পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডে পানিবাহিত রোগে গত ৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত তিন শতাধিক শ্রমিক। এর মধ্যে কণা ও মাহফুজা খাতুন মুফিদা নামে ২ নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে সহকর্মী শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালীর সাগর হোসেনের স্ত্রী ও নাকানো কোম্পানির শ্রমিক মাহফুজা খাতুন (২২) মারা গেছেন। এর আগে সোমবার (২ জুন) রাত ১ টার দিকে কণা খাতুন (২৫) মারা যায়। কনা ঈশ্বরদী ইপিজেডে আইএইচএম কোম্পানির কোয়ালিটি কাটিং সেকশনের কর্মী ছিলেন ও উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলোকপুর গ্রামের খমিন ইসলামের স্ত্রী।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) এবিএম শহীদুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত কণার স্বামীও একই কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। কণার স্বামীর বরাত দিয়ে তিনি জানান, গত শনিবার দুপুরে কোম্পানিতে খাবার খেয়ে পানি পান করার পর থেকেই বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয় কণার। অসুস্থ শরীর নিয়েই সে রবিবার কর্মস্থলে যায়। এরপর সে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হয় চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসার পর কণা কিছুটা সুস্থ হলে সন্ধ্যায় তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু রাতে তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। পুনরায় হাসপাতালে নেওয়ার সময় কণার মৃত্যু হয়।
একই ভাবে মাহফুজা খাতুন মুফিদা গত ২৯ মে কোম্পানিতে খাবার খেয়ে পানি পান করার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা একটু উন্নতি হয়েছে মনে করে এবং হাসপাতালে বেড না পাওয়ায় বাড়িতে এনে চিকিৎসা করাতে থাকে তার পরিবার। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে অবনতি হয় এবং মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়িতেই মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মে ইপিজেড এলাকায় দুপুরের খাবার খেয়ে পানি পান করার পর থেকে আক্রান্ত শ্রমিকদের পেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা, জ্বর, বমি ও মাথা ব্যথা জনিত কারণে অসুস্থ হতে শুরু করে। ওইদিন থেকে সোমবার পর্যন্ত কয়েকশত শ্রমিক পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। আক্রান্তদের ইপিজেড মেডিকেল সেন্টার, ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন তারা।
এ ঘটনায় পাবনার ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি ও দুই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তদন্তের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল