পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) প্রথমবার অংশ নিয়ে বিদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অভিষেক হয় বাংলাদেশের লেগ স্পিনার অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেনের। লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলে তিনি নজরকাড়া পারফরম্যান্সও করেন—মোট পাঁচ ম্যাচে নেন নয় উইকেট।
তবে ভারত–পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনা ও সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে পিএসএল হঠাৎই স্থগিত হয়ে যায় গত শুক্রবার। পরদিন শনিবার দুবাই হয়ে দেশে ফেরেন রিশাদ। দুবাইয়ে নামার পরপরই একটি সাক্ষাৎকারে অংশ নেন তিনি। সেখানে পাকিস্তানে অবস্থানকালে নিরাপত্তা পরিস্থিতি, খেলোয়াড়দের মানসিক অবস্থা এবং আতঙ্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সতীর্থ ড্যারিল মিচেল ও টম কারেন সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করে বসেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ক্রিকেট অঙ্গনে বিভ্রান্তি ও বিতর্কের জন্ম দেয়।
পরিস্থিতি অনুধাবন করে রিশাদ পরে সেই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে এবং কারো অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্য তার ছিল না। দেশের ক্রিকেটার হিসেবে ভবিষ্যতে আরও সচেতন থেকে কথা বলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে রিশাদ লিখেছেন, ‘আমি জানতে পেরেছি যে আমার সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে এবং দুর্ভাগ্যবশত সংবাদমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যার ফলে একটি ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। দুবাই বিমানবন্দর অতিক্রমের সময় বাংলাদেশি সাংবাদিকদের দেওয়া একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে আমি এই মন্তব্য করেছিলাম। মন্তব্যটিতে পুরো প্রেক্ষাপট উঠে আসেনি এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে আবেগকে অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরা হয়েছে।’
২২ বছর বয়সী রিশাদ এরপর দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘এর ফলে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি ড্যারিল মিচেল ও টম কারেনের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছি। সতীর্থদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে এবং আমি কালান্দার্সের ভ্রাতৃত্ববোধকে ধারণ করি—যেখানে সবাই যেকোনো পরিস্থিতিতে একে অপরের পাশে থাকি।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ায় শিগগিরই পিএসএল মাঠে ফেরানোর পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিএসএল)। সব ঠিক থাকলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ শুরু হতে পারে। রিশাদ এখন সেই অপেক্ষায় আছেন বলেও জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তান সুপার লিগ আবার শুরু হলে আমি আমার দলে যোগ দেব। এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছি।’
দুবাইয়ে পৌঁছার পর সেখানে বাংলাদেশের একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে রিশাদ বলেছিলেন, ‘বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে স্যাম বিলিংস, ড্যারিল মিচেল, কুশল পেরেরা, ডেভিস ভিসা, টম কারেন...তারা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। মিচেল আমাকে বলেছিল, সে আর কখনো পাকিস্তানে যাবে না। টম কারেন বাচ্চাদের মতো কাঁদছিল। তাকে দুই–তিনজন মিলে সামলাতে হয়েছিল।’
বিডি প্রতিদিন/নাজিম