ফেনীতে স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শহিদুল ইসলাম সুমনকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ঢাকা হযরত শাহজালাল (রাঃ) আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফেনী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা চলমান আছে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিনের পশ্চিম সিলোনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুছ সামাদের মেয়ে তাসলিমা আত্তার (৩৫) ও একই ইউপির গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত খাজা আহমদের ছেলে শহিদুল ইসলাম সুমন (৪০) ২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে ভালোবেসে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে উভয় পরিবারের সম্মতিতে সামাজিকভাবে সুমন স্ত্রী তাসলিমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। তাদের পরিবারে বর্তমানে দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। কয়েক বছর সুন্দরভাবে তাদের সংসার চলছিল। পরে তাসলিমা জানতে পারে তার প্রবাসী স্বামী অন্য নারীতে আসক্ত ও লোভী স্বভাবের। এসব বিষয়ে তাসলিমা বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করলে তাদের পরিবারে নেমে আসে অশান্তি। সুমন প্রবাস থেকে দেশে আসলে তাসলিমাকে বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। এক পর্যায়ে সুমন পরিবারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ায় তাসলিমা তার সন্তানদেরকে নিয়ে পড়েন বিপাকে।
এদিকে ২০২২ সালে হঠাৎ সুমন বিদেশ থেকে ফোন করে স্ত্রী তাসলিমাকে বলে বিদেশ আর ভালো লাগে না, দেশে এসে কিছু করবে। তাকে তার বাপের বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দিতে বলে। তখন তাসলিমা এ বিষয়ে সম্মতি না দিলে সুমন তার নিজের ভাই অজি উল্ল্যা ভূঞা, রহিম উল্লাহ ভুঞা ও বোন মিনা আক্তারকে নিয়ে পারিবারিকভাবে হেনস্থা করে। তারা তাসলিমাকে তার বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। চাহিদাকৃত টাকা না দিলে প্রায় সময় তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতো। সর্বশেষ গত ২৯ অক্টোবর সকালে তাসলিমার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় সুমনের ভাই-বোনরা। তখন এ ঘটনা তার মাকে জানালে আত্মীয় স্বজনরা এসে তাকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা শেষে ওই দিনই এ ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তারা ফেনী নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় চলতি মাসের ৫ তারিখ আসামি শহিদুল ইসলাম সুমনের নামে ওয়ারেন্ট জারি হলে ফেনী মডেল থানা পুলিশ গতকাল বুধবার তাকে ঢাকা বিমান বন্দর থেকে গ্রেফতার করে ফেনী নিয়ে আসে।
আজ বৃহস্পতিবার কোর্টে চালান দেয়া হবে বলে জানান ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ