৩ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:৩১

ধানের পোকা দমনে কৃষকপ্রিয় পার্চিং পদ্ধতি

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

ধানের পোকা দমনে কৃষকপ্রিয় পার্চিং পদ্ধতি

ফলন সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব ধানের ক্ষেতে পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কৃষকদের মাঝে। 

ধানের ক্ষেতে গাছের ডাল, খুঁটি, বাঁশের কঞ্চি ও ধৈঞ্চার ডাল লাগানো হয়। বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরা এসবের ওপর বসে ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। এ পদ্ধতিকেই ‘পার্চিং’ বলা হয়। 

কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, পরিবেশ বান্ধব ধৈঞ্চা গাছে পাখি বসে ধানের ক্ষতিকর পোকা-মাকড় ধরে খায়। অপরদিকে গাছের ঝরা পাতা জৈব সার হিসেবে ক্ষেতের উপকারসহ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে কৃষকরা। এ কারণে দিন দিন জনপ্রিয় পার্চিং এর ব্যবহার।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধান ক্ষেতের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ হাত দূরে দূরে গাছের ডাল কিংবা 
ধৈঞ্চা ডাল পুঁতা। সেখানে কিছুক্ষণ পরপর উড়ে এসে বসছে শালিক, ফিঙে, বুলবুলিসহ নানা জাতের পাখি। একটু পরপর ডাল থেকে ধানগাছের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে পাখিগুলো আর পোকা ধরে খাচ্ছে। যে জমিতে পোকা বেশি, সেই জমিতে পাখির আনাগোনাও বেশি।

গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক এনামুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন ধরনের পোকা খাদক পাখি যেমন-শালিক, বুলবুলি, ফিঙ্গে পার্চিংয়ের ওপরে বসে। সেখান থেকে উড়ে গিয়ে ক্ষতিকারক পোকা ও পোকার ডিম খেয়ে ফেলে। এর ফলে কীটনাশক ছাড়াই পোকার আক্রমণ থেকে ধানগাছগুলো রক্ষা পাচ্ছে। 

আরেক কৃষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, ক্ষতিকর পোকামাকড় চুপচাপ বসে রস চুষে খায় বা ফসল কেটে বা কুরে কুরে খায়। পাখিরা যেন সহজেই ক্ষতিকর পোকামাকড়গুলো দেখতে পায় এবং ধরতে পারে সে জন্যই একটু ঘন ঘন পার্চিং দেওয়া হয়। 

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার ১৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮হাজার হেক্টর জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন কৃষকরা।

থানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় জানান, এ পদ্ধতি বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে ভূমিকা রাখছে। সেই সঙ্গে জমিতে জৈব সার হিসেবে পাখির বিষ্ঠা পড়ে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধান চাষে কয়েক বছর ধরে পার্চিং পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ পদ্ধতিতে ফসলি জমিতে পুঁতে রাখা ডালগুলোর ওপর পাখি বসে ফসলের জন্য ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে ফেলার ফলে আর কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। এতে কম খরচে অধিক ফলন পাওয়া যায়।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর