পাবনার বেড়া উপজেলার কাশিনাথপুরে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের মহাসড়ক অবরোধের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাবনার বেড়া উপজেলার কাশীনাথপুর এলাকায় এ অবরোধ শুরু করে তারা।
জানা গেছে, গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে পাবনা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা। এতে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও ঢাকাগামী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাশীনাথপুরে পাবনা জেলা মটর মালিক গ্রুপ (নগরবাড়ি) ও পাবনা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের (নগরবাড়ি) নেতাকর্মীরা পাবনা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে ঢাকা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়াগামী লোকজন কাশীনাথপুর মোড়ে এসে আটকে পড়েন। দীর্ঘ সময় আটকে থাকার পর লোকজন ভেঙে ভেঙে পাবনা ও ঢাকার পথে রওয়ানা দেন।
কাশীনাথপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা কাজীরহাট ফেরিপথে আর পাবনা শহর থেকে ছেড়ে আসা বাস সাঁথিয়া উপজেলার মাধপুর-বেড়া সড়ক হয়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়ায় সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় পাবনা শহরে যেতে হচ্ছে।
কাশীনাথপুর থেকে পাবনা শহরগামী যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনে পাবনা রওয়ানা হয়েছিলাম, কিন্তু কাশীনাথপুরে এসে দেখি বাস বন্ধ। এখন ফিরে যাচ্ছি। আরেক যাত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, বাসে দুলাই কলেজে যাতায়াত করি। বাস বন্ধ থাকায় বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে।
পাবনা জেলা মোটর মালিক গ্রুপ এবং পাবনা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পাবনা জেলার মালিকদের ছয়টি গাড়ি ভাংচুর করেছে। সেখানকার শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসব গাড়ি ভাংচুর করেছেন। এতে প্রায় দুই তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর ক্ষতিপূরণসহ সমঝোতা না হলে নগরবাড়ি থেকে বগুড়াসহ বিভিন্ন রুটে যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
এছাড়া শাহজাদপুরে যখন তখন পাবনার গাড়ির শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ ও গাড়ি চলাচলে বাধা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। তার এর সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।
পাবনা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুক্তি বলেন, শাহজাদপুরে প্রায়ই আমাদের শ্রমিকদের মারধোর করেন তারা। এমন আচরণ করা যাবে না। এই হয়রানি বন্ধের দাবিও করেন তিনি। বিচার না হওয়া পর্যন্ত এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তায় সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবরোধ চলবে।
পাবনা জেলা মোটর মালিক গ্রুপের (নগরবাড়ি) সভাপতি মোখলেছুর রহমান মুকুল বলেন, শাহজাদপুরের অভিযুক্ত বাস মালিক ও শ্রমিকদের বিচার ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের অবরোধ চলবে।
বেড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কল্লোল কুমার দত্ত বলেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পাবনার মালিকদের ছয়টি গাড়ি ভাংচুরের প্রতিবাদে এ অবরোধ চলছে। মাঝে মধ্যেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। পাবনার বেড়া উপজেলা ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাস মালিক এবং শ্রমিক নেতাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আলাপ আলোচনাও চলছে। আশা করছি সমঝোতা হয়ে যাবে খুব দ্রুত।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল