যশোর আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সালেহা বেগম (৭৭) নামের এক বৃদ্ধার শরীরে ভিন্ন গ্রুপের তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ দফায় আরও এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার সময় বিষয়টি ধরা পড়ে। বর্তমানে ওই রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। হাসপাতালের পেয়িং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সালেহা বেগম যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খড়িঞ্চা গ্রামের শামসুর রহমানের স্ত্রী।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন আর রশিদ এ ব্যাপারে বলেন, এটি দু:খজনক ঘটনা। রোগীর স্বজনরা মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি করা হবে। এ ব্যাপারে কারও কোনো গাফিলতি থাকলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালেহা বেগমের স্বজনরা জানান, গত ২০ মে সালেহা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা সালেহাকে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দিলে হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে গিয়ে তার রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়। সেখানে রক্তের গ্রুপ আসে 'বি' পজেটিভ। সে অনুযায়ী ২০, ২২ ও ২৪ তারিখে সালেহার শরীরে তিন ব্যাগ 'বি' পজেটিভ রক্ত দেওয়া হয়। এরপর হাসপাতাল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে তার শরীরে জ্বালাপোড়া ও খিচুনিসহ বমি শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হতে থাকলে সোমবার বিকেলে আবার তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক আবারও আরও এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার জন্য বলেন। সে অনুযায়ী রক্তদাতাকে নিয়ে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে গেলে ওই বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারাই বলেন যে, সালেহার রক্তের গ্রুপ 'বি' পজেটিভ না, 'এ' পজেটিভ। এতে রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এক পর্যায়ে হাসপাতালের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সালেহা বেগমের মেয়ে শিরিনা আক্তার বলেন, ‘হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের ভুলের কারণে আমার মা’র জীবন এখন সংকটাপন্ন। তিনি খুবই অসুস্থ। প্রতিদিনই তার শরীরের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। কিছু খেতে পারছেন না। আমি এর বিচার চাই’।
হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের ইনচার্জ চঞ্চল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘নার্সরা রোগীর রক্তের নমুনা স্বজনদের কাছে দেন। তারা সেই নমুনা ব্লাড ব্যাংকে নিয়ে আসেন। এরপর পরীক্ষা করে রক্তদাতার রক্তের ম্যাচিং করে রক্ত নেওয়া হয়। রক্তের গ্রুপ পরিবর্তনের বিষয়টি কীভাবে হলো বুঝতে পারছি না। একই নামে একাধিক জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করায় এমন ভুল হতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। আবার সংশ্লিষ্ট নার্স যখন রক্ত সংগ্রহ করে, তারাও ভুল করতে পারেন।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল