শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ আপডেট:

রক্ষীবাহিনীর ব্যর্থতায় কঠিন বাস্তবতা

নঈম নিজাম
প্রিন্ট ভার্সন
রক্ষীবাহিনীর ব্যর্থতায় কঠিন বাস্তবতা

একটা ব্যর্থতার গ্লানি এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে রক্ষীবাহিনীর ১২ হাজার সদস্যকে। বাংলাদেশের জাতির পিতাকে রক্ষা করতে পারেননি রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা। ব্যর্থতা ছিল খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলায়ও। সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাতে না জড়ানোর অনুরোধ অথবা নির্দেশ এসেছিল সেনা হেডকোয়ার্টার থেকে। কারা দিয়েছিলেন সেই নির্দেশ? কেন দিয়েছিলেন? আড়ালের ষড়যন্ত্র কী ছিল? এখনো অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। রক্ষীবাহিনী প্রধান কর্নেল নুরুজ্জামান দেশে ছিলেন না। ১৯৭৫ সালের ১২ আগস্ট তিনি ঢাকা ছাড়েন। গন্তব্যস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন।  উচ্চতর প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমন্ত্রণ পান। অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বইতে লিখেছেন, এ আমন্ত্রণ ছিল সিআইএ থেকে পাওয়া। রক্ষীবাহিনীর তখনকার অনেক কর্মকর্তা বলেছেন অন্য কথা। তাঁরা বলেছেন, আমন্ত্রণ সিআইএ থেকে সরাসরি ছিল না। আমন্ত্রণপত্র ছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার থেকে। রাষ্ট্রপতির অনুমতি নিয়ে তিনি ঢাকা ছাড়েন। যাওয়ার আগে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেন লে. কর্নেল আবুল হাসান খানকে। ১৫ আগস্ট কর্নেল নুরুজ্জামান ছিলেন লন্ডনে যাত্রাবিরতিতে। জাতির পিতার হত্যাকান্ডের খবর তিনি যখন পান তখন বাংলাদেশ সময় দুপুর। রক্ষীবাহিনীর দুই কর্মকর্তা আনোয়ারুল আলম শহীদ ও সরোয়ার মোল্লা তাঁকে ফোনে পাওয়ার চেষ্টা করেন ভোর থেকে। তিনি ছিলেন ঘুমিয়ে। লন্ডন সময় সকালে যখন ফোনে পান তখন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন খুনি মোশতাক। অন্য বাহিনীর মতো রক্ষীবাহিনীও নির্বিকার।

নুরুজ্জামান হত্যাকান্ডের খবরে ঢাকায় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভূমিকার খবর নেন। তিনি তাদের অবস্থানে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তারপর রক্ষীবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও দুই উপপরিচালককে নির্দেশ দেন খালেদ মোশাররফ ও রংপুর ব্রিগেডের কর্নেল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। খুনিরা বঙ্গভবনে বসে ঢাকা ফেরায় নুরুজ্জামানকে বাধা দেন। নুরুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে আর যাননি। লন্ডনে অবস্থান নেন। এ সময় রক্ষীবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কর্নেল নুরুজ্জামানের যোগাযোগ ছিল। কোনো ধরনের বার্তা বা অ্যাকশনের নির্দেশ রংপুর থেকে কর্নেল হুদা রক্ষীবাহিনীর কর্মকর্তাদের দেননি। তারা এ বিষয়ে কথা বললে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে বলেন। পাশাপাশি অনুরোধ করেন খালেদ মোশাররফের নির্দেশ মানতে।

১৫ আগস্ট রক্ষীবাহিনীর অবস্থান ছিল দিশাহারার মতো। ভোরে রক্ষীবাহিনীর দুই কর্মকর্তা আনোয়ারুল আলম শহীদ ও সরোয়ার হোসেন মোল্লা অফিসে ছুটে আসেন। তাঁদের পর আসেন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবুল হাসান খানও। তাঁরা দেখেন তাঁদের অফিসের সামনে সেনা ট্যাংক মোতায়েন। সব ট্যাংকের নল রক্ষীবাহিনীর সদর দফতরের দিকে তাক করানো। তাঁরা জানতেন না এর মধ্যে কোনো গোলা নেই। শুধু সক্রিয় ছিল মেশিনগান। তাঁরা ট্যাংক উপেক্ষা করে ভিতরে প্রবেশ করেন। তারপর সবাই চারদিকে যোগাযোগ শুরু করেন। টহল দলের এক গ্রুপকে পাঠানো হয় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে। খুনি দলের সদস্য ও বঙ্গবন্ধুকে রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত আঁতাতকারী সেনা সদস্যদের যৌথ বাধায় তাঁরা ৩২ নম্বরে যেতে পারলেন না। এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী মনসুর আলীর ফোন পেয়ে রক্ষীবাহিনীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টহলরত গ্রুপ যায় শাহবাগ বেতারে। মনসুর আলী রক্ষীবাহিনীকে জানান, শাহবাগ কেউ দখল করে উল্টাপাল্টা কথা বলছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঘটনা তিনি তখনো হয়তো জানতেন না। শাহবাগে রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের দেখে ক্ষুব্ধ হন মেজর ডালিম। সেনা সদস্যদের তিনি নির্দেশ দেন ব্যবস্থা নিতে। তারা রক্ষীবাহিনীর একজন লিডারসহ পুরো টিমকে হ্যান্ডসআপ করিয়ে অস্ত্র কেড়ে নেয়। তাঁদের আটক করে লাইন ধরে দাঁড় করে রাখে দুপুর পর্যন্ত। তাঁদের গাড়ির ব্যাটারি দিয়ে চালু করে বেতারের জেনারেটর। রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের পরে ছাড়া হয় খালেদ মোশাররফের নির্দেশে। ছাড়া পেয়ে তাঁরা রিপোর্ট করেন হেডকোয়ার্টারে।

রক্ষীবাহিনীর প্রায় সব কর্মকর্তা ও সদস্য ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। জাতির পিতার প্রতি তাঁদের অঙ্গীকার ১৯৭১ সালে অর্জিত। রক্ষীবাহিনীর পরিচালক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার এএনএম নুরুজ্জামান বীরউত্তম। উপপরিচালক প্রশাসন ছিলেন লে. কর্নেল আবুল হাসান খান, উপপরিচালক অপারেশন সরোয়ার হোসেন মোল্লা (পরে কর্নেল, রাষ্ট্রদূত, সচিব), উপপরিচালক প্রশিক্ষণ আনোয়ারুল আলম শহীদ (পরে কর্নেল, রাষ্ট্রদূত, সচিব), উপপরিচালক সিগন্যাল সাবিহ উদ্দিন আহমেদ (পরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল), চট্টগ্রাম জোনাল কমান্ডার ছিলেন এ কে এম আজিজুল ইসলাম (পরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল), উপপরিচালক মেডিকেল ছিলেন লে. কর্নেল এ এম খান। এ ছাড়া সহকারী পরিচালক ছিলেন মেজর সালাহ উদ্দিন, এম এ হাসনাত, ফকির মোহাম্মদ ও তৈয়বুর রহমান। লিডার হিসেবে সারা দেশে দায়িত্ব পালন করেছেন ২১২ কর্মকর্তা। সাভারে প্রশিক্ষণে ছিলেন আরও কিছু কর্মকর্তা। তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন লিডার হিসেবে নতুন দায়িত্বের। মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ১২ হাজার। ১৫টি ব্যাটালিয়নের ১২টি ছিল নিয়মিত, আর তিনটি প্রশিক্ষণের। সাধারণ সদস্যরাও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এ কারণে রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের প্রতি একটা আশাবাদ ছিল মানুষের।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর একটা প্রতিরোধ যুদ্ধে রক্ষীবাহিনী যেতে পারত। তারা তা পারেনি। কেন পারেনি? ১৫ আগস্ট রাতে পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তা একসঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন সব ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেবেন। তাঁরা তা-ই করলেন। রেশন পাঠানোর সময় মেশিনগানসহ কিছু অস্ত্র পাঠালেন ঢাকার বাইরে। সবাইকে বললেন নির্দেশ দেওয়া মাত্র স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে। সে নির্দেশ কার্যকর হয়নি। কেন হয়নি? রক্ষীবাহিনীর উপপরিচালক সরোয়ার মোল্লা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার দায়িত্ব রক্ষীবাহিনীর ওপর ছিল না। তার পরও অস্বীকার করার উপায় নেই একটা ব্যর্থতার গ্লানি আমাদের সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, রক্ষীবাহিনী ছিল প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী। দায়িত্ব ছিল দেশের আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা। জাসদের গণবাহিনী, সর্বহারাসহ উগ্রপন্থিদের হামলা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। সদ্যস্বাধীন দেশের অস্ত্র উদ্ধার, চোরাচালান, কালোবাজারি বন্ধ, অস্থিতিশীলতা প্রতিরোধে রক্ষীবাহিনী কাজ করত। এখন র‌্যাব যা করছে রক্ষীবাহিনীও তখন তা করত। এ নিয়ে সেনাবাহিনীর ভিতরে জাসদের কর্নেল তাহের ও বাম উগ্রপন্থি চিন্তার কর্নেল জিয়াউদ্দিন ও পাকিস্তানপ্রত্যাগতদের প্রচারণা ছিল পুরোটাই মিথ্যাচার। খুনি ফারুক-রশীদও একই ধরনের প্রচারণা চালাত বঙ্গবন্ধু সরকারকে বিব্রত করতে। মিথ্যাচার আর গুজবের কারখানা বানানো হয়েছিল সেনানিবাসকে। বাস্তবে রক্ষীবাহিনীর কোনো ভারী অস্ত্র ছিল না। ঢাকায় তাদের নিজস্ব কোনো অস্ত্রাগার ছিল না। সব অস্ত্র রাতে রাখা হতো পিলখানায় বিডিআরের অস্ত্রাগারে। সকালে সেই অস্ত্র নিয়ে আসা হতো রক্ষীবাহিনীর হেডকোয়ার্টারে। ১৫ আগস্ট সকালে অস্ত্র আনতে গিয়েছিলেন রক্ষীবাহিনীর একজন লিডার। সেই অস্ত্র দেননি বিডিআরপ্রধান ব্রিগেডিয়ার খলিলুর রহমান। অন্যদিকে ১৭ আগস্ট অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল কর্নেল মইনুল হোসেন চৌধুরী রক্ষীবাহিনী অফিসে যান। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। আর কর্নেল আমিন আহমেদ চৌধুরী ১৫ আগস্ট যান সাভার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। তিনি ভারতীয় একজন প্রশিক্ষককে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে পাঠিয়ে দেন ভারতীয় হাইকমিশনে।

রক্ষীবাহিনীর ভিতরে একটা চাপা কষ্ট ও ক্ষোভ ১৫ আগস্ট সকালেই ভর করে। সাভারে রক্ষীবাহিনীর দুজন সদস্য সকাল থেকেই চিৎকার করতে থাকেন সবাইকে বেরিয়ে পড়তে। অন্যরা ওপরের নির্দেশের অপেক্ষার কথা বলার কারণে এ দুই সদস্য আত্মহত্যা করেন। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, রক্ষীবাহিনীকে সিদ্ধান্তহীন করতে বাহিনীপ্রধানকে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পুরো বিষয় কাকতালীয় মনে করার কারণ নেই। সবকিছুই ছিল দেশি ও আন্তর্জাতিকভাবে গোছানো একটা নিষ্ঠুর ছক। সেই ছকে আটকা পড়েন রক্ষীবাহিনীর কর্মকর্তারা। সব শেষ হওয়ার পর তাঁদের করার কিছু ছিল না। এ বাহিনীর দুই কর্মকর্তা সরোয়ার মোল্লা ও আনোয়ারুল আলম শহীদকে ১৫ আগস্ট ৪৬ ব্রিগেডে নিয়ে যাওয়া ছিল পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা। শাফায়াত জামিল ও খালেদ মোশাররফ রক্ষীবাহিনীর কর্মকর্তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। সেই অনুরোধ রক্ষায় রক্ষীবাহিনীর উপপরিচালকদের বেতার ভবনে যেতে বাধ্য করা হয় খুনি মোশতাকের শপথ অনুষ্ঠানে। খালেদ মোশাররফ শপথে গিয়েছিলেন সিভিল পোশাকে। তিনি বারবার সিগারেট খাচ্ছিলেন। তাঁর মেজাজ ছিল খারাপ। জিয়াউর রহমান ছিলেন সামরিক পোশাকে। কালো চশমার আড়ালে ঢাকা ছিল তাঁর প্রতিক্রিয়া। তিন বাহিনী প্রধান ছিলেন অনেকটা বিব্রতকর অবস্থায়। তাঁদের কেউ মানছিলেন না। তাঁদের অবস্থান ছিল যাত্রা টিমের নিরীহ সেপাইয়ের মতো।

খুনিরা শুরু থেকেই টেনশনে ছিল রক্ষীবাহিনী নিয়ে। বাহিনীপ্রধান নুরুজ্জামান ’৭১ সালের বীরউত্তম খেতাব পাওয়া যোদ্ধা। বাকিরা ছাত্রলীগ করা। এ কারণে রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ের দায়িত্ব নিজের কাছেই রাখলেন খুনি ফারুক। ১৫ আগস্ট ২৮টি ট্যাংকের গোলা ছিল না। ৩৫০ জন সৈনিককে ফারুক নিজের সঙ্গে রাখলেন রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে। ১২টি ট্রাকে এই সৈনিকদের ওঠানো হলো। তাদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হলো রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ প্রস্তুতির। আর রশীদের দায়িত্ব ছিল সব কাজ শেষ করে পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেওয়া। সমস্ত ঘটনাই ঘটেছিল আর্মি ইন্টেলিজেন্স অফিসের পাশে। শাফায়াত জামিলের বাসা ও তাঁর ইউনিটের পাশ ঘেঁষেই ট্যাংকগুলো এগিয়ে চলছিল সামনে। ট্যাংকগুলোর ব্যারেল ছিল রক্ষীবাহিনী হেডকোয়ার্টারের দিকে তাক করা। রক্ষীবাহিনীর অফিসাররা জানতেন না এ ট্যাংকে গোলা নেই। তাঁরা নিজেদের অস্ত্রও আনতে পারেননি বিডিআর সদর দফতর থেকে। বিডিআরের ডিজি খলিল রক্ষীবাহিনীর রক্ষিত অস্ত্র ১৫ আগস্ট ফেরত দেননি। ডিরেক্টর মিলিটারি অপারেশন ছিলেন কর্নেল নুরুদ্দিন। রক্ষীবাহিনী অফিসে কর্নেল ফারুক গিয়েছিলেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কর্নেল হাসানকে ফোনে মিলিয়ে দিলেন কর্নেল নুরুদ্দিনকে। এর আগে ফোন করলেন সিজিএস খালেদ মোশাররফ ও ৪৬ ব্রিগেডের শাফায়াত জামিলকে। ফারুক নিজে রক্ষীবাহিনী অফিসে প্রবেশ করে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হাসানকে হুমকি দেন। তাঁকে বলেন, সব উড়িয়ে দেব মুহূর্তে। ভয়াবহ যুদ্ধ করে ধ্বংস করা হবে রক্ষীবাহিনী।

বেতার ভবনে রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের আটক করার খবরের প্রভাব অন্যখানেও পড়ে। তার পরও তাঁরা অপেক্ষায় ছিলেন সেনাবাহিনীতে বঙ্গবন্ধুর সমর্থক কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসার। তাঁরা ভেবেছিলেন রক্ষীবাহিনী তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবে। কোথাও থেকে কেউ এলো না। রক্ষীবাহিনীর তখনকার কর্মকর্তারা এখন বলছেন, বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করা ও হত্যাকান্ডের পর প্রতিরোধ করতে না পারা পুরোটাই রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যর্থতা। এ ব্যর্থতার দায় শুধু রক্ষীবাহিনীর একার নয়, তৎকালীন ক্ষমতাবান সব বাহিনীকে নিতে হবে। সত্য কেউ এড়াতে পারেন না। রক্ষীবাহিনীও না। রক্ষীবাহিনীকে সেনাবাহিনীতে বিলুপ্ত করার আগ পর্যন্ত একটা অস্বস্তি ছিল সেনাবাহিনীর ভিতরে। রক্ষীবাহিনীর সব সদস্যই মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ছাত্রলীগ হওয়ার কারণে এমন হয়েছিল। রক্ষীবাহিনীকে সেনাবাহিনীতে বিলুপ্ত করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন ব্রিগেডিয়ার মঞ্জুর। তিনি ছিলেন দিল্লি হাইকমিশনে সামরিক অ্যাটাশে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় ছুটে আসেন ১২ ঘণ্টার মধ্যে। এত দ্রুত কীভাবে এলেন, কেন এলেন, কার অনুমতি নিয়ে এলেন তা এখনো বের হয়নি।

পুরো ঘটনা নিয়ে সরোয়ার মোল্লা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের এপ্রিলের একদিন সন্ধ্যার পর এসবির ডিআইজি ই এ চৌধুরী রক্ষীবাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ঢাকার পুলিশপ্রধান এসপি মাহবুব উদ্দিন আহমদ। পরিচালক কর্নেল নুরুজ্জামান, উপপরিচারক আনোয়ারুল আলম শহীদ ও সরোয়ার হোসেন মোল্লা পরিচালকের রুমে ছিলেন। ই এ চৌধুরী তাঁদের জানান, বঙ্গবন্ধুর ওপর আজ রাতে হামলার খবর তিনি পাচ্ছেন। ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। সিদ্ধান্ত হয় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ঘিরে রক্ষীবাহিনী ও পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। স্পটে থাকবেন এসপি মাহবুব এবং রক্ষীবাহিনীর দুই উপপরিচালক সরোয়ার ও শহীদ। সারা এলাকা ঘিরতে গিয়ে শেখ মণির বাড়ির পাশেও রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা ছিলেন। রাতে বাংলার বাণী অফিস থেকে ফেরার সময় তাঁদের এভাবে দেখে ক্ষুব্ধ হন শেখ মণি। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়। শেখ মণি মনে করেছিলেন কারও প্ররোচনায় রক্ষীবাহিনী তাঁকে ভয় দেখাতে গেছে। বিচার বঙ্গবন্ধুর কাছে যায়। সরোয়ার হোসেন মোল্লা বলেছেন, তাঁরা সবকিছু স্বাভাবিক করতে পরে বাংলার বাণী অফিসে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন শেখ মণির কাছে। তাঁর কাছে আসল ঘটনার বর্ণনা দিয়েছিলেন, কেন সে রাতে গিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত ছিল বঙ্গবন্ধুর বাসভবন ও ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রাতে ঘিরে রাখার। রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝির কারণে রক্ষীবাহিনী আর যেতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির নিরাপত্তা পুলিশের এসবি ও সেনা ইউনিটের ওপর ছিল। ১৫ আগস্ট পুলিশ সক্রিয় থাকলেও সেনা ইউনিট মুহূর্তে যোগ দেয় খুনিদের সঙ্গে। তারা উল্লাস করে।

সরোয়ার মোল্লা বলেছেন, ৩২ নম্বরের নিরাপত্তা নিয়ে কর্নেল নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিনি, শহীদ ও সাবিহ উদ্দিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাবিহ উদ্দিন ‘অ্যা ম্যান অন হর্স ব্ল্যাক’ নামে একটি বই নিয়ে যান সঙ্গে। এ বইতে দুনিয়াজুড়ে তখনকার সামরিক ক্যুর কথা ছিল। তাঁরা বঙ্গবন্ধুকে বোঝানোর চেষ্টা করেন ৩২ নম্বরের বাড়ি নিরাপত্তাহীন। এ বাড়িতে থাকা ঠিক হবে না। ১৫ আগস্টের অনেক কিছুই ছিল রহস্যময়। এনএসআই-প্রধান এ বি এম সফদার ছিলেন পাকিস্তানপ্রত্যাগত ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁর সহযোগী ছিলেন পুলিশের আরেক কর্মকর্তা ডিআইজি এস এ হাকিম। ১৯৭১ সালে সফদার ছিলেন পাকিস্তানের পক্ষে। তিনি চাকরি করেছেন পাকিস্তানিদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে, তাদের সহযোগিতা করে। তাঁর বিষয়ে কানাঘুষা ছিল তিনি সিআইএ’র সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনি মোশতাক সরকার পদোন্নতি দিয়েছিল সফদারকে। এটা কীসের পুরস্কার ছিল আজও বের হয়নি। স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডিআইজি ছিলেন ই এ চৌধুরী। তিনিও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর আনুগত্য ছিল বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রতি। তিনি কয়েক দফা রক্ষীবাহিনীকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করেছিলেন।

ডিজিএফআই-প্রধান ছিলেন ব্রিগেডিয়ার আবদুর রউফ। তিনি ছিলেন পাকিস্তানপ্রত্যাগত সেনা কর্মকর্তা। ১৫ আগস্টের কয়েকদিন আগে তাঁকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কর্নেল জামিলকে। একমাত্র সেনা কর্মকর্তা জামিলই তাঁর শপথ রক্ষা করে রাষ্ট্রপতিকে রক্ষায় জীবন দিয়েছিলেন। জামিলকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব করছিলেন ব্রিগেডিয়ার রউফ। কেন করেছিলেন আজও বের হয়নি। সে রাতে খবর পেয়ে কেন ব্যবস্থা নেননি সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান তা-ও বের হয়নি। অন্যদিকে প্রেসিডেন্টের সামরিক সচিব হিসেবে আগস্টে নিয়োগ পেয়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার মাশহুরুল হক। তিনিও পাকিস্তানপ্রত্যাগত কর্মকর্তা। সরোয়ার মোল্লা বলেছেন, পাকিস্তানপ্রত্যাগত অফিসাররা ছিলেন বেশির ভাগ সিনিয়র পদে। মুক্তিযোদ্ধা অফিসাররা ছিলেন জুনিয়র। এ কারণে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হতো না। চারদিকে ছিল পাকিস্তানপ্রত্যাগতরা।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন ইতিহাসের রাখাল রাজা। যেমন ছিল তাঁর উচ্চতা, তেমন হৃদয়। পাকিস্তানপ্রত্যাগতদের কাছে প্রত্যাশা ছিল তাঁরা পেশাদারি নিয়ে কাজ করবেন। কেউ তা করেননি। বঙ্গবন্ধু ধানমন্ডির বাড়ি ছাড়েননি গণমানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায়। ৩২ নম্বর বাড়ির দরজা ছিল সবার জন্য খোলা। মানুষ অবাধে প্রবেশ করতে পারত। আটকাত না কেউ। এমনকি প্রশ্নও করত না। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার একজন পরিচালক এ বাড়ির নিরাপত্তা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন।  তিনি বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, বাংলাদেশ তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। কোনো বাঙালি তাঁকে  হত্যা করবে না।

বঙ্গবন্ধু ভুলে গিয়েছিলেন, বাঙালির পরতে পরতে বেইমানির রক্ত প্রবহমান। এই বাঙালি নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করতে ইংরেজ বাহিনীকে সহায়তা করেছিল। সিরাজের সেনাপ্রধানসহ ঊর্ধ্বতনদের বেইমানি ও বিশ্বাসঘাতকতায় স্বাধীনতার সূর্য নিভে গিয়েছিল পলাশীর আম্রকাননে। আবার স্বাধীনতার সূর্য যিনি এনে দিয়েছিলেন, ১৯৭৫ সালে তাঁকেও পরিবারসহ হত্যা করা হয় একই নিষ্ঠুরতা নিয়ে। সেই রাতে ও পর দিন বঙ্গবন্ধুর পাশে কেউ ছিল না।  কেউ না। চারদিকে শুধুই ব্যর্থতার ইতিহাস।

                লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন

এই বিভাগের আরও খবর
পরিচালনা পর্ষদ
পরিচালনা পর্ষদ
সেনাপ্রধানের আশ্বাস
সেনাপ্রধানের আশ্বাস
হে যুবক খোদাকে চেন কি?
হে যুবক খোদাকে চেন কি?
দেশের বিজ্ঞাপনজগৎ : প্রজন্ম থেকে শিখছে প্রজন্ম
দেশের বিজ্ঞাপনজগৎ : প্রজন্ম থেকে শিখছে প্রজন্ম
রাহুল সাংকৃত্যায়নের দৃষ্টিতে মুহাম্মদ (সা.)
রাহুল সাংকৃত্যায়নের দৃষ্টিতে মুহাম্মদ (সা.)
অশান্ত বিশ্ববিদ্যালয়
অশান্ত বিশ্ববিদ্যালয়
ফেব্রুয়ারিতেই ভোট
ফেব্রুয়ারিতেই ভোট
মহানবী (সা.)কে অনুসরণে রয়েছে সর্বোত্তম কল্যাণ
মহানবী (সা.)কে অনুসরণে রয়েছে সর্বোত্তম কল্যাণ
কালোহাতগুলোও সাদা হোক
কালোহাতগুলোও সাদা হোক
বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পাল্টাপাল্টি দাবি
বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পাল্টাপাল্টি দাবি
হাত অবশ করার প্রার্থনা
হাত অবশ করার প্রার্থনা
বিএনপি : রাজনীতির হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা
বিএনপি : রাজনীতির হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা
সর্বশেষ খবর
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ডেমরায় খাল পরিষ্কার ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ডেমরায় খাল পরিষ্কার ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

২ মিনিট আগে | রাজনীতি

হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের
হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

৮ মিনিট আগে | জাতীয়

ইন্দোনেশিয়ায় ঝাড়ু হাতে নারীদের বিক্ষোভ
ইন্দোনেশিয়ায় ঝাড়ু হাতে নারীদের বিক্ষোভ

১১ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সেনারা বিগড়ে গেছে, বিপদে নেতানিয়াহু
সেনারা বিগড়ে গেছে, বিপদে নেতানিয়াহু

১৩ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দেশগুলোকে জলবায়ু পরিকল্পনা জমা দিতে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘ
দেশগুলোকে জলবায়ু পরিকল্পনা জমা দিতে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘ

২১ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বাংলাদেশে শ্রম অধিকার উন্নতিতে জাপানি সংসদ সদস্যদের প্রশংসা
বাংলাদেশে শ্রম অধিকার উন্নতিতে জাপানি সংসদ সদস্যদের প্রশংসা

২২ মিনিট আগে | জাতীয়

‘বিএনপি হলো দেশ গড়ার দল’
‘বিএনপি হলো দেশ গড়ার দল’

২৮ মিনিট আগে | রাজনীতি

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব এপিএইচআরের
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব এপিএইচআরের

৩১ মিনিট আগে | জাতীয়

কথার ফুলঝুরি দিয়ে রাজনীতি করার দিন শেষ: আমীর খসরু
কথার ফুলঝুরি দিয়ে রাজনীতি করার দিন শেষ: আমীর খসরু

৩৩ মিনিট আগে | রাজনীতি

কিশোরের আত্মহত্যার পর চ্যাটজিপিটিতে আসছে ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’
কিশোরের আত্মহত্যার পর চ্যাটজিপিটিতে আসছে ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’

৩৬ মিনিট আগে | টেক ওয়ার্ল্ড

ভারতকে আরও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা দিচ্ছে রাশিয়া
ভারতকে আরও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা দিচ্ছে রাশিয়া

৩৮ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

পুতিন, শি ও কিম যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন: ট্রাম্প
পুতিন, শি ও কিম যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন: ট্রাম্প

৪৮ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

খাগড়াছড়িতে পাহাড় কাটায় দুই লক্ষ টাকা জরিমানা
খাগড়াছড়িতে পাহাড় কাটায় দুই লক্ষ টাকা জরিমানা

৫৩ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

জাতির ক্রান্তিলগ্নে বিএনপি বারবার জনগণের পাশে ছিল : মীর হেলাল
জাতির ক্রান্তিলগ্নে বিএনপি বারবার জনগণের পাশে ছিল : মীর হেলাল

৫৩ মিনিট আগে | রাজনীতি

সামরিক কুচকাওয়াজে বিশ্বকে নতুন যেসব অস্ত্র দেখাল চীন
সামরিক কুচকাওয়াজে বিশ্বকে নতুন যেসব অস্ত্র দেখাল চীন

৫৯ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভা
জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভা

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বগুড়ায় বার্মিজ চাকুসহ প্রকাশ্যে মহড়া, দুই যুবক গ্রেফতার
বগুড়ায় বার্মিজ চাকুসহ প্রকাশ্যে মহড়া, দুই যুবক গ্রেফতার

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ফেরারি আসামি নির্বাচনে অযোগ্য, ‘না ভোট’ বাধ্যতামূলক
ফেরারি আসামি নির্বাচনে অযোগ্য, ‘না ভোট’ বাধ্যতামূলক

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ডাকসু নির্বাচন : পূর্বঘোষিত ছুটি বাতিল, ভোটের দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
ডাকসু নির্বাচন : পূর্বঘোষিত ছুটি বাতিল, ভোটের দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

১ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মৃত্যুর গুজব যেভাবে ছড়ায়
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মৃত্যুর গুজব যেভাবে ছড়ায়

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বিসিবি নির্বাচনে লড়বেন নান্নু
বিসিবি নির্বাচনে লড়বেন নান্নু

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

সারাদেশে পুলিশের অভিযান, গ্রেফতার ১৪৫০
সারাদেশে পুলিশের অভিযান, গ্রেফতার ১৪৫০

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মহেশখালী-মাতারবাড়ীতে নতুন শহরের জন্ম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
মহেশখালী-মাতারবাড়ীতে নতুন শহরের জন্ম হবে: প্রধান উপদেষ্টা

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় প্রতিবন্ধী হয়েছে ২১ হাজার শিশু
যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় প্রতিবন্ধী হয়েছে ২১ হাজার শিশু

২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সিলেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে ১৪ জনের কারাদণ্ড
সিলেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে ১৪ জনের কারাদণ্ড

২ ঘণ্টা আগে | চায়ের দেশ

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নবনিযুক্ত ২৫ বিচারপতি সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নবনিযুক্ত ২৫ বিচারপতি সাক্ষাৎ

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভালুকায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে র‌্যালি ও আলোচনা সভা
ভালুকায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

দেশের রিজার্ভ বেড়ে ৩১.৪৩ বিলিয়ন ডলার
দেশের রিজার্ভ বেড়ে ৩১.৪৩ বিলিয়ন ডলার

২ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

‘তারেক রহমানের হাত ধরে শহীদ জিয়ার অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করবে বিএনপি’
‘তারেক রহমানের হাত ধরে শহীদ জিয়ার অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করবে বিএনপি’

২ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

সর্বাধিক পঠিত
মধ্যরাতে আটকা পড়ে ছাদে আগুন দিল চোর, উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস
মধ্যরাতে আটকা পড়ে ছাদে আগুন দিল চোর, উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস

১৮ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া, অভিযোগ ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া, অভিযোগ ট্রাম্পের

১১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ভারতীয় বিমানে ‘বার্ড স্ট্রাইক’, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন দেড় শতাধিক যাত্রী
ভারতীয় বিমানে ‘বার্ড স্ট্রাইক’, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন দেড় শতাধিক যাত্রী

১৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

চলন্ত বাস থেকে জাবির ছাত্রীকে ধাক্কা
চলন্ত বাস থেকে জাবির ছাত্রীকে ধাক্কা

১৭ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

এক ইলিশ বিক্রি হলো ১২ হাজারে
এক ইলিশ বিক্রি হলো ১২ হাজারে

৯ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে ঢাকার নতুন রাষ্ট্রদূত মনোনয়ন দিলেন ট্রাম্প
ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে ঢাকার নতুন রাষ্ট্রদূত মনোনয়ন দিলেন ট্রাম্প

১১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

টানা ৫ দিন বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
টানা ৫ দিন বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিশ্ব নারকেল দিবসে আলোচনায় কোটি টাকার ‘ডাবল কোকোনাট’
বিশ্ব নারকেল দিবসে আলোচনায় কোটি টাকার ‘ডাবল কোকোনাট’

১০ ঘণ্টা আগে | পাঁচফোড়ন

ভেনেজুয়েলা থেকে আসা মাদকবাহী নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ১১
ভেনেজুয়েলা থেকে আসা মাদকবাহী নৌকায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ১১

১২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

কক্সবাজারে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
কক্সবাজারে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

৪ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

তিন দেশের অমুসলিম শরণার্থীদের বিশেষ সুবিধা দেবে ভারত
তিন দেশের অমুসলিম শরণার্থীদের বিশেষ সুবিধা দেবে ভারত

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা প্রকাশ
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা প্রকাশ

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পিএসসি’র প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা গ্রেফতার
পিএসসি’র প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা গ্রেফতার

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন হতে বাধা নেই : আপিল বিভাগ
৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন হতে বাধা নেই : আপিল বিভাগ

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইসরায়েলে চারটি হামলা চালিয়েছে হুথি
ইসরায়েলে চারটি হামলা চালিয়েছে হুথি

২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

নির্বাচনের আগে ২ হাজার এএসআই নিয়োগ : আইজিপি
নির্বাচনের আগে ২ হাজার এএসআই নিয়োগ : আইজিপি

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে আসছে পরিবর্তন
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে আসছে পরিবর্তন

১০ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (৩ সেপ্টেম্বর)
একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (৩ সেপ্টেম্বর)

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা আফগানিস্তানের
পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা আফগানিস্তানের

১২ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

কুড়িলে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ
কুড়িলে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ

৭ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

এলজিইডির নতুন প্রধান প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন
এলজিইডির নতুন প্রধান প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন

১০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সাবেক আইজিপি মামুনের জবানবন্দি হাসিনার দুঃশাসনের অকাট্য দলিল : চিফ প্রসিকিউটর
সাবেক আইজিপি মামুনের জবানবন্দি হাসিনার দুঃশাসনের অকাট্য দলিল : চিফ প্রসিকিউটর

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিশ্ববাজারে রেকর্ড উচ্চতায় স্বর্ণের দাম
বিশ্ববাজারে রেকর্ড উচ্চতায় স্বর্ণের দাম

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মৃত্যুর খবর নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মৃত্যুর খবর নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প

১২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল আফগানিস্তান, বাড়ছে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা
ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল আফগানিস্তান, বাড়ছে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা

১৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

'ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে'
'ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে'

২৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পথ দেখাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
পথ দেখাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

১৩ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

সুবিধাবাদী মুক্তিযোদ্ধারা কেন চুপ ছিল, প্রশ্ন টুকুর
সুবিধাবাদী মুক্তিযোদ্ধারা কেন চুপ ছিল, প্রশ্ন টুকুর

২৩ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

লালবাগে শাওন হত্যা মামলায় হাজী সেলিম গ্রেফতার
লালবাগে শাওন হত্যা মামলায় হাজী সেলিম গ্রেফতার

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

রিটকারী ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণে’র হুমকিদাতা আলী হুসেনকে বহিষ্কার
রিটকারী ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণে’র হুমকিদাতা আলী হুসেনকে বহিষ্কার

৯ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

প্রিন্ট সর্বাধিক
পেছাচ্ছে নতুন পে-স্কেল ঘোষণা
পেছাচ্ছে নতুন পে-স্কেল ঘোষণা

পেছনের পৃষ্ঠা

হাসিনা-কামালের নির্দেশে গণহত্যা
হাসিনা-কামালের নির্দেশে গণহত্যা

প্রথম পৃষ্ঠা

আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি
আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি

পেছনের পৃষ্ঠা

আলু ব্যবসায়ী কৃষক সবার মাথায় হাত
আলু ব্যবসায়ী কৃষক সবার মাথায় হাত

নগর জীবন

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

বিএনপির প্রার্থী তিন, একক নিয়ে সরব জামায়াত
বিএনপির প্রার্থী তিন, একক নিয়ে সরব জামায়াত

নগর জীবন

রাজনীতিতে সন্ত্রাসের গডফাদার
রাজনীতিতে সন্ত্রাসের গডফাদার

প্রথম পৃষ্ঠা

রণক্ষেত্র উত্তরা ইপিজেড, এক শ্রমিক নিহত
রণক্ষেত্র উত্তরা ইপিজেড, এক শ্রমিক নিহত

প্রথম পৃষ্ঠা

হোয়াইটওয়াশের ম্যাচ আজ
হোয়াইটওয়াশের ম্যাচ আজ

মাঠে ময়দানে

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের

পেছনের পৃষ্ঠা

পরকীয়া সন্দেহে সাবেক স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন
পরকীয়া সন্দেহে সাবেক স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

পেছনের পৃষ্ঠা

পুরো গ্রাম নিশ্চিহ্ন বাঁচল শুধু একজন
পুরো গ্রাম নিশ্চিহ্ন বাঁচল শুধু একজন

প্রথম পৃষ্ঠা

মাঠে বিএনপির ছয় প্রার্থী অন্য দলের একজন করে
মাঠে বিএনপির ছয় প্রার্থী অন্য দলের একজন করে

নগর জীবন

ত্রিভুজ প্রেমের বলি চিকিৎসক আমিরুল
ত্রিভুজ প্রেমের বলি চিকিৎসক আমিরুল

পেছনের পৃষ্ঠা

ভোটের আগে তদবিরের পাহাড়
ভোটের আগে তদবিরের পাহাড়

পেছনের পৃষ্ঠা

ফেব্রুয়ারিতেই হবে নির্বাচন
ফেব্রুয়ারিতেই হবে নির্বাচন

প্রথম পৃষ্ঠা

স্কুলমাঠে ধান চাষ, বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা
স্কুলমাঠে ধান চাষ, বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

দেশগ্রাম

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম কোর্টে
বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম কোর্টে

প্রথম পৃষ্ঠা

পাখির কলরবে পাল্টেছে জীবন
পাখির কলরবে পাল্টেছে জীবন

পেছনের পৃষ্ঠা

ক্রাইসিস হলে শুধু আমাদের ডাকেন
ক্রাইসিস হলে শুধু আমাদের ডাকেন

প্রথম পৃষ্ঠা

শাবনূরের চরিত্রে আঁচল
শাবনূরের চরিত্রে আঁচল

শোবিজ

সাংবাদিক নির্যাতনে সেই ডিসি কারাগারে
সাংবাদিক নির্যাতনে সেই ডিসি কারাগারে

প্রথম পৃষ্ঠা

উত্তমকে নিয়ে যত আলোচনা
উত্তমকে নিয়ে যত আলোচনা

শোবিজ

নির্বাচন করবেন বুলবুল
নির্বাচন করবেন বুলবুল

মাঠে ময়দানে

চটপটে তটিনী...
চটপটে তটিনী...

শোবিজ

সবার ওপরে রশিদ খান
সবার ওপরে রশিদ খান

মাঠে ময়দানে

বাংলাদেশের ভিয়েতনাম পরীক্ষা
বাংলাদেশের ভিয়েতনাম পরীক্ষা

মাঠে ময়দানে

আমি খুবই সুখী মানুষ, দুঃস্বপ্ন দেখি না
আমি খুবই সুখী মানুষ, দুঃস্বপ্ন দেখি না

শোবিজ

হামজাকে ছাড়েনি লেস্টার সিটি
হামজাকে ছাড়েনি লেস্টার সিটি

মাঠে ময়দানে

নানামুখী চ্যালেঞ্জ পোস্টাল ভোটে
নানামুখী চ্যালেঞ্জ পোস্টাল ভোটে

প্রথম পৃষ্ঠা