লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত ও কয়েকটি ওষুধ খাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি বাড়িতে বললে তাকে ফের মারধর ও হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন। বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে কয়েকজন কিশোর প্রায়ই তাকে উত্যক্ত করতো বলে জানিয়েছে তার ফুফাতো বোন ও দাদি।
ওই ছাত্রী রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইচা গ্রামের মেয়ে। সে স্থানীয় বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
ছাত্রী ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সে স্কাউটের সদস্য। প্রতি বৃহস্পতিবার স্কাউটের প্রোগ্রাম থাকে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে একা বাড়ি ফেরার পথে তিনটি স্থানে মুখোশ পড়া অবস্থায় কয়েকটি ছেলে তিশাকে ঘেরাও করে। এরমধ্যে চৌধুরী বাজারের পাশে রাস্তার ওপরে মুখোশ পরিহিতরা তাকে ধরে কয়েকটি ওষুধ জোর করে খাইয়ে দেয়। একপর্যায়ে তাকে ক্যাবল তার দিয়ে পায়ে এলোপাতাড়ি পেটায়। ইট দিয়েও পায়ে আঘাত করে। পরে মুখোশধারী একজনকে কামড়ে সে ঘটনাস্থল থেকে দৌঁড়ে বাড়িতে চলে যায়। এরপর সে প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় থেকে ফেরার ক্লান্তি ভেবে পরিবারের লোকজন তার অসুস্থতাকে গুরুত্ব দেইনি। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত ৩ টা ২০ মিনিটে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছাত্রী বলেন, ওষুধগুলো জোরপূর্বক তাকে খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কালো কাপড়ে ছেলেগুলোর মুখ ঢাকা ছিল। এজন্য সে কাউকে চিনতে পারেনি। তাকে ক্যাবল তার দিয়ে পিটিয়েছে। ইট দিয়েও আঘাত করেছে। বাড়িতে কাউকে বললে, হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে তাকে। অচেনা কিছু ছেলে তাকে প্রায়ই উত্যক্ত করতো।
তার ফুফাতো বোন বলেন, তাকে কিছু ছেলে উত্যক্ত করতো। বিষয়টি সে আমাদের জানায়। পরে মামাকে নিয়ে ওই ছেলেদের নিষেধ করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি সকালে জানতে পেরেছি। তবে বিস্তারিত জানা নেই। বিদ্যালয়ে কিংবা আসা-যাওয়ার পথে তাকে উত্যক্তের বিষয়টিও কেউ কখনো জানায়নি আমাকে। প্রতি বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে স্কাউটের কার্যক্রম চলে। সেও স্কাউটিংয়ের সড়ে জড়িত রয়েছে।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ কে আজাদ বলেন, মারধর করা হয়েছে বলে ওই ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি। এরবেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। যদি অন্যকোন অভিযোগ থাকে, তাহলে আগে থানায় অবিহিত করতে হবে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাদেরকে জানায়নি। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল