নদী ভাঙ্গন রোধে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙালি নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ এগিয়ে চলেছে। নদীর তীর সংরক্ষণ হলে বন্যা ও ভাঙ্গন কমে যাবে। রক্ষা পাবে আবাদি জমি, বসতঘর। তীর সংরক্ষণ শেষ হলে নদীর নাব্যতাও বাড়বে। প্রায় ১৯ কিলোমিটারজুড়ে নদীর এই তীর সংরক্ষণে কাজ চলছে। নদীর তীরে ব্লক বসানোয় দেখতে সুন্দরতা বৃদ্ধি হয়েছে। আশপাশের লোকজন এই ব্লকপাড় পরিদর্শন করছেন। দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে বাঙালি নদীর পাড়।
জানা যায়, বাঙালি করতোয়া ফুলজোর হুরাসাগর নদীর পুনঃখনন এবং নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বগুড়া সারিয়াকান্দির বাঙালি নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ এগিয়ে চলেছে। এ প্রকল্পের আওতায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধনুট উপজেলায় ২৮ টি প্যাকেজে মোট ১৯.৫৭ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ করা হচ্ছে । এ প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলার মোট ৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাঙালি নদীতীর সংরক্ষণ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পয়েন্টের কাজগুলো প্রায় অর্ধেক সমাপ্ত হয়েছে। এতে বাঙালি নদীর তীর দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। বাঙালি নদীতীরের এ অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে নতুন পুরাতন পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। তারা নিজেদের ক্যামেরাবন্দী করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এদিকে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করায় এ উপজেলার বাঙালি নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছেন এলাকাবাসী।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের মাছিরপাড়ার একটি পয়েন্টের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বাঙালি নদীর বাম তীর ঢালু করে সেখানে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে সিসি ব্লক। সুন্দরভাবে সাজানো এসব ব্লকগুলো দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আহসান হাবিব জানান, এ গ্রামেই তার বাপ দাদার বাড়ি। তিনি একবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। চাকুরির জন্য এখন বাহিরে থাকেন। বাড়িতে বেড়াতে এসে নদীতীরের সুন্দর দৃশ্যের সাথে নিজেকে ক্যামেরাবন্দী করতে এখানে এসেছেন। তিনি বলেন, যে কাজ হচ্ছে তাতে মনে হয় আর কখনো আমাদের বাঙালি নদীর ভাঙনের কবলে পরতে হবে না।
বগুড়া জেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হাই জানান, বগুড়ায় বাঙালি নদীতীর সংরক্ষণের কাজ গড়ে ৫৫ ভাগ সমাপ্ত হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে মাছিরপাড়া পয়েন্টের কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সমাপ্ত হয়েছে। এ উপজেলার ৬টি পয়েন্টের মধ্যে ৪টি পয়েন্টের কাজ এ অর্থ-বছরের জুনের মধ্যেই সমাপ্ত হবে। অন্যগুলো আগামী জুনের মধ্যই সমাপ্ত করা হবে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, বাঙালি নদী পুনঃখননের ফলে ইতিমধ্যেই নদীর নাব্যতা ফিরে পেয়েছে। ফলে এ জনপদের বাসিন্দারা এখন নদীপথে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে শুরু করেছেন। অপরদিকে বাঙালী নদীতীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন হওয়ায় এর তীরবর্তী এলাকার বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং বসতবাড়ীগুলো নদী ভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে। গড়ে শতকরা ৫৫ ভাগ কাজ এ পর্যন্ত সম্পন্ন হলেও আশা করা যাচ্ছে আগামী অর্থ-বছরের জুনের মধ্যেই শতভাগ কাজ সম্পন্ন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত