বুদ্ধ পূর্ণিমা উদ্যাপন উপলক্ষে রাঙামাটি সরকারি কলেজ চত্বরে আনন্দ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার র্যালির উদ্বোধন করেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। এ সময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
র্যালিটি কলেজ গেট এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা মৈত্রী বিহার এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। হাজারো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে আনন্দ র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
রাঙামাটি রাজবন বিহারে ধর্মীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বুদ্ধ পূর্ণিমা উৎসব। এরপর চলে বুদ্ধ স্নান। বুদ্ধ মূর্তির মাথায় ফল আর জল ঢেলে প্রার্থনা শুরু করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। বিহারে দিনব্যাপী চলে বৌদ্ধ মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, বুদ্ধ পূজা, পিন্ডদান, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি। ভক্ত ও আর পূণ্যার্থীদের পদচারণায় কানায় কানায় ভরে ওঠে রাঙামাটি রাজবন বিহার এলাকা। পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে রাঙামাটি রাজবন বিহার হলো বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার। এখানে দেশি-বিদেশি পূণ্যার্থীরা ছুটে আসেন ধর্মীয় টানে।বৌদ্ধ ধর্মালম্বী উদায়ন বড়ুয়া বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা এ দিনটিকে বুদ্ধত্ব লাভ হিসেবে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছেন। রাঙামাটি রাজবন বিহার ও মৌত্রি বিহারে উৎসবে যোগ দিতে ঢল নামে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী-পুরুষের। এ পূজাতে অংশগ্রহণ করলে পূর্ণতা লাভ করা যায়।
অঞ্জনা চাকমা বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বারো মাসই চলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ধর্মীয় নানা উৎসব। তার মধ্যে ভিন্নভাবে ভিন্ন আঙ্গিকে পালন করা হয় বুদ্ধ পূর্ণিমা কিংবা বৈশাখী পূর্ণিমা। কারণ, এ বৈশাখী পূর্ণিমাতেই জন্ম হয় বুদ্ধের। দিনটিকে স্মরণ করতে পাহাড়ে বিহারে বিহারে চলছে নানা ধর্মীয় আচার-উৎসব। পার্বত্যাঞ্চলের ১০ ভাষাভাষী ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এ পূণ্যকাজে অংশগ্রহণ করেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী বলেন, গৌতম বুদ্ধ সব সময় নির্দেশনা দিয়েছেন অহিংসা পরিহার করতে। পৃথিবীর সুখ-শান্তি স্থায়ীত্ব করতে হলে শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপন করতে হবে একে অন্যের মধ্যে। তাই আমাদের বিশ্বাস, বুদ্ধ পূর্ণিমার প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ যাতে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে সরকার তার জন্য নানাভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। শান্তি, সম্প্রীতি, ঐক্য রাখতে ধর্মের বিকল্প নেই। পৃথিবীতে একমাত্র ধর্মই সুখ-শান্তি নিয়ে এসেছে। ধর্ম চর্চার মধ্য দিয়ে সামাজিক অপরাধ যেমন কমে আসবে তেমনি সহিংসতাও দূর হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল