২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১৮:৪৩

হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হলো সিজারিয়ান কার্যক্রম

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু হলো সিজারিয়ান কার্যক্রম

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ একযুগ পর ফের চালু হলো গাইনী বিভাগসহ অন্যান্য অপারেশন কার্যক্রম। 

এ উপজেলার প্রসূতি মায়েরা বিনামূল্যে পাচ্ছেন নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারির সেবা সুবিধা। দেওয়া হচ্ছে প্রসূতি মায়েদের প্রসব পূর্ববর্তী, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী সেবা। স্থানীয়দের অভিমত হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারটি পুনরায় চালু হওয়ায় উপজেলার মানুষ সুফল ভোগ করবে।
 
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে ১৯৬৩ সালে হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি চালু হয়। এরপর সেবার মান বৃদ্ধি করতে ২০১১ সালের ২০ সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫১ শয্যায় উন্নীতকরণ করা হয়। এ সময় অপারেশন থিয়েটার চালু থাকলেও দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাবে অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ রাখা হয়। ফলে উপজেলার বৃহৎ জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন এ সেবা থেকে বঞ্চিত থাকে। সিজারিয়ান অপারেশন করতে যেত হত দূরবর্তী জেলা শহর বা বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে।   

স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে এ বৎসরের এপ্রিল মাস থেকে অপারেশন কার্যক্রম চালু হওয়ার পর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ১২টি গাইনোকোলজিল্যাল (সন্তান প্রসব), এপেন্ডিসাইটিস ৪টি ও ১টি হার্নিয়াসহ মোট ১৭টা অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর.এম.ও.) ডা. নেলসন ফ্রান্সিস পালমা। 

সিজারিয়ান সেকশন অপারেশন করেন ডা. ফেরদৌসি বেগম, জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি এন্ড অবস) এবং এনেস্থেসিয়া প্রদান করেন ডা. শাহাদাত হোসেন, ডা. আরিফ মোহাম্মদ আব্দুর রহমান জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেস্থিসিয়া)। জেনারেল সার্জারির বিভিন্ন অপারেশন করেন ডা. মো. আকিকুল ইসলাম, জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি)। চিকিৎসকদের দাবি অপারেশনের পর প্রতিটি রোগীই সুস্থ আছেন। 

সিজারিয়ান ব্যবস্থায় নবজাতক জন্ম দেয়া পার্শ্ববর্তী ধোবাউড়া উপজেলার শালকোনা গ্রামের জরিনা বেগম বলেন, আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট অনুযায়ী সঠিক সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ রেখে হাসপাতালে ভর্তি হই। কোনরূপ ঝামেলা ছাড়াই বিনামূল্যে সিজার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। নবজাতক নিয়ে সুস্থই আছি। হাসপাতালের চিকিৎসকগণ নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন প্রতিনিয়ত।  

অপরদিকে সচেতন মহল আর সেবা প্রত্যাশী জানালেন, অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্যান্য সময়ের চেয়ে বর্তমানে সেবার মান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বলা চলে শৃঙ্খলার মাঝে ফিরে আসতে শুরু করেছে। প্রান্তিক জনগণ দূর থেকে এসে সঠিক সেবাটাই আশা করে। বর্তমান অপারেশন কার্যক্রম চলমান থাকায় হাসপাতালের সঠিক সেবার ঐতিহ্য ফিরে এসেছে। এ ধারা অব্যহত থাকুক বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।   

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রাণেশ চন্দ্র পন্ডিত জানান, হাসপাতালের আউটডোর স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের পাশাপাশি অপারেশন কার্যক্রম চলমান থাকবে। গাইনোকোলজিল্যাল (সন্তান প্রসব) অপাশেন করার পাশাপাশি সিজারিয়ান সেকশন ও মেজর সার্জারি ছাড়াও প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন মাইনর সার্জারি করেন হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। বর্তমান সরকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন পর পুনরায় অপারেশন থিয়েটার চালু হওয়ায় এসব সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের বিনামূল্যে সিজারিয়ান অপারেশনসহ অন্যান্য সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় জরুরি বিভাগে খোলা থাকছে ইসিজি সেবা। হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যুক্ত করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। রোগী দর্শনার্থীদের জন্য করা হচ্ছে আলাদা কামরা।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর