সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতিসহ বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন নিশ্চিত করতে দেওয়া জেলে-বনজীবীসহ পর্যটক প্রবেশে তিন মাসের নিষেধজ্ঞা শেষ হয়েছে আজ শনিবার (৩১ আগস্ট)।
বন বিভাগের কাছ থেকে বৈধ পাশ-পারমিট নিয়ে আগামীকাল রবিবার থেকে (১ সেপ্টেম্বর) থেকে সুন্দরবনে যেতে পারবেন জেলে-বনজীবীসহ দেশ-বিদেশি পর্যটকরা। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস (আইআরএমপি) এর সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরের ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই তিন মাস বনে প্রবেশ নিষেধজ্ঞা জারি করে থাকে বন বিভাগ।
সুন্দরবন সন্নিহিত শরণখোলা উপজেলার বকুলতলা গ্রামের নুর ইসলাম মুন্সি, সোনাতলা গ্রামের আসাদুল মাতুব্বর, খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে হাবিব হাওলাদার ও জামাল হাওলাদার জানান, আমরা ৩০-৪০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় সুন্দরবনে মাছসহ বনজ সম্পদ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। সুন্দরবনে এই তিন মাসের নিষেধজ্ঞা সময়ে আমাদের অনেক কষ্ট করে পরিবারসহ জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে। খুশির খবর হচ্ছে রবিবার থেকে আবারও আমরা পাশ-পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে মাছ আহরণ করতে যাবো।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির দুমার দো জানান, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের জন্য উপযুক্ত মৌসুম। এই সময় সাধারণত সকল মাছে ডিম ছাড়ে। তাই ২০১৯ সাল থেকে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত তিনমাস সকল প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকে। এছাড়াও এই সময়টি সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীদেরও প্রজনন মৌসুম। সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি ঘুরে দাঁড়াতে জেলে বনজীবীসহ দেশ-বিদেশের সকল পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকাসহ (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত সব খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। সারা বছর ২৫ ফুট প্রশস্তের উর্ধের নদী-খালে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার জেলে-বনজীবীরা বন বিভাগের কাছ থেকে পাশ-পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। এই তিন মাস ছাড়া সারা বছরই দেশ-বিদেশি প্রতিবেশ পর্যটকরা (ইকো ট্যুরিস্ট) সুন্দরবন ভ্রমণ করে থাকেন। নিষেধজ্ঞা শেষ হওয়ায় ১ সেপ্টেম্বর (রবিবার) থেকে বৈধ পাশ-পারমিট নিয়ে জলে-বনজীবীসহ দেশ-বিদেশী পর্যটকরা আবারো সুন্দরবনে যেতে পরবেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল