শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
ধর্ম

আল্লাহর আদেশ না মানার পরিণাম

মুফতি আমজাদ হোসাইন

আল্লাহতায়ালা যখন বিশ্বের প্রতিনিধি পাঠানোর ইচ্ছা করলেন, তখন ফেরেশতাদের কাছে পরামর্শ চাইলেন। আল্লাহতায়ালা তাদের বললেন প্রতিনিধি পাঠানোর গোপন রহস্য একমাত্র আমিই জানি, তোমরা তা জান না। সুতরাং আল্লাহপাক হজরত আদম (আ.)-কে নিজ কুদরতে নিখুঁতভাবে সৃষ্টি করলেন। তার অভ্যন্তরে রুহ সঞ্চালন করলেন এবং তাকে সব বস্তুর জ্ঞানদান করলেন। হজরত আদম (আ.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে সব ফেরেশতাকে নির্দেশ দিলেন আদম (আ.)-কে সেজদা করার জন্য। এই সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্টভাবে আল্লাহ বলেন, আমি যখন আদম (আ.)-কে সেজদা করার জন্য সব ফেরেশতাকে আদেশ দিলাম, তখনই ইবলিস ব্যতীত সবাই আদম (আ.)-কে সেজদা করল। সে নির্দেশ পালন করাকে অস্বীকার করল এবং অহঙ্কার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। (সূরা বাকারা, আয়াত-৩৪) বস্তুত আল্লাহপাক অহংকার ও দাম্ভিকতাকে একেবারেই পছন্দ করেন না, কারণ অহংকার করা একমাত্র তারই কাজ, সুতরাং কোনো সৃষ্টি যদি স্রষ্টার কাজ নিয়ে টানাটানি করে তা স্রষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না, ইবলিসের বেলায়ও তাই ঘটেছে। সূরা হিজরের ৩৪ ও ৩৫ নং আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে (আল্লাহপাক ইবলিসকে বললেন) তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। তুমি বিতাড়িত এবং তোমার প্রতি ন্যায়বিচারের দিন পর্যন্ত অভিসম্পাৎ। মৌলিকভাবে অহংকার ও দাম্ভিকতার পরিণাম এমনই হয়ে থাকে। সৃষ্টি তার স্রষ্টার সঙ্গে কেন অহংকার করবে? তিনি তো এমন কোনো বিধান তাদের ওপর চাপিয়ে দেননি যা তাদের সাধ্যের বাইরে। তিনি পবিত্র কোরআনে পরিষ্কার ভাষায় বলে দিয়েছেন, তিনি কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার চাপিয়ে দেন না, বান্দা তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। (সূরা বাকারা) কোরআনে বর্ণিত, আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত ইবলিস শয়তানের পথে যারা নিজেদের পরিচালিত করবে, দীন ইসলামের বিধানাবলির তোয়াক্কা যারা করবে না তাদের পরিণাম ইবলিসের মতোই হবে। কিন্তু যারা ইবলিসের মোকাবিলা করবে, নিজেদের এক আল্লাহর পথে পরিচালিত করবে, ইবলিস তাদের কোনো ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। আল্লাপাক ইরশাদ করেন, যারা আমার খাঁটি বান্দা, তাদের ওপর তোমার (ইবলিসের) কোনো ক্ষমতা নেই। (সূরা হিজর আয়াত-৪৩) উক্ত আয়াতের মর্মবাণী হলো সিরাতে মুস্তাকিম তথা সরলপথে পরিচালিত হওয়ার জন্য যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের ইবলিস কোনোভাবেই লাইনচ্যুত করতে পারবে না। চাই তা গোপনে বা প্রকাশ্যে হোক না কেন। যদি কখনো কোনো না কোনোভাবে ইবলিস তার কূটকৌশল দ্বারা ক্ষতিসাধন করতে চায়। পরক্ষণেই সে আবদে সালেহ তথা নেক বান্দা হওয়ার কারণে আল্লাহপাক তাকে হেফাজত করেন। প্রকৃতপক্ষে বান্দার সিদ্ধান্তের ওপর আল্লাহর সাহায্য আসে। বান্দা যদি তরিকে খায়ের অর্থাৎ সরলপথ গ্রহণ করে আল্লাহর সাহায্য চায়। আল্লাহতায়ালা বান্দাকে সেই পথেই সাহায্য করবেন।

 

লেখক : খতিব, নয়ানগর বায়তুল আমান জামে মসজিদ, বারিধারা, ঢাকা।

 

 

সর্বশেষ খবর