মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতির সময় থেমে থাকা লঞ্চে দুই তরুণীকে মারধরের ঘটনায় জিহাদ হাসান (২৪) নামে একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গতকাল মুক্তারপুর নৌ পুলিশের এসআই মিলন বিশ্বাস বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেন। এ ঘটনায় পুলিশ আটক জিহাদকে আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত শুনানির দিন ধার্য করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে শনিবার জিহাদ সদর থানায় আত্মসমর্পণ করেন।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, ‘শুক্রবার দুই তরুণীকে মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সে ঘটনায় জিহাদ থানায় এলে তাকে আটক করি। এ ঘটনায় মামলা করার জন্য তরুণীদের ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দিতে বলা হলে তারা থানায় আসেননি। সবশেষে মুক্তারপুর নৌ পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলাটি নৌ পুলিশ তদন্ত করবে।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে একটি লঞ্চ ভাড়া করে চাঁদপুরের মোহনপুর ঘুরতে যান কয়েকজন। ফেরার পথে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে কিছু কিনতে থামেন। সে সময় ওই লঞ্চের কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে মাদকাসক্ত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তারা লঞ্চে তল্লাশি চালালে কয়েকজনকে আপত্তিকর অবস্থায় পান। এ ঘটনায় তারা লঞ্চ ভাঙচুরসহ কয়েকজনকে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং লঞ্চটি ঢাকার দিকে ফিরিয়ে দেন। এ সময় জিহাদ দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে বেল্ট দিয়ে পেটান। পরে এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে যায়।
মারধরের ঘটনায় আটক জিহাদ অনুতপ্ত হয়ে জানান, ভুল বুঝতে পেরে নিজেই থানায় গিয়েছিলেন। তরুণীদের উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচাতে বড় ভাই হিসেবে শাসন করেছিলেন। এ ব্যাপারে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমান উল্লাহ প্রধান শাহীন বলেন, ‘আসামির রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য বিচারক আগামীকাল (আজ সোমবার) শুনানির জন্য ধার্য রেখেছেন।’
আদালতের কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কামরুল ইসলাম মিঞা জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সোমবার (আজ) শুনানি হবে। আদালত আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।