকেও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় যেন চালের দাম বৃদ্ধি না হয়। এসব কিছু উদ্যোগের কারণে পাইকারি বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম