আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা পরিপূর্ণভাবে কার্যকর হওয়ার আগেই পাকা আপেলের মতো ঝরে পড়েছে ওয়াশিংটনের আশীর্বাদপুষ্ট কাবুল সরকার। যাদের স্তব্ধ করতে দুই দশক আগে দেশটি দখলে নিয়েছিল পশ্চিমা জোট সেই তালেবানরা ইতিমধ্যে রাজধানী কাবুল দখল করেছে। পার্থক্য শুধু এটুকু, জঙ্গি সংগঠন তালেবান তাদের মারো ধরো কাটো কালচার থেকে দৃশ্যত সরে এসেছে। কাবুলে মার্কিন সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ক্ষমতা ছেড়েছেন তালেবানের সঙ্গে আলোচনার পর। বিশিষ্ট কূটনীতিক আলী আহমাদ জালালির কাছে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দিয়ে তিনি ও তার সহকর্মী নিরাপদে দেশত্যাগ করেছেন। তালেবানের পক্ষ থেকে সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, নারীরা হিজাব পরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। আফগানিস্তানে তালেবান উত্থান সম্পর্কে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত। ধারকাছের দেশগুলোয় জঙ্গিবাদ রপ্তানির ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে তারা। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদাকে আশ্রয় দিয়ে তারা শুধু নিজেদের অস্তিত্বই বিপন্ন করেনি আফগানিস্তানের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্কে আবদ্ধ। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আফগানদের সহযোগিতা অবিস্মরণীয়। পাকিস্তান থেকে বাঙালি সেনা সদস্যরা আফগানিস্তান হয়ে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। সার্কভুক্ত বন্ধু দেশটিতে কারা ক্ষমতায় থাকবে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা শুধু চাইব আফগানিস্তানে যারাই ক্ষমতায় থাকুন তারা সভ্য দুনিয়ার সঙ্গে সহাবস্থানের নীতি অনুসরণ করবেন। সন্ত্রাসবাদ রপ্তানি কিংবা বিদেশি জঙ্গিদের মদদ দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। আমরা একটি নতুন আফগানিস্তান দেখার প্রতীক্ষায়। যেখানে মানবাধিকার নিশ্চিত থাকবে। থাকবে গণতান্ত্রিক পরিবেশ। নিজেদের স্বার্থেই নতুন শাসকরা এ বিষয়ে সচেতন থাকবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।