একটি স্বচ্ছ, কার্যকর, গতিশীল ও জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ গড়ে তুলতে চায় নির্বাচনী জোট-ফোরাম। সংগঠনটির নেতারা বলছে, পোশাক মালিক-উদ্যোক্তারা সংগঠনটির নেতৃত্ব দিলে, এ খাতের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠাসহ ৯ দফা অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ করবে তারা।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিজিএমইএ নির্বাচনী জোট ফোরাম নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফোরামের প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু। এসময় ফোরাম মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী, প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফয়সাল সামাদসহ প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, জাতীয় অর্থনীতি ও জিডিপিতে বড় অবদান, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশপাশি সবচেয়ে বড় উৎস, কর্মসংস্থান ও নারীর ক্ষমতায়নে খাতটি গুরুত্বপূর্ণ। ৪৫ বছরের বেশি সময়ের যাত্রায়, এখনো টেকসই হয়ে ওঠেনি খাতটি। এখানে, বিজিএমইএর যতটা শক্তিশালী ভূমিকা রাখার কথা সেটি বিগত দিনে হয়নি। উল্টো একটি গোষ্ঠী সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। কিন্তু উদোক্তা, মালিকরা সব সময়, একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ চেয়েছেন।
তিনি বলেন, এবার একটি গ্রহণযোগ্য ভোটার তালিকা পাওয়া গেছে। ফলে, সাধারণ সমস্যরা আশা করছেন, সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফোরামের পক্ষ থেকে আমরা সব সময়, সংগ্রাম করে গেছি, একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ভোটের আয়োজন করতে। আমরা মনে করি এবার মালিকদের আশার প্রতিফলন হবে।
প্যানেল লিডার জানান, ফোরাম থেকে ৩৫ পরিচালক পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ব্যবসা রয়েছে এমন উদ্যোক্তা, তরুণ নেতৃত্ব, দুরদর্শীতা ও অভিজ্ঞতা এসব বিবেচনা করে প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করে, আমাদের প্রার্থীরা পর্ষদে এলে, তাদের হাতে নতুন বিজিএমইএ গড়ে ওঠবে। আমরা দূঢতার সঙ্গে, আগামীর পথে পোশাক খাতকে নিয়ে যেতে চাই।
পোশাক খাতের অগ্রযাত্রা, উন্নয়ন ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা জন্য একটি আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করাসহ আমরা ৯টি কৌশলগত প্রস্তাব উপস্থাপন করেন ফোরাম নেতারা। অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বাড়তি নীতি সহায়তা নিশ্চিত করা, ব্যাংক ও কাস্টমস হয়রানি নিরসন, রুগ্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশেষ নীতি সহায়তা আদায়, অনিয়ন্ত্রিত কারণে রুগ্ন প্রতিষ্ঠানের এক্সিট পলিসি চূড়ান্ত করা।
এসময় ফোরাম প্যানেল লিডার জানান, এবার এমন একটি প্যানেল দেয়া হয়েছ, যারা কেবল পরিচালক হতে পর্ষদে আসতে চান না। শিল্পের জন্য কাজ করবে, কার্ডধারী পরিচালক কিংবা বিজিএমইএ আর দলীয় কার্যালয় হবে না। মালিকদের সমস্যা সমাধানে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেল অঞ্চলভিত্তিক গড়ে তোলা হবে। আর আমরা নেতৃত্ব পেলে, প্রত্যেক পরিচালককে জবাবদিহিতার মধ্যে রাখা হবে। ফোরাম পর্ষদে গেলে ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করবে না বলে জানান তিনি। কিন্তু বিগত দিনে তা হয়েছে।
নেতারা বলেন, বিগত দিনে আমরা দেখেছি, বিজিএমইএ তে গিয়ে অনেক মালিক সহযোগিতা পাননি। উল্টো হয়রানি হয়েছেন এমন অভিযোগ শোনা যায়। তবে, ফোরাম নেতৃত্ব পেলে, সংগঠনটি মালিক, শ্রমিক সবারকে সম্মানের সঙ্গে দেখবে, রাজনৈতিক বিবেচনা এখানে স্থান পাবে না। বিজিএমএইএ হবে, মালিকদের আস্থার নাম। কারণ, সমৃদ্ধ অর্থনীতির স্বার্থে বিজিএমইএ কে নেতৃত্ব দিতে হবে সামনে থেকে।
এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বিগত দিনে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বেশ কিছু উদ্যোক্তা পলাতক আছেন। অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে, তারা কেউ বিজিএমইএ সভাপতি হিসেবে এই পরিস্থিতিতে পারেননি। তারা ব্যক্তিগত কর্মের কারণে এই অবস্থায় আছেন। তবে, আইনে দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে না।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত