জলপরীদের দেশে

জহিরুল হক বিদ্যুৎ

প্রিন্ট ভার্সন

ছোট্ট তানিয়া প্রতিদিন বিকালে সৈকতে ঘুরতে যেত। সে ঝিনুক কুড়াতে ভালোবাসত আর ঢেউয়ের শব্দ শুনে কল্পনায় হারিয়ে যেত। এক দিন, সে এক অদ্ভুত ঝিনুক পেল, রঙিন আলোয় ঝলমল করছে আর ভিতর থেকে ভেসে আসছে এক মিষ্টি সুর। ঝিনুকটি কানে ধরতেই হঠাৎ চারপাশের দৃশ্য বদলে গেল। তানিয়া চোখ খুলে দেখল, সে এখন সাগরের গভীরে। চারপাশে হরেক রকম রঙিন মাছ, জেলিফিশ আর হাসিখুশি অক্টোপাস ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভয় না পেয়ে সে আনন্দে চারদিক দেখতে লাগল। মাছগুলো এসে তার সঙ্গে কথা বলতে লাগল। কী সুন্দর জলজ উদ্ভিদ। এদিক-ওদিক দলবেঁধে মাছগুলো খেলা করছে। যেন এক স্বপ্নপুরী। সে যতই দেখছে ততই অভিভূত হচ্ছে। তখন এক বুড়ো কচ্ছপ এসে বলল, ‘তুমি সৎহৃদয়ের মেয়ে। এই ঝিনুক সাগরের প্রাচীন চাবি, যা শুধু ভালো মানুষকে সাগরের গোপন জগতে নিয়ে যায়।’ কচ্ছপ তাকে নিয়ে গেল এক গোপন গুহায়। সেখানে ছিল মুক্তার তৈরি এক রাজ্য। সেই রাজ্যে রাজত্ব করতেন এক রুপোলি জলপরী রানী। তিনি তানিয়াকে বললেন, ‘তুমি আমাদের বহুদিনের অপেক্ষার শেষে এসেছ। আমরা সৎ ও ভালো মানুষের অপেক্ষায় বসে থাকি। আমরা চাই তুমি আমাদের বন্ধু হও এবং মানুষের জগতে ফিরে গিয়ে বলো, সাগরের সৌন্দর্য আর জীববৈচিত্র্যকে ভালোবাসতে হয়, ধ্বংস করতে নয়।’ তানিয়ার মন ভরে উঠল আনন্দে। সে প্রতিশ্রুতি দিল, সে কখনো সাগরের ক্ষতি হতে দেবে না। রানী তাকে বিদায় জানিয়ে বললেন, ‘এই রাজ্য তোমার অপেক্ষায় চিরকাল থাকবে।’ ঝিনুকটি আবার কানে ধরতেই তানিয়া ফিরে এলো সৈকতে। চারপাশ আগের মতোই, কিন্তু তার হৃদয় জানে, সে এক আশ্চর্য জগৎ দেখে এসেছে, সাগরতলের রাজ্য।