লক্ষ্মীপুরে মমতাজ বেগম নামে এক নারীকে হত্যার দায়ে তার ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকিকে আটক করা হয়েছে। কাগজে শয়তানের ছবি এঁকে মাকে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ। এর আগে দুপুরে পৌরসভার মজুপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি জানান, গ্রামের বাড়িতে মমতাজ ও তার বড় ছেলে বাপ্পী ঈদ উদযাপন করতে যায়। কিন্তু ছোট ছেলে রকি সেখানে যায়নি। সে কোয়ার্টারেই ছিল তিনদিন ধরে। ছোট ছেলের সঙ্গে মমতাজের ব্যক্তিগত জীবন যাপন নিয়ে মনমালিন্য ছিল। সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকালে বড় ছেলে বাপ্পি তার মাকে বাসে উঠিয়ে দেয় বাড়িতে আসার জন্য। মমতাজ বেগম বাড়িতে আসলে রাতে ছোট ছেলে রকি ধারালো ছুরি দিয়ে মাকে হত্যা করে তারপর টুকরো টুকরো করে কেটে রেখে পালিয়ে যায়। এর আগে একটি কাগজে ছবি এঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। হত্যার পর বড় ছেলে বাপ্পী বাড়িতে এসে দরজায় রক্ত দেখে ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পেছনের দরজা দিয়ে বাসায় ঢুকে পুলিশ। ঢুকতেই একটি পাটি দিয়ে ঢাকা অবস্থায় মমতাজের বেগমের শরীরের কাটা অংশ দেখতে পাওয়া যায়। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) নিহত মমতাজের মেয়ে রোজি আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সদর মডলে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে সিসি টিভি পর্যবেক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রকিকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞেসাবাদ করলে সে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।
নিহত মমতাজ বেগম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। তার স্বামী সড়ক বিভাগে চাকরি করতেন। স্বামী মতিন মারা যাওয়ার পর থেকেই মমতাজ তার দুই ছেলে বাপ্পি ও রকিকে নিয়ে সড়ক বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস করে আসছেন। তার বড় ছেলে বাপ্পি বর্তমানে মাষ্টার রুলে সড়ক বিভাগে কাজ করছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ডিআইওয়ান আজিজুর রহমান মিয়া, সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিনসহ জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
বিডি প্রতিদিন/এএম