বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

জনশক্তি রপ্তানিতে ভাটা

নতুন বাজার অনুসন্ধানে নজর দিন

বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে আবির্ভূত করোনাভাইরাস দেশের জনশক্তি রপ্তানির চাকা থামিয়ে দিয়েছে। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে গত পাঁচ মাসে ৮৫ হাজার প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। প্রবাসে কাজ নেই এমন অসহায় অবস্থায় রয়েছেন ১ লাখের বেশি শ্রমিক। এর বাইরে এ বছরের ২১ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটিতে আসা ৬ লাখ ২৪ হাজার শ্রমিক করোনার কারণে দেশে আটকা পড়েছেন। দেশের অর্থনীতিতে প্রাণভোমরার ভূমিকা পালনকারী জনশক্তি রপ্তানি খাত সত্যিকার অর্থে দুঃসময় পার করছে। করোনা পরিস্থিতির অবসান না হলে শ্রমবাজারে আরও বড় ধরনের ধস নামার আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য সংকট থেকে বের হতে বিকল্প শ্রমবাজার খুঁজতে শুরু করেছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। পূর্ব এশিয়া বা ইউরোপে অন্তত দুটি বাজার খোঁজার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই ফলপ্রসূ বলে মনে হচ্ছে না বিশ্লেষকদের কাছে। সাম্প্রতিক সময়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের একটি অংশ কর্মস্থলে যাওয়া শুরু করেছেন। কিন্তু সে সংখ্যাও বেশি নয়। উল্লেখ্য, বিশ্বের ১৬০টি দেশে শ্রমিক প্রেরণ করে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। এর পরের অবস্থানে ওমান, কাতার, জর্ডান ও কুয়েত। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরও বাংলাদেশের জন্য ভালো বাজার হয়ে উঠেছে। তবে করোনার থাবায় জনশক্তি রপ্তানিতে রীতিমতো হোঁচট লেগেছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭ লাখের বেশি কর্মী চাকরি নিয়ে গেছেন বিভিন্ন দেশে। এর মধ্যে সৌদি আরবে সর্বোচ্চ ৪ লাখের মতো, ওমানে ৭২ হাজার ও কাতারে গেছেন ৫০ হাজারের কিছু বেশি। চলতি বছরে ১০ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্য থাকলেও প্রথম তিন মাসে পাঠানো সম্ভব হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৮১ হাজার। এর পর থেকেই করোনা মহামারীতে বন্ধ শ্রমিক প্রেরণ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স যেহেতু দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করছে, সেহেতু বিদেশে শ্রমবাজার সৃষ্টিতে সরকারকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে হবে। আফ্রিকার দেশগুলোয় চাষাবাদের ক্ষেত্রে দেশের বিপুল মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগাতেও উদ্যোগী হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর