এ শীতে কেউ আমাদের খবর নেয়নি। চেয়ারম্যান মেম্বর ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও আমাদের দেখতে আসেননি। হাড়কাঁপানো শীতের সঙ্গে আমরা লড়াই করে বেঁচে আছি। পুলিশ সুপার আমাদের জন্য আর্শীবাদ নিয়ে এসেছেন। আমরা এ প্রথম একটি শীতবস্ত্র (কম্বল) পেয়েছি। কথাগুলো বলছেন- কুলসুম বেগম, গিয়াস উদ্দিন ও শরীফ মাঝি। তারা লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের দুর্গম প্রান্তের বয়ারচর টাংকি বাজার এলাকার বসবাসরত বাসিন্দা।
শনিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ নিজ উদ্যোগে টাংকি বাজার পুলিশ ক্যাম্প প্রাঙ্গণে প্রায় এক হাজার গরীব অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন।
কম্বল পেয়ে কুলসুম বেগম বলেন, আমি অনেক খুশি। জীবনের এ প্রথম একটি কম্বল পেলাম। কেউ কখনো আমাদের খবর নেননি। খুব কষ্ট করে চলতে হয়। আমার স্বামী ইট ভাটার শ্রমিক। ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে আমাদের জীবন সংসার। আল্লাহ এসপি স্যারকে সুস্থ ও ভালো রাখুক। আমরা ওনার জন্য দোয়া করি।
কৃষক গিয়াস উদ্দিন জানান, নদী ভাঙনের সঙ্গে আমাদের সংগ্রাম। নদীর গর্ভে আমাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। কৃষিকাজ ও নদীতে মাছ ধরা আমাদের পেশা। নদীর পাড়ে অনেক শীত। সবসময় ঠান্ডা বাতাস ভয়ে আসে। আমাদের গ্রামে এ প্রথম শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে প্রথমে। একজন পুলিশ সুপার এ দুর্গম চরে এসে আমাদের কম্বল দিবে।
শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণে উপস্থিত ছিলেন রামগতির (সার্কেল) সাইফুল ইসলাম, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর, রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য (ভিপি) হেলাল উদ্দিন, চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাহিদুল ইসলাম সুমন, চর আব্দুল্লাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মঞ্জুসহ প্রমুখ।
পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, শীতার্ত মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যে মানতা জনগোষ্ঠী, বেদে পল্লী, ছিন্নমূল মানুষ ও খুঁজে খুঁজে অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করে আসছি। আমি চায় আমার এ দেখাকে উপলব্ধি করে সমাজের বৃত্তবানরা এগিয়ে আসুক।
বিডি প্রতিদিন/এএ