বাল্কহেডের স্টাফদের সহায়তায় লুট হওয়া কোটি টাকার ডিএপি সার উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কুমিল্লার নিকটবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
রবিবার ঢাকা নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মূলহোতা নরসিংদীর আলমগীর (৩৬), কিশোরগঞ্জের জসিম উদ্দিন (৩৭) এবং বাগেরহাটের মো. আব্দুর রহিম খান (৪৩)।
আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত ৮ অক্টোবর মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে এম.বি. হাসান নৌ-পরিবহন (নিবন্ধন নম্বর এম-২৫২৭৪) নামের একটি বাল্কহেডে ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা আমদানি করা কোটি টাকার ডিএপি সার সুনামগঞ্জের বিএডিসি গোডাউনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাল্কহেডটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার মানিকনগর ঘাটে এসে নোঙর করে। ইঞ্জিনের ত্রুটির অজুহাতে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত একই স্থানে অবস্থান করে। পরদিন ১০ অক্টোবর বাল্কহেডটি পুনরায় চলা শুরু করে। আনুমানিক এক ঘণ্টা চলার পর মেঘনা নদীতে গতি কমালে একটি ট্রলার বাল্কহেডের পাশে এসে রশি দিয়ে বাঁধে। এরপর ওই ট্রলারে থাকা দুই ব্যক্তি বাল্কহেডে উঠে আসে এবং সেখানে থাকা দুই স্টাফের সঙ্গে যোগ দেয়।
তিনি আরও জানান, পরে তারা সারের ডিলারের এজেন্টকে হাত-মুখ বেঁধে ভয় দেখিয়ে ট্রলারে তুলে নেয়। এ সময় সারবোঝাই বাল্কহেডটি অন্যত্র চলে যায়। ট্রলারে থাকা দুই জনসহ বাল্কহেডের দুই স্টাফও ট্রলারে নেমে পড়ে। এরপর তারা ডিলারের প্রতিনিধি নিয়ে মেঘনা নদীতে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে এবং ওই দিন বিকেলে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার আব্দুল্লাহর চর এলাকায় তাকে মারধর করে নামিয়ে দেয়। এর পর থেকে বাল্কহেডের কোনো স্টাফের সঙ্গে সারের ডিলার বা তাদের অফিসের কারও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি; সবার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নৌ-পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর নৌ-পুলিশের একাধিক দল প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালায়। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার নোয়াগাঁও বাজার সংলগ্ন তিতাস নদীর শাখা দেওজুড়ী খালের মধ্যে থেকে সারবোঝাই বাল্কহেড, স্থানীয় বাজারের একটি গোডাউন এবং তিতাস নদীর তীরবর্তী একটি বাড়ি থেকে লুণ্ঠিত সার উদ্ধার করে।
নৌ-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। পরে মূল আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আলমগীরের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও চাঁদাবাজির সাতটি, জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একটি এবং আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে মারামারি ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুটি মামলা রয়েছে।
অন্যান্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহণসহ পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে নৌ-পুলিশ।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল