গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পারিবারিক বিরোধের জেরে ভাতিজা সাইফুল ইসলামের (২৫) ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন আপন চাচা জিয়ারুল ইসলাম (৫০)। এসময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত স্ত্রী আছমা বেগম ও ছেলে ইসমাইল হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জিয়ারুল ইসলাম (৫০) ওই গ্রামের মৃত জাফর আলীর ছেলে। অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম একই গ্রামের ইব্রাহিম আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক বিরোধের জেরে শুক্রবার দুপুরে প্রথমে আম খাওয়া নিয়ে চাচা জিয়ারুল ইসলামের সাথে ভাতিজা সাইফুল ইসলামের বাকবিত-া হয়। একপর্যায়ে রাতের বেলা চাচা জিয়ারুল ইসলামের ঘরে ঢুকে ধারালো ছুরি দিয়ে তার শরীরে একাধিক আঘাত করে ভাতিজা সাইফুল। এতে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলেই মারা যান জিয়ারুল। এসময় তাকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রী আছমা বেগম (৪৫) ও ছেলে ইসমাইল হোসেনকে (২৩) ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর জখম করে সাইফুল। আহত দুইজনকে প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাদেরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে চিকিৎসক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে হত্যার ঘটনাটি পারিবারিক বিরোধজনিত বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ভাতিজা পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় বড় ভাই ফুয়াদ মিয়াকে (৫০) ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মামুন মিয়া (৩০) নামের এক ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। পারিবারিক বিরোধে দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে ফুয়াদ মিয়া হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মামুন মিয়াকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। ফুয়াদ ও মামুন সম্পর্কে চাচাতো-জ্যাঠাতো ভাই।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মীরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার ফুয়াদ মিয়া ওই গ্রামের আফজাল মাস্টারের ছেলে। অভিযুক্ত মামুন মিয়া একই গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির সামনে মামুন মিয়ার সাথে তার আপন ভাই আল আমিন মিয়া বন্ধকি কচুক্ষেত নিয়ে ঝগড়ায় জড়ায়। তাদের দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামানোর জন্য ফুয়াদ মিয়া এগিয়ে গেলে মামুন মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে মামুন হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ফুয়াদের বুকে আঘাত করে। এতে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ফুয়াদের মৃত্যু হয়।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফুয়াদ মিয়ার স্বজনরা অভিযুক্ত মামুনকে ঘটনাস্থলে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। জমি বন্ধক ও পারিবারিক বিরোধে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ থামাতে গিয়ে ফুয়াদ মিয়া হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে দাবি স্বজনদের।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার জানান, এঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামীকে শনিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম