রবিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : সুতপা দত্ত দাশগুপ্ত

বাংলাদেশের সঙ্গে আমার নাড়ির টান

বাংলাদেশের সঙ্গে আমার নাড়ির টান

সুতপা দত্ত দাশগুপ্ত, একাধারে কণ্ঠশিল্পী ও কবি। একনামে সবাই তাকে চেনেন শ্রীরামপুরের আখনা গার্লস হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষিকা হিসেবে। কিন্তু এ গুণী শিল্পী ইতিমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছেন। গান, কবিতা ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তার আলাপচারিতা তুলে ধরেছেন— রাফিয়া আহমেদ

 

বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?

পেশাগতভাবে আমি শিক্ষিকা। শ্রীরামপুর গার্লস হাইস্কুলে আমি ১৬ বছর ধরে ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা করছি। সামনে পরীক্ষা তাই সেখানে একটু সময় দিচ্ছি।

 

কবি এবং গায়িকা হিসেবে আপনার বেশ নাম আছে। যদি বলি, কবি এবং গায়িকা এ দুটোর মধ্যে কোনটিকে প্রাধান্য দেবেন?

আসলে গান হচ্ছে আমার প্রাণ। গানের প্রতি আমার সেই ছোটবেলা থেকেই টান । কবিতা লেখা তো আমার শখের একটা জায়গা । সত্যি বলতে আমি নিজেকে গায়িকা হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করি ।

 

আপনি ছোটবেলা থেকে গান করতেন। এ গান শেখার শুরুটা কীভাবে হলো?

আমার গানের হাতেখড়ি দিয়েছিলেন আমার মা মিনতি দত্ত। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম মা সংসারের সব কাজের ফাঁকে ফাঁকে রবীন্দ্রসংগীত শুনতেন। মায়ের উৎসাহেই তপতী চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আমার গান শেখা শুরু। এরপর দিলীপ কর্মকার যিনি বর্তমানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন, তার কাছে আমি পিওর ক্লাসিক্যাল শিখেছি। বর্তমানে খেয়া চট্টোপাধ্যায়ের কাছে নজরুল গীতি, অতুলপ্রসাদী, ভজন এবং আধুনিক শিখছি।

 

এই যে গান গাওয়া, লেখালেখি, শিক্ষকতা করা, এবং সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকা, এতসব করতে গিয়ে কখনো সাংসারিক জীবনে হিমশিম খেতে হয়নি?

আসলে ভালোলাগা থেকেই ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। আমি আমার গান গাওয়া, সাহিত্যচর্চা, আমার পেশাগত যে কাজগুলো আছে এর সবকটাকে আমি খুব ভালোবাসি। আর এটা তো আপনি নিজেই বিশ্বাস করেন যে আপনার ভালোলাগার কাজগুলো যত বেশি পরিমাণ হোক না কেন তার জন্য আপনার সময় ঠিকই তৈরি করা হয়ে যায় এবং সংসারের কাজেও কোনো বাধা আসে না। তাছাড়া পরিবারের সমর্থনটাও সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পাওয়া। যার জন্য আমার সংস্কৃতিচর্চা করতে কোনো সমস্যা হয়নি।

 

একজন শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে কী করা প্রয়োজন?

যে কোনো শিল্পীর জন্য তার সবচেয়ে যে বিষয়টি বেশি প্রয়োজন তা হলো মন দিয়ে সাধনা করা। সেটা যে কোনো ক্ষেত্রে হতে পারে। গান, নাচ, আবৃত্তি, চিত্রকলা ইত্যাদি যে কোনো সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রেই সাধনার প্রয়োজন। আর এ সাধনাকে নিজের মধ্যে ধরে রাখাই হলো একজন শিল্পীর প্রতিভা।

 

কার কার গান এবং কবিতা আপনার ভালো লাগে?

মান্না দে, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের গানের একনিষ্ঠ ভক্ত। আর বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে অনেকের গানই শুনি। তবে ভালো লাগে লিলি ইসলাম ও রচনা ব্যানার্জির গান। তাছাড়া নজরুল গীতি ভালো লাগে। এছাড়া কবিতার মধ্যে জয় গোস্বামীর কবিতা খুব ভালো লাগে। তাছাড়া সমর সেন, বিনয় মজুমদারের কবিতাও ভালো লাগে।

 

কী ধরনের গান গাওয়া হয়?

আমার মূলত নজরুল গীতি গাওয়া হয়। তবে আমি অতুলপ্রসাদী, আধুনিক গানও শিখছি। এছাড়াও আমি ভক্তিমূলক গানও গেয়ে থাকি। মধুবন রেডিওতে গাওয়ার সময় আমি নজরুলের কিছু ভক্তিমূলক গান হিন্দিতে অনুবাদ করেও গেয়েছিলাম।

 

বাংলাদেশে কি কখনো আসা হয়েছে?

না, বাংলাদেশে কখনো যাওয়া হয়নি। তবে বাংলাদেশে আমি যাবই। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে আমার নাড়ির টান আছে। আমার বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মায়ের বাড়ি নোয়াখালী আর শ্বশুরবাড়ি বরিশাল। এক কথায় আমি বাংলাদেশি কন্যা।

সর্বশেষ খবর