বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক আবুল হায়াত। থিয়েটার, টিভি নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে এখনো তাঁর উপস্থিতি দর্শকদের মুগ্ধ করে। নিউইয়র্কে বিপাশা-তৌকীরসহ নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সস্ত্রীক সময় কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
কেমন আছেন? বিদেশ থেকে দেশে ফিরেই আবারও ঘুরছেন। সবমিলিয়ে কেমন কাটছে?
আছি আলহামদুলিল্লাহ! সবাই অনেক ভালো আছি। হুম, দেশে এসেই ঘুরছি। গতকাল খুলনায় এসেছি। পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে। ভালোই লাগছে। দুই দিন থাকব। খুলনায় আমার কিছু আত্মীয়-স্বজন থাকে। ভাগ্নি ও অন্যরা। তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও কিছু স্থানে ঘুরতে এসেছি। আশা করছি, ভালো সময় কাটবে।
নিউইয়র্ক থেকে কবে এসেছেন?
জুন মাসের ২৭ তারিখ দেশে ফিরেছি। প্রায় মাসখানেক তো হয়ে গেল।
কেমন লাগল বিদেশ? মেয়ে-মেয়ের জামাই, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কেমন কাটল?
খুবই ভালো সময় কেটেছে। বেশ কয়েক দিন ঘুরলাম বিভিন্ন স্থানে। আনন্দময় ছিল সময়টা। নিউইয়র্কের কার্লভারটন, লং আইল্যান্ড, ব্যাবিলন, নায়গ্রাফল, সিয়াটল, লেভেনঅরথ, ওয়াশিংটনসহ অনেক দর্শনীয় স্থানে ঘুরেছি। ফটোসেশন করেছি। খেয়েছি। সে এক অন্যরকম ব্যাপার। চেরি ফল, আপেল বাগানে ঘুরে বেড়িয়েছি। চেরি ফল তুললাম, খেলাম। সে এক অন্যরকম অনুভূতি! এরপর আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরে নামলাম। হাহা... নামিনি, পা ভিজিয়েছি শুধু। হলিউড, ইউনিভার্সেল স্টুডিও ঘুরে ঘুরে দেখেছি। পাহাড়ে উঠেছি, জঙ্গলে-লেকেও গিয়েছি। সত্যিই জীবন সুন্দর! প্রথমে এসেই বিপাশা-তৌকীরের ওখানে ১৫ দিন কাটালাম। তারপর আসার সময় আবার ১০ দিন। এরই মধ্যে নাতাশা এলো দেশ থেকে। একসঙ্গে সবাই মিলে সুন্দর সময় কাটল। সেখানে স্প্রিরং সেশন চলছিল। আমি তো রোজার ঈদ বিপাশার ওখানেই কাটিয়েছি। সবমিলিয়ে ভালো কিছু সময় পার করেছি পরিবারের সবার সঙ্গে।
আবারও তো সেই জ্যামের শহরে...
যতই জ্যাম থাকুক, এটা তো আমারই দেশ। আসলে মাটি টাচ করার পর অন্যরকম অনুভূতি হয়। দুই মাস দেশের বাইরে থাকলেও বাড়ি আসার জন্য মনটা ছটফট করছিল। এই অনুভূতি বা টান দেশের বাইরে না থাকলে কেউ বুঝতে পারে না।
দেশে এসে নতুন কোনো কাজ করেছেন?
দেশে এসেই হানিফ সংকেতের ঈদের নাটকে অভিনয় করেছি। ব্যস্ত ছিলাম কিছু কাজ নিয়ে। আসলে এখন তেমন করে খুব বেশি কাজ করব না। নিয়মিত কাজ করব, তবে কম করব।
নতুন সিনেমাগুলো ভালো চলছে। সিনেমা হলে এখন দর্শক ভিড়ছে। বিষয়টি কতখানি আশাব্যঞ্জক?
এটা খুবই ভালো সংবাদ। ভালো সিনেমা তৈরি হচ্ছে এখন। ফান্ড পাচ্ছে। তিনটি সিনেমাই ভালো চলছে শুনেছি। আর অনন্ত জলিলের সিনেমা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। আমি বলব, তবুও তো তিনি কিছু করছেন। দর্শককে হলমুখী করার চেষ্টা করছেন। সিনেমায় লাভ না হলে তো প্রযোজক লগ্নি করতে আগ্রহী হবেন না। এটা রুচির প্রশ্ন। শুনেছি ‘পরাণ’ সিনেমাটিও ভালো চলছে। এখনো অবশ্য দেখিনি। এটা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য ইতিবাচক দিক।
মঞ্চে নিয়মিত না হওয়ার কারণ কী?
বিভিন্ন ব্যস্ততায় মঞ্চে এখন নিয়মিত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
বছরে দুবার ভাসছেন জন্মদিনের শুভেচ্ছায়। আপনার দুই জন্মদিনের রহস্য একটু বলবেন?
আগে বিব্রত বোধ করতাম। এখন আর খারাপ লাগে না। ভালোই লাগে। এক বছরে দুটো জন্মদিন, হাহা...। জন্ম আমার ৭ সেপ্টেম্বর। সার্টিফিকেটে আব্বা দিয়েছিলেন ২৫ জুন। আসলটাই পালন করা হয়, দাফতরিকটা নয়। তারপরও ধন্যবাদ সবাইকে। এটি আমার কাছে আনন্দেরও। দুইবার সবার ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছি। এটা সবার ভাগ্যে কি জুটে? আমি সবসময় সবার ভালোবাসা চাই। সবাই আমাকে এখনো যেরকম ভালোবাসেন, আমার অভিনয় পছন্দ করেন, তা যেন আজীবন চালু থাকে।