কুমিল্লার দেবিদ্বারে বাবার বুদ্ধিমত্তায় আটক হয়েছে ছেলের অপহরণকারী। খবর পেয়ে চক্রের অন্য সদস্যরা অপহৃতকে ফেলে পালিয়েছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার মাশিকাড়া বাজারের লাভলু মিয়ার মোবাইল ফোনে টাকা উঠানোর( বিকাশ) দোকানে। অপহৃত কিশোর ফরহাদ (১৬) উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক জামাল হোসেনের ছেলে।
অপহরণ চক্রের সদস্য আটক যুবক আশরাফুল ইসলাম (২০) একই উপজেলার শাকতলা গ্রামের মো. রুবেল মিয়ার ছেলে। আটক আশরাফুলকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেলে মোহাম্মদপুর গ্রামের সিএনজি চালক জামাল হোসেনের ছেলে ফরহাদ তার মামার বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার পাঁচকুড়ি গ্রামে যাওয়ার পথে কাচিসাইর বাজার এলাকায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। কিছুদুর যাওয়ার পর ফরহাদকে ডেকে নিয়ে মোবাইল ফোন ফেরত দেবার শর্তে মোটরসাইকেলে উঠতে বলে। ফরহাদ মোটর সাইকেলে উঠলে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৫টায় ফরহাদের মোবাইল ফোন থেকে তার বাবার নিকট সন্তানের মুক্তিপণ বাবত ২০ হাজার টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। ভিক্টিমের বাবা ১০ হাজার টাকা তাদের পাঠানো বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে ওই বিকাশ নম্বরে ফোন করে স্থান জানতে চান এবং ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মাশিকাড়া বাজারের বিকাশ দোকানের মালিক লাভলুকে টাকা নিতে আসা লোকদের আটকে রাখার অনুরোধ জানান। রাত ৯টায় দোকান মালিক টাকা নিতে আসা আশরাফুল ইসলাম (২০) নামে এক যুবককে আটক করে ভিক্টিমের বাবাকে ফোনে বিষয়টি অবগত করেন। ভিক্টিমের বাবা তখন ঘটনাস্থলের আশপাশেই ছিলেন।অপহরণকারী চক্রের এক সদস্য আটক হওয়ার সংবাদটি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে দেবিদ্বার থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আশরাফুলকে থানায় নিয়ে আসেন। এদিকে টাকা আনতে গিয়ে এক সদস্য আটক হবার সংবাদে চক্রের বাকী সদস্যরা ফরহাদকে মারধর করে উপজেলার কাশারিখোলা গ্রামের নির্জন এলাকায় মুমুর্ষাবস্থায় ফেলে যায়। ফরহাদের বাবা রাত সাড়ে ১০টায় তার ছেলের ফোনে সংবাদ পেয়ে এলাকার লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করেন। ভিক্টিম ফরহাদ বর্তমানে দেবিদ্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে সোমবার রাতে ফরহাদের বাবা জামাল হোসেন অপহরণকারী চক্রের সদস্য শাকতলা গ্রামের মো. রুবেলের ছেলে আশরাফুল ইসলাম(২০), মাশিকাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মাহাবুব(২৩), একই গ্রামের মুকবুল হোসেন(২১), আবির হোসেন(২০) ও কাকসার গ্রামের শাহআলমের ছেলে জুয়েল রানাসহ(২৫) ৫ জনকে অভিযুক্ত করে দেবিদ্বার থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক(তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিন আবেদ জানান, অপহরণকারী চক্রের এক সদস্য আটক হয়েছে। ওই ঘটনায় ভিক্টিমের বাবা বাদী হয়ে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেছেন। আটক আশরাফুলকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম