হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। দুর্গোৎসবের শেষ দিনে মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুরে শুরু হয় বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা। বিজয়া দশমীর দিন দেবী দুর্গাকে হাসি-মুখে বিদায় জানানোর চেষ্টায় সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন হিন্দুরা। এর আগে পূজা অর্চনা আর দর্পণ বিসর্জনের পর দেবীর পা ছুঁয়ে একে অপরকে সিঁদুর মাখিয়ে আনন্দ আয়োজনে মেতে উঠে তারা। সকালে দর্পণ বিসর্জন এবং পরে মণ্ডপে মেতে উঠে সিঁদুর খেলায়। শেষ বেলায় আরতীতে অংশ নিয়ে উৎসবের শেষদিনে তাদের প্রার্থনা শান্তি, সমৃদ্ধি আর অসাম্প্রাদয়িকতার দেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়।
অবিরাম ঢাকের বাদ্য-বাজনা, শঙ্খ, কাঁসর আর উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের বাসুনিয়াপট্টি, বালুবাড়ী নিমকালীসহ বিভিন্ন দুর্গা মণ্ডপগুলোতে জগতের মঙ্গল কামনায় একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পূজারী, ভক্ত ও পুণার্থীরা। ঢাকের তালে তালে নারী-পুরুষ ভক্তরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে এবং আবির মাখিয়ে উৎসবের মধ্য দিয়ে মা দুর্গাকে বিদায় জানায়। শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ লগ্নে মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেবী দুর্গাকে বিদায়ের প্রস্তুতি নেয় তারা। বিজয়া দশমীতে সকালে দেবী বিসর্জনের পূর্ব পর্যন্ত দিনাজপুরের মন্দিরে মন্দিরে এই সিঁদুর খেলার উৎসব সিক্ত মনে পালন করে ভক্তবৃন্দ।
এদিকে শহরের বালুবাড়ি শ্রী শ্রী নিমকালী মন্দিরে আয়োজন হয় শঙ্খ ধ্বনী, উল ধ্বনী, চেয়ার খেলা ও আর্ট প্রতিযোগিতা। পরে নাচে-গানে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন তারা। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী দর্পণ বিসর্জনের পর শান্তিজল গ্রহণ করে শেষ হয় দেবীর শাস্ত্রীয় বিসর্জন।
মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে দিনাজপুর শহরের প্রত্যেকটি মণ্ডপ থেকে প্রতিমাগুলো বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নেচে-গেয়ে নেয়া হয় শহরের উপকণ্ঠে পুনর্ভবা নদীর সাধুর ঘাটে। পরে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ শারদীয় দুর্গোৎসব।
এছাড়াও দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলের মন্ডপগুলোর প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয় নিকটস্থ নদী বা জলাশয়ে। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়ায় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন দিনাজপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বরূপ কুমার বক্সী বাচ্চু।
বিডি প্রতিদিন/এএ