গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় সৎ ভাইকে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আব্দুল হালিম তার ভাই আবু বক্করকে কাঁচের ভাঙা বোতল দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকা থেকে হালিমকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়দেবপুর থানায় সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটনের তথ্য নিশ্চিত করেন।
হত্যার শিকার আবু বক্কর (২৫) ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার গরজা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। সে তার সৎভাই প্রতিবন্ধী (এক পা পঙ্গু) আব্দুল হালিমের সঙ্গে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার ফুটওভার ব্রিজে রাতযাপন করতো। হালিম ভিক্ষা করতো। তার সৎ ভাই আবু বক্কর বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করতো (টোকাই)। তাছাড়া আবু বক্কর জুয়া ও নেশা আসক্ত ছিল। মাঝে মধ্যে হালিমের কাছ থেকে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যেত।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, আব্দুল হালিম ও আবু বক্কর সোমবার ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুরের বাঘের বাজার আসে। ওই দিন রাত ৮টার দিকে হালিম বাঘের বাজার ফুটওভার ব্রিজের ওপর ভিক্ষা করছিল। এ সময় ছোট ভাই আবু বক্কর নেশা করার জন্য তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে চলে যায়। মধ্যরাত হয়ে গেলেও আবু বক্কর ফিরে না আসায় হালিম রাত ৩টার দিকে তাকে খুঁজতে বের হয়। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ডিভাইডারের ওপর আবু বক্করকে নেশা সেবন করতে দেখে তার কাছে যায়। এসময় ছোট ভাই আবু বক্কর প্রতিবন্ধী ভাই হালিমের কাছে নেশা করার জন্য আরো টাকা চায়। এ সময় বড় ভাই হালিম ছোট ভাইয়ের কাছে নেশাজাতীয় ঘুমের ২০টি বড়ি চাইলে দেবে না বলে জানায়। উল্টো ছোট ভাই বড় ভাইয়ের কাছে নেশা কেনার জন্য আরও টাকা চায়। টাকা না দিলে ছোট ভাই আবু বক্কর বড় ভাই হালিমকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারে। এর কিছুক্ষণ পর আবু বক্কর নেশার ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হালিম পাশ থেকে কাঁচের বোতল নিয়ে সড়ক বিভাজকের লোহার রেলিংয়ে ভেঙে বোতল দিয়ে আবু বকরের বুকের দুই পাশের পাঁজরে এলোপাথারি আঘাত করে। এরপর তার ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে সে ফুটওভার ব্রিজের ওপরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে হালিম ঘুম থেকে উঠে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে ছোট ভাই আবু বক্কর মারা গেছে। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা লাশ উদ্ধার করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুর রহমান।
বিডি প্রতিদিন/এএ