মহান ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছরেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার। এছাড়া জেলার মাত্র দুটি মাদ্রাসায় শহীদ মিনার রয়েছে। ফলে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতির প্রতি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা নিবেদন ও ভাষা সৈনিকদের অবদান সম্পর্কে জানার আগ্রহও সৃষ্টি হচ্ছে না। তাদের মনে জেগে উঠছে না মনন ও মানসিকতা বিকাশের বাঙালি সংস্কৃৃতি আন্দোলনের গৌরবগাঁথা ইতিহাস।
জানা গেছে, জেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব বিদ্যালয়ে নামমাত্র অনুষ্ঠান করা হলেও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে না কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। যদিও সরকারি আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক। এদিকে উপজেলার কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, তার কোনো পরিসংখ্যান বা জরিপ নেই সংশ্লিষ্ট দফতরে।
অনুমানভিত্তিক বলা হয়, জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার। অথচ দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ২০২০ সালে হাইকোর্ট আদেশ দিলেও তার কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই। শুধু তাই নয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডও ২০১৬ সালে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের আদেশ দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।
সূত্রমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচটি উপজেলা ও পৌরসভা মিলে ৪৮টি সরকারি-বেসরকারি কলেজ রয়েছে, সরকারি-বেসরকারি স্কুল রয়েছে ২৫১টি এবং ১৩৫টি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কামাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, আলীনগর উচ্চ বিদ্যালয়, বীর বিক্রম মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, কালেক্টরেট গ্রীণ ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়, কালেক্টরেট ইংলিশ স্কুলসহ অনেক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বলছেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় তা নির্মাণ করা যাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. মো. রুহুল ইসলাম জানান, তিনি যোগদানের পরপরই শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করেছেন। অর্থ বরাদ্দ পাওয়ামাত্রই কাজ শুরু করা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রওশন আলী জানান, প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ না থাকায় প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এরপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সকলের সমন্বয়ে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই