রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

থালাইভি জয়ললিতার সবটাই লড়াইয়ের কাহিনি

নঈম নিজাম

থালাইভি জয়ললিতার সবটাই লড়াইয়ের কাহিনি

চলচ্চিত্রের কাহিনি থেকে মানুষের জীবন ও রাজনীতি কতটা দূরে? জীবন চলার পথে অনেক কিছুই ঘটে যায় চারপাশে। সেসব বাস্তবতাকে অনেক সময় কেউই এড়াতে পারে না। তামিলনাড়ুর এক সময়ের জনপ্রিয় নেত্রী-অভিনেত্রী জয়ললিতাও পারেননি। জয়ললিতাকে নিয়ে ছবি নির্মিত হয়েছে ভারতে। সেই ছবিতে দেখানো হয়েছে একজন নারীর কঠিন সংগ্রামী জীবন।  স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কেটে উঠে দাঁড়ানো সহজতর ছিল না। কিন্তু তিনি সবকিছু মোকাবিলা করে বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। জবাব দিয়েছেন ঈর্ষার অনলে জ্বলতে থাকা নষ্ট ভন্ড মুখোশধারীদের। দেখিয়েছেন সংগ্রামী মানুষ কীভাবে মনের ভিতরের তীব্র দহন নিয়েই সবকিছু জয় করে এগিয়ে যায়।

অভিনেত্রী জয়ললিতা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন আলাদা। মানুষের মুখের ওপর দুই কথা শুনিয়ে দিতেন। মায়ের অনুরোধ রক্ষা করতে গিয়ে সিনেমা শুরু করেন। অভিনেত্রী থেকে নেত্রী হয়েছিলেন। চলচ্চিত্রের মতো রাজনীতিতেও তিনি প্রথম যোগ দিতে চাননি। নিয়তি তাকে টেনে এনেছে। চলচ্চিত্রে তার প্রথম নায়ক এম জে রামচন্দন বা এমজেআর। অভিনয় ও রাজনীতি দুটোতে তার যাত্রা এমজেআরের হাত ধরে। থালাইভি ছবিতে অনেক কিছুই তুলে ধরা হয়েছে। জয়ললিতা চরিত্রে অভিনয় করেছেন কঙ্গনা। তার অভিনয় জীবনের সেরাটাই উগড়ে দিয়েছেন। জয়ললিতাকে নিয়ে অনেক মুখরোচক কথার মিথ ছিল। কিন্তু বাস্তব জীবনে ছিল পুরোটাই সংগ্রাম। এ কারণে রাজনীতিতে আসার পর বিপ্লবী নেতা বা ‘পুরাচ্চি থালাইভি’ উপাধি পান। সাধারণ মানুষকে জয় করেছিলেন নিজের শ্রম-মেধা দিয়ে। ক্ষমতায় থাকাকালে বিতর্ক ছিল। কিন্তু এক দিনের জন্যও নিজের অবস্থান থেকে সরেননি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে গেছেন। সমালোচকদের সঙ্গে একটা অঘোষিত যুদ্ধ ছিল। সেই যুদ্ধে বারবার হোঁচট খেয়েছিলেন। ছিটকে পড়েছিলেন। কিন্তু আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন। চালিয়ে গেছেন লড়াইটা। 

এমজেআরের দল দিয়েই জয়ললিতার শুরু। তামিলনাড়ুর ভগবান বলা হতো এক সময় এম জে রামচন্দন বা এমজেআরকে। চলচ্চিত্রের বিশাল অবস্থান ও ইমেজ নিয়েই রাজনীতিতে জড়ান তিনি। পরে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হন। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা ছিল। জনপ্রিয়তা ছিল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে এমজেআরের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ মেলে জয়ার। একটি ছবিতে একজন নায়িকাকে বাদ দেওয়া হয় এমজেআরের সঙ্গে বেশি মাখামাখির কারণে। সেই শূন্য স্থানে যোগ হওয়া মেয়েটিকে একদিন এমজেআর বললেন, জীবনে যা করবে মন থেকে আসতে হবে। মন থেকে না এলে কিছু করবে না। জয়া তাই করলেন। অভিনয়ে মাত করলেন তামিলনাড়ু। ১৯৬১ থেকে ৮০ সাল পর্যন্ত ১৪০টি ছবিতে অভিনয় করেন। শুধু এমজেআর নয়, অন্য অভিনেতাদের সঙ্গেও তিনি সফল জুটি ছিলেন। তার অভিনয় প্রতিভার প্রশংসা ভারতজুড়েই ছিল।

এমজেআর রাজনীতি শুরু করার প্রথম থেকেই জয়াকে সঙ্গে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জয়া রাজি হননি। বলেছিলেন, রাজনীতি বুঝি না। এমজেআর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর দূরত্ব বেড়ে যায় জয়ার সঙ্গে। কারণ এমজেআরকে তার পরামর্শকরা বলেছিলেন দুর্নাম আনা যাবে না। স্বচ্ছতা দেখাতে হবে। দুজনই তা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু প্রকৃতির লিখন কে করিবে খন্ডন! সময় বয়ে যেতে থাকে। জয়ারও বয়স বাড়তে থাকে। নায়িকা জীবনের অধ্যায় ফুরিয়ে আসতে থাকে। সেই সময়ে একটি অনুষ্ঠানে নাচ করতে যান। মানুষের বুকভরা ভালোবাসা তখনো ছিল তার জন্য। সেই অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী এমজেআর। আবার দেখা হলো এমজেআরের সঙ্গে। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন এমজেআর। জবাবে জয়ললিতা বললেন, রাজনীতি এত বুঝি না। কিন্তু পরিস্থিতি তাকে রাজনীতিতে টেনে আনে। তার কিছুদিন পর গাড়িতে জয়ললিতা যাচ্ছিলেন। দেখলেন রাস্তার পথশিশুরা ফুল বিক্রি করে টাকা আয় করছে। জয়ললিতা তাদের বললেন, তোমরা স্কুলে কেন যাও না? পথশিশুরা বলল, স্কুলে গেলে খাবার কোথায় পাব? জয়া সাইনবোর্ড দেখিয়ে বললেন, দেখ স্কুলে গেলে সরকার খাবার দেয়। পথের মেয়েটি বলল, সরকারি খাবার সাইনবোর্ডে মেলে। বাস্তবের স্কুলে নয়। এরপর জয়া সেই স্কুলে যান। গিয়ে দেখেন খাবারের নামে করুণ হাল। জয়া সেই খাবার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যান। ঘটনা বলেন। অঙ্গীকার করান স্কুলে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করানোর। বাচ্চারা ভালো খাবার পেয়ে জয়াকে আম্মা ডাকতে শুরু করে। মানুষের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে জয়া যোগ দেন রাজনীতিতে। তিনি বদলে দিলেন তামিলনাড়ুর ইতিহাস। ভারতের রাজনীতিতে তৈরি করেন নতুন এক জগৎ। জয়ললিতা বলতেন, কাজ করলে সমালোচনা হয়, হবে। না করলে কেউ কিছু বলে না। আসলে তাই। বড় অদ্ভুত সমাজে বাস করি। একদল লোক জন্ম নেয় কাজ করতে। আরেক দল জন্ম নেয় কাজের মানুষকে গালাগাল করতে। কুৎসা রটাতে।

রাজনীতিতে যোগ দিয়ে এআইএডিএমকে দলের সঙ্গে পথ চলা শুরু হলো জয়ার। চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে থাকেন। পেলেন দলের প্রচার সম্পাদক পদ। সমাজের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে থাকেন। গরিব, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। এতিমখানায় যেতেন সাহায্যের হাত নিয়ে। মানবতাকে দেখতেন বড় করে। জয় করতে থাকেন সাধারণ মানুষকে। এমজেআরের দল নতুনভাবে বিকশিত হতে থাকে জয়ললিতাকে ঘিরে। একবার মন্দিরের মূর্তি চুরিকে ঘিরে ভয়াবহ রাজনৈতিক দাঙ্গা শুরু হয়। ঘটনাস্থলে যেতে ক্ষমতাসীন কোনো নেতাই সম্মত হননি। মন্ত্রীরাও না। জনরোষের কাছে প্রশাসন ছিল অসহায়। বিরোধী দলের সমালোচনা তো ছিলই। সব বাধা উপেক্ষা করে জয়া গেলেন একা। মঞ্চে ওঠার পরই হামলার শিকার হন সাধারণ মানুষের। মাথা ফেটে যায় তাঁর। কিন্তু তিনি থামলেন না। শেষ পর্যন্ত বক্তৃতা দিয়ে সবাইকে শান্ত করেন। রাজনৈতিক জয় নিয়ে ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে। এমজেআর বুঝলেন জয়াকে দিয়ে অনেক বড় কিছু করা সম্ভব। তখন তার দলের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব ছিল। লোকসভার সদস্য হয়ে সেই দূরত্ব কমাতে কাজ শুরু করেন। ইন্দিরা গান্ধী তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তামিলনাড়ু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে বারবার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাননি। পরে সংসদে ইংরেজিতে বক্তব্য রেখে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কাড়েন। ইন্দিরার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি মেলে। বৈঠক করে বাস্তবতা তুলে ধরে এমজেআরের দলের সঙ্গে ভোটের জোট চূড়ান্ত করেন। তার এই সাফল্য দল ভালোভাবে নেয়নি। অন্যরা এমজেআরকে বুঝান তিনি এখন আপনাকে ছাড়িয়ে গেছেন। এতে সাময়িক দূরত্ব তৈরি হয়। তামিলনাড়ু ফিরে অভ্যর্থনার বদলে পান সিনিয়র নেতাদের ঠান্ডা লড়াই। হতাশ হয়ে থামলেন না থালাইভি। শুরু করলেন নতুন করে এক অভিমানী লড়াই। হুট করে অসুস্থ হলেন এমজেআর। চলে গেলেন আমেরিকায় চিকিৎসার জন্য। রাজিব গান্ধীর অনুরোধে জোটের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন জয়া। শেষ পর্যন্ত এমজেআরের দল আবার জয়ী হয়। দেশে ফিরে আসেন এমজেআর। কিন্তু বেশি দিন বাঁচলেন না। চলে গেলেন।

এমজেআরের মৃত্যুর পর সবাই ভেবেছিলেন এবার জয়ললিতা শেষ। তার আর রাজনীতিতে উঠে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। কিন্তু থালাইভি থেমে থাকেন কী করে? তিনি আবার ঘুরে দাঁড়ান। ভোটের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ছুটে বেড়ান সাধারণ মানুষের কাছে। মানুষ তাকে ফেরায়নি। মানুষের জন্য কাজ করলে রাজনীতিতে টিকে থাকা যায়। কেউ আটকে রাখতে পারে না। জয়ার কর্ম দক্ষতা ইন্দিরা চিনতে ভুল করেননি। তাই প্রথম বৈঠকে রাজনৈতিক ঐক্যের পক্ষে মত দিয়েছিলেন ইন্দিরা। পরে রাজিব গান্ধীও তাকে সহায়তা করেন। কিন্তু রাজিব, ইন্দিরার দুটি মৃত্যু তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তারপরও থামাতে পারেনি। কারণ থালাইভিরা থামে না। তারা লড়াই করে টিকে থাকে। এই লড়াইয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করে বেঁচে থাকতে হয়। ছুটতে হয় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। শত ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হয়। আর প্রতিহত করতে না পারলে জীবন দিতে হয়। ইন্দিরা গান্ধী মারা যান শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে। রাজীব গান্ধীকে আরও নিষ্ঠুরভাবে মরতে হয়। তাদের স্মৃতি নিয়েই নিজেকে এগিয়ে নেন জয়ললিতা। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় স্মৃতির অংশে ছিলেন একজনই। তিনি এমজেআর। মৃত্যুর আগের রাতে জয়ললিতাকে ফোন করলেন এমজেআর। আলাপে অভিমান দূর হলো। এমজেআর বললেন, ডিনার তৈরি কর। রাতে তোমার সঙ্গে খাব। আসব তোমার বাড়িতে। অনেক ধরনের খাবার রান্না করলেন জয়া। টেবিলে বসে অপেক্ষা করতে করতে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েন। গাড়ির হর্ন শুনে জেগে উঠে জানলেন, এমজেআর আর নেই। চলে গেছেন চিরতরে। থমকে গেলেন জয়ললিতা। কী করে সম্ভব? মানুষটি বলেছিলেন আসবেন। কিন্তু তার আর আসা হলো না। কফিনের পাশে গেলেন জয়ললিতা। নেতারা তাকে বাধাগ্রস্ত করলেন। হয়রানি করলেন দাঁড়ানোর মুহূর্তে।

এমজেআরের মৃত্যুর পর জয়ললিতা রাজনীতির উত্তরাধিকার দাবি করেন। কিন্তু দল উত্তরাধিকার ঘোষণা করে এমজেআরের স্ত্রী ভাইকোম নারায়ণি জানকিকে। কিন্তু রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কহীন এমজেআরের স্ত্রী জানকি ভালো করতে পারলেন না প্রথম নির্বাচনে। এমজেআর জীবিত থাকাকালে স্বামীকে ঘিরেই ছিল তার জীবন ও সংসার। স্বামীর সবকিছুতে সায় দিতেন। রাজনীতির সাতেপাঁচে ছিলেন না। সরাসরি রাজনীতি করতে এসে ভোটের ভয়াবহ পরাজয় দেখে ক্লান্তি নিয়ে বললেন, এ কাজ আমার নয়। নিজেই রাজনীতি থেকে সরে পড়েন। জয়ললিতা অল্প কয়েকটি আসন নিয়ে সংসদে যান। প্রথম দিন বিরোধী দলের সদস্যদের ওপর সরকারি নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সরকারি দল সংসদে তাকে নোংরাভাবে অপমান, অপদস্থ করে। শরীরেও হাত তুলে লাঞ্ছিত করে। এমজেআরের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কটূক্তি করে। বের করে দেয় সংসদ থেকে। সব অপমানের শোধ নেওয়ার ঘোষণা দেন জয়া। সবার সামনে বলেন, একদিন আমি এই সংসদে আসব, তবে এমপি নয়, মুখ্যমন্ত্রী হয়ে।

রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন তিনি। শুরু হয় নতুন যাত্রা। এদিকে ছিন্নভিন্ন এমজেআরের দল জয়াকে মেনে নেয়। প্রবীণ নেতারা বোঝেন জয়াকে দরকার রাজনীতিতে টিকতে হলে। না হলে সরকারি দলের নির্যাতন সইতে হবে। জয়া মাঠে নামেন। ভোটের সময় তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয় গাড়ি দুর্ঘটনার মাধ্যমে। সবাই চিন্তায় পড়েন ভোট করতে পারবেন কি না। কিন্তু মনোবল ধরে রাখেন তিনি। অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রচারণায় নামেন। সব কিছু মোকাবিলা করেন জীবনবাজি রেখে। সমালোচকদের মিথ্যা আর কুৎসার জবাব দেন ভোটে জিতে। সরকার গঠন করেন। তারপর সব ইতিহাস। সেই ইতিহাস আর কেউ নন, জয়ললিতা নিজেই তৈরি করেছেন।

জয়ললিতা ১৯৯১ সালে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু বিতর্ক তার পিছু ছাড়ছিল না। পালক পুত্র সুধাগরনের বিয়েতে দেড় লাখ অতিথি আমন্ত্রণ জানিয়ে হইচই ফেলে দেন ভারতে। ব্যাপক বিতর্ক বয়ে আনে। খেসারত হিসেবে ’৯৬ সালের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়। করুণানিধি সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ আনে। শুধু তাই নয়, জয়ললিতাকে আটক করে পাঠানো হয় কারাগারে। দলের ভিতরেও বিভাজনের শেষ ছিল না। সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ান জয়ললিতা। ২০০১ সালে তার দল এআইএডিএমকে আবার ক্ষমতায় আসে। কিন্তু জয়ললিতা ভোটে দাঁড়াতে পারেননি দুর্নীতি মামলার কারণে। ছয় মাস পর মামলা থেকে রেহাই পেয়ে আবার মুখ্যমন্ত্রী হন। লড়াই তাঁর পিছু ছাড়ছিল না। লড়াই করেই ধরে রাখেন ক্ষমতা। চারবার মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। পাশাপাশি মামলা-মোকদ্দমারও শেষ ছিল না। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে ক্ষমতার তিন বছর পর পদ ছাড়তে হয়েছিল। কিন্তু থালাইভির জীবন তো থেমে থাকতে পারে না।  ২০১৫ সালে মামলায় খালাস পেয়ে আবার ক্ষমতায় বসেন। এবার থালাইভিকে কাবু করে বসে শারীরিক অসুস্থতা। টানা ৭৫ দিন হাসপাতালে ছিলেন। তারপর সব শেষ হয়ে গেল।  ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর সবকিছু থেকেই চিরতরে বিদায় নিলেন তামিলনাড়ুর আম্মু জয়ললিতা। জয়ললিতাকে নিয়ে অনেক মিথ।  তারপরও তামিলনাড়ুর মানুষের হৃদয়ে কোথাও যেন একটা স্থান করে নিয়েছিলেন। যা এখনো আছে।

                লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সর্বশেষ খবর