গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানাধীন ডেগেরচালা এলাকায় এক শিশু ছাত্রকে যৌন হয়রানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মাদরাসার চার শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সহকারী কমিশনার মো: আবু সায়েম নয়ন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানার ডেগেরচালা এলাকার মঈনুল ইসলাম হামীয়ুস সুন্নাহ মাদরাসার শিক্ষক ও গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার রাখাল বুরুজ এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আব্দুর রহমান ওরফে শান্ত ইসলাম (২২), মাদরাসার অধ্যক্ষ ও মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের জাজিরা এলাকার মোবারক আলী খলিফার ছেলে মো: ইসমাইল (৪৪), নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার আমিরপুর এলাকার হারুন-অর-রশিদের ছেলে ফকরুল ইসলাম (২৭) এবং ময়মনসিংহ সদরের গোষ্টা চরপাড়া এলাকার আজিজুল হকের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩২)।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু সায়েম নয়ন জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানার ডেগেরচালা এলাকার মঈনুল ইসলাম হামীয়ুস সুন্নাহ মাদরাসায় গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে মাদরাসার আবাসিক শিক্ষক শান্ত ইসলাম চকোফান বিস্কুট দেবার প্রলোভন দেখিয়ে এক শিশু ছাত্রকে যৌন হয়রানি (বলাৎকার) করেন। পরে ওই শিশু ঘটনাটি তার বাবাকে জানায়। শিশুটির বাবা মাদরাসার অধ্যক্ষসহ অন্য দুই শিক্ষকের কাছেও ওই বিষয়ে অভিযোগ দেন। মাদরাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা বিষয়টি সমাধান করবেন বলে শিশুটির বাবাকে আশ্বাস দিলেও তারা কৌশলে কালক্ষেপণ করেন, যাতে যৌন হয়রানির আলামত নষ্ট হয়ে যায়। গত ১২ সেপ্টেম্বর শিশুটির বাবা আবারও শিক্ষকদের কাছে গেলে তারা জানান, পরীক্ষা শেষ হলে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। শিশুটির বাবা কোনো প্রতিকার না পেয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানান। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে সোমবার বিকেলে আটক করতে গেলে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষসহ অন্য দুই শিক্ষক পুলিশের কাজে অসহযোগিতা ও বাধা দেন। পরে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার গাছা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পরবর্তীতে অভিযুক্ত শিক্ষক এবং মাদরাসার অধ্যক্ষসহ আরও দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
জিএমপি’র গাছা থানার ওসি মো: ইব্রাহিম হোসেন জানান, ভিকটিমের বাবা কোন প্রতিকার না পেয়ে ঘটনাটি গাছা থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করতে গেলে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষক পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম