কোটাবিরোধী আন্দোলনের আড়ালে জাতীয় সম্পদ ও সাধারণ মানুষের জানমাল ধ্বংসের অপখেলায় মেতেছিল রাজনৈতিক মতলববাজরা। দেশে শুধু ধ্বংসযজ্ঞ চালানো নয়, পরিকল্পিত উপায়ে বিশ্বজুড়ে জাতীয় সম্পদ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা ছড়িয়ে ভুল ধারণা সৃষ্টির অপচেষ্টাও চালায় তারা। এ প্রেক্ষাপটে সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে মেট্রোরেল, সেতু ভবন, বিটিভিসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা ঘুরে দেখেন ২৩ জন রাষ্ট্রদূতসহ ৪৯টি মিশনের প্রতিনিধিরা। প্রথমেই যান মিরপুর মেট্রোরেল দেখতে। আন্দোলনের নামে মেগা এ প্রকল্পের স্টেশনে কী ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে সেই ধ্বংসচিহ্ন দেখেন। এরপর মহাখালীর সেতু ভবন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন ঘুরে দেখেন। পরে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকার ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য দেখে কূটনীতিকরা স্তম্ভিত হয়ে গেছেন। তারা বলেছেন, আমাদের পাশে আছেন। সেতু ভবনের ১২ তলা পর্যন্ত আগুন এবং সাত তলা পর্যন্ত উঠে ধ্বংস চালানো হয়েছে। বাংলা ভাষার প্রথম চ্যানেল বিটিভিতে আগুন ও সারি সারি গাড়ি পুড়িয়েছে। সেতু ভবনও একই দৃশ্য। এগুলো রাষ্ট্রের ওপর হামলা। ধ্বংসযজ্ঞ চালানো প্রতিষ্ঠান ভবন ও গাড়িগুলো কোনো সরকারের নয়, জনগণের সম্পত্তি। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর তাণ্ডবকেও তারা হার মানিয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতারা জাতীয় সম্পদে অগ্নিসংযোগ এবং ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিদেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টির অপপ্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে শান্ত হতে বলেছে। সাফ সাফ জানিয়েছে তারা অব্যাহত সহিংসতা দেখতে চায় না। ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শনকারী কূটনীতিকরা বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র তাদের দেশের কাছে তুলে ধরবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।