কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেন, ‘আমার মায়ের মৃত্যুতে আমি যে পরিমাণ কষ্ট পেয়েছি সামিয়ার নৃশংস হত্যার কথা শুনে সেই পরিমাণ কষ্ট পেয়েছি।’
মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইলের সখীপুরে অপহৃতদের হাতে খুন হওয়া ৯ বছরের শিশু সামিয়ার পরিবার ও সহপাঠীদের সমবেদনা জানাতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন ‘ভিক্টিমের বাবা নাম উল্লেখ্য করে থানায় অভিযোগ দিয়েছে তারপরও পুলিশ তাদের ধরে নাই। তারা যদি নির্দোষ হয় কোর্ট-কাচারিতে সাক্ষী দিয়ে প্রমাণিত হবে। ছয়দিন পার হলো পুলিশ একজনকেও ধরতে পারে নাই। তারা কি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, এদেশের প্রেসিডেন্ট? সে যেই হোক বিচার তার হবেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার মনে হয়েছিল পঁচিশ বছর বয়সে আমি যদি আমার মা-বোনের ইজ্জত রক্ষা করতে না পরি তা হলে আমার মরে যাওয়া অনেক ভালো। সেই জন্য আমি যুদ্ধ করেছি। কিন্তু আমি যুদ্ধের পর দেখেছি যারা যুদ্ধের সময় পালিয়ে গিয়েছিল তাদের দাম আমার চেয়ে অনেক বেশি। যে সন্তানের মাকে পাকিস্তানিদের হাতে অপবিত্র ও সম্মান নষ্ট হতে দেই নাই সেই সন্তানের কাছে সাধারণ মানুষের কোন সম্মান নাই। এই ভাবে দেশ চলতে পারে না। আমি এই দেশ চাই নাই। আমি সেই দেশ চেয়েছিলাম যেখানে একজন সাধারণ মানুষের সন্তানেরও নিরাপত্তা থাকবে। রাজা-বাদশার মত মানুষের মাথার উপর পা দিয়ে কেউ যেতে না পারে। যুদ্ধের সময় আমি একটি পিঁপড়ার গায়ে পাড়া দিতেও চিন্তা করেছি এখনো করি।’
উপজেলার দাড়িয়াপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সানোয়ার হোসেন মাস্টারের সভাপতিত্বে সমবেদনা জানিয়ে বক্তৃতা করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বীর প্রতীক, সামিয়ার বাবা রঞ্জু আহমেদ, সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব, উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশিক জাহাঙ্গীর, দেলোয়ার হোসেন নবীন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বহেড়াতৈল ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সিকদার নোভেল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বুধবার উপজেলার দাড়িয়াপুর স্কুল থেকে ফেরার পথে সামিয়া (৯) তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অপহরণ হয় এবং পাঁচ লাখ টাকা মোবাইলে মুক্তিপণ দাবি করে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার শিশুর বাবা থানায় মামলা করেন। এরপর শুক্রবার দুপুরে একটি বনের ভেতর থেকে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত