সাজা থেকে বাঁচতে ২৭ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার পুরুরা গ্রামের কামাল হোসেন (৫২)। তবুও শেষ রক্ষা হলো না যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এ আসামির।
বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার ভালুকা মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামি কামাল হোসেন উপজেলার পুরুরা গ্রামের আব্দুল রাজ্জাকের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ১৯৯৬ সালে আসামি কামাল হোসেনের সাথে উপজেলার ভরাডোবা গ্রামের হযরত আলীর মেয়ে সুরাইয়া খাতুনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে তারা উভয় পরিবারের অগোচরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিছুদিন পর কামাল হোসেন জানতে পারে সুরাইয়া খাতুনের সঙ্গে তার বিয়ের আগে আরও দুটি বিয়ে হয়। সুরাইয়ার প্রথম স্বামীর ঘরে তিনটি ছেলে সন্তান ও দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এর পর থেকেই দুইজনের মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। পরে কামাল হোসেন অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করার এক পর্যায়ে সুরাইয়া খাতুন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের সাত দিন পর পার্শ্ববর্তী নারাংগীপাড়ার কুদ্দুস মিয়ার বাড়ির পাশে ল্যাট্রিন থেকে সুরাইয়ার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় সুরাইয়ার বাবা হযরত আলী বাদী হয়ে ভালুকা থানায় কামাল হোসেন, ইসমাইল হোসেন, হেলেনা খাতুন, তারাফ হোসেন, জামিলা খাতুন, মর্জিনা খাতুন ও আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আদালতে দীর্ঘ বিচার শেষে গত ২১ জুলাই ২০১৯ সালে আসামি কামাল হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। অপরদিকে ওই মামলার আসামি তারাফ হোসেন, জামিলা খাতুন ও মর্জিনা খাতুন মৃত্যুবরণ করায় অব্যাহতি প্রদান এবং আসামি আব্দুর রাজ্জাক, ইসমাইল হোসেন ও হেলেনা খাতুনকে খালাস প্রদান করে।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই কাজল হোসেন, এসআই নজরুল ইসলাম ও এএসআই পাইলট ভৌমিকের নেতৃত্বে গাজীপুরের কাশিমপুরের একটি চায়ের দোকান থেকে কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি হত্যা মামলায় আসামি। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত