ফরিদপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলামকে (৩৮) হত্যার ঘটনার ১০ বছর পর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
একই সাথে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাদের প্রত্যেককে আরো তিনমাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের চতুল গ্রামের বকুল মোল্লা (৩২), সুজা মোল্লা (৩৩), নজরুল মোল্লা (৫৫) ও দুই সহোদর ফিরোজ মোল্লা (৩৫) ও মঞ্জু মোল্লা (৩২)। রায় প্রদানের সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে পুলিশ প্রহরায় তাদের জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বিকেল তিনটার দিকে শিক্ষক কামরুল বাড়ি থেকে একটি বাইসাইকেলে করে বোয়ালমারী বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি চতুল চিতাঘাটা এলাকায় মঞ্জু মোল্লার দোকানের সামনে পৌঁছালে উল্লেখিত পাঁচ ব্যক্তিসহ মোট ১২জন স্থানীয় গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র করে কাঠের লাঠি, বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে কামরুলকে। এসময় ওই শিক্ষকের কাছে থাকা নগদ সাড়ে সাত হাজার টাকা ও ১৮ হাজার টাকা দামের একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
আহত শিক্ষক কামরুলকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থনান্তর করেন। ঢাকা নেওয়ার পথে ওইদিন (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে নয়টার দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই এস এম খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে ১২ জনের নামউল্লেখ করে বোয়ালমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিপূণ মজুমদার এহাজারভুক্ত ১২জন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২এর এপিপি সানোয়ার হোসেন জানায়, আদালত এ হত্যা মামলার ১২জন আসামির মধ্যে পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। তিনি বলেন, বাকি সাত আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল