শিবচরে ভুল চিকিৎসায় পলি আক্তার (৩০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুর ১টার দিকে শিবচর পৌরসভার একটি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এসময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রাত ৮টার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত পলি শিবচর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খানকান্দি এলাকার লিটন শেখের স্ত্রী ও উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের খবির মোল্লার মেয়ে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ৯টার দিকে পলিকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য শিবচর পৌর বাজারের একাত্তর সড়কের মা ও শিশু (প্রা.) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আনা হয়। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পলিকে ভর্তি করে রোগীর স্বজনদের ৫-৬ ব্যাগ রক্ত ও প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবস্থা করতে বলে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী রক্ত ও ওষুধ ব্যবস্থা করেন তারা।
দুপুর ১টার দিকে রোগীকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ফাহমিদুল হাসান তনু নামে একজন চিকিৎসক সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সেখানে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন পলি। তবে অপারেশনের পরই প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। কর্তৃপক্ষ রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫ ব্যাগ রক্ত রোগীর শরীরে দেওয়া হয়। তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করে। সেখানে নেওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, রাত ১১টার দিকে শিবচরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে ওই হাসপাতালের সামনে ও ভেতরে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা। পরে স্থানীয়দের বিচারের আশ্বাসে তারা ফিরে যান।
রোগীর ননদ শিউলি বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে সকালে হাসপাতালে আনা হয়। আমাদের সাথে সিজার করা বাবদ ১০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। সিজারের পরে তারা খরচ বেশি হয়েছে জানিয়ে আরও ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন আমরা বলছি রোগী সুস্থ হোক আমরা দেব। তবে রোগীর যে অবস্থা খারাপ, তারা এগুলো বলে না। আমরা জিজ্ঞাসা করলে জানায় রোগী ভলো আছে, টেনশন করিয়েন না। রাতে বলে রোগীর অবস্থা ভালো না, তাকে আপনারা ঢাকা নিয়ে যান। তখন দেখি আমার ভাবির জ্ঞান ফেরেনি। পরে আমরা ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে জানতে ডাক্তার ফাহমিদুল হাসান তনুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শারমিন আক্তার বলেন, কেন যে এমন হলো আমরা বলতে পারবো না। এই ডাক্তার নিয়মিত সিজার করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের রিপোর্ট না করারও অনুরোধ করেন।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
বিডি প্রতিদি/এমআই