গরিবদের জন্য এবারও প্রতি লিটার ১০ টাকা দরে দুধ দিচ্ছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার রৌহা গ্রামের শিল্পপতি এরশাদ উদ্দিন। শুক্রবার প্রথম রমজান থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেছেন, শেষ রমজান পর্যন্ত চলেবে। নিজের খামারে উৎপাদিত দুধ প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ জনকে দিচ্ছেন তিনি।
শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে তার খামার জে.সি এগ্রোতে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষের লম্বা লাইন। প্রত্যেকের হাতে খালি বোতল ও কনটেইনার। মুড়িকান্দি গ্রামের নঈম উদ্দিনের স্ত্রী রিনা লাইনে দাঁড়িয়েছেন দুধ নিতে। তিনি বলেন, ‘সারা বছর দুধ খাইতাম পারি না। রোজার মইধ্যে এরশাদ ভাই আমরার লাইগ্যে ১০ ট্যাহায় দুধ দেয়। তিন বছর ধরেই ১০ ট্যাহায় দুধ পাই। দুধ দিয়ে খায়া শান্তিমতো রোজা রাখতাম পারি।’
একই গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার স্ত্রী আসমা বলেন, ‘বাজারে দুধের যে দাম, আমরার মতো মানুষ দুধ খায়াম ক্যামনে? এরশাদ ভাই ১০ ট্যাহায় দুধ দেওয়ায় আমরা খাইতাম পারতাছি।’এরশাদ উদ্দিন জানান, রমজান এলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। গরিব মানুষের কথা চিন্তা করে শুধুমাত্র রমজান মাসে তিনি প্রতি লিটার দুধ ১০ টাকায় বিক্রি করছেন। এছাড়াও গ্রামের ইমাম, শিক্ষকসহ অনেকের বাড়িতেই তিনি তার খামারের দুধ পৌঁছে দিচ্ছেন। তিনি জানান, তার খামারে দুগ্ধ ও মোটা তাজাকরণের ৪০০ গরু রয়েছে। এরমধ্যে গাভী ৬৫টি। দুধ দিচ্ছে ২৫টি গাভী। এ থেকে দৈনিক ৭০-৮০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। খামারে উৎপাদিত সব দুধ পুরো রমজানে গরিবদের জন্য ১০ টাকা দরে বিক্রি করবেন তিনি। তিন বছর ধরেই এভাবে বিক্রি করছেন। তবে অতি দরিদ্র কেউ টাকা ছাড়া এলেও খালি হাতে ফিরছে না। বোতলে ভরে দুধ নিতে পেরে তৃপ্তির হাসি হাসছেন তারা।
এরশাদ উদ্দিন কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং জে. সি এগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান। তিন বছর আগে এরশাদ উদ্দিন নিজ এলাকায় জে. সি এগ্রো ফার্ম নামে খামারটি প্রতিষ্ঠা করেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল