সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে। প্রবল জোয়ারের কারণে বেড়িবাধ না থাকায় হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এদিকে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়ন ও চরএলাহী ইউনিয়নের কিছু অংশ ও হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
অপরদিকে বেড়িবাধ না থাকায় হাতিয়ার উত্তর অংশে ভূমিহীন বাজার, চেয়ারম্যন ঘাট, চতলার ঘাট, ইসলামগজ্ঞ এলাকার প্রায় ৫ কিলোমিটার কিছু কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে ভাঙনের মুখে পড়েছে ৫ শতাধিক বাড়িঘর। এদিকে প্রশাসনের নিশেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রি নিয়ে টলার যাচ্ছে হাতিয়ায়।এছাড়া সাগরের লঘুচাপের প্রভাবে নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধাতার সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত উপজেলার টাংকির ঘাট ও চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় অর্ধশতাধিক বাড়ি ঘর সরিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, শুক্রবার সকালে জোয়ারের পানিতে নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়ক পুরোপুরি তলিয়ে যায়। একই সাথে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। এলাকার অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া জোয়ারের পানিতে উপজেলার নলচিরা, সোনাদিয়া ও সুখচর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, জোয়ারের পানিতে অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো পরিবার। বিশেষ করে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের হরিণসহ বন্য প্রাণীগুলোর জন্য এ দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়াহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অপরদিকে জেলা শহর মাইজদীর বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা রযেছে। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। নোয়াখালী পৌরসভার ড্রেন ও খালে ময়লা আবর্জনা জমে থাকার কারণে পানি নামতে না পারায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা হাওয়া ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, সুখচর ইউনিয়ন, তমরুদ্দি, সোনাদিয়া ইউনিয়নের কিছু অংশ ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে আছে। কোথাও ২-৩ ফুট করে পানি আছে। সুখচরের একটি বেড়িবাঁধ গতকাল শুক্রবার ভেঙ্গে গিয়ে সেখানে প্লাবিত হয়।
ইউএনও আরও বলেন, বেড়ির বাহিরে জেলে পাড়াগুলোতে পানি উঠে নামে। বেশ কিছু জায়গায় বেড়ির বাহিরে ও নলচিরা ইউনিয়নের কিছু জায়গায় নদী ভাঙনের মুখে অনেকেই তাদের ঘরবাড়ি, দোকান ঘর সরিয়ে নিয়েছে। আজকে বিকেলে নদীর অবস্থা কিছুটা ভালো থাকায় কয়েকটা রুটে বোট চলেছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল