আজ মুক্তি পাচ্ছে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘যাও পাখি বলো তারে’। এই সিনেমায় আদর আজাদের নায়িকা মাহিয়া মাহি। মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘নাকফুল’-এ কাজ করেছেন পূজা চেরির সঙ্গে। একই তালিকায় আছে বুবলীর সঙ্গে ‘লোকাল’। ঢাকাই সিনেমার সম্ভাবনাময় এই তারকার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘যাও পাখি বলো তারে’। দর্শক কেন সিনেমাটি দেখতে হলে যাবে?
অনেক কারণই বলা যায়। লোকেশনে নতুনত্ব, গতানুগতিক গল্পের বাইরে প্রেম, ভালোবাসা, বিরহ, সংঘাতকে অন্যভাবে উপস্থাপন, ডিরেক্টরের মুনশিয়ানা, সুন্দর গান, দৃশ্যায়ন ও অভিনয়শিল্পীদের নিজস্ব অভিনয়- সবকিছু দেখতেই দর্শক হলে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। সিনেমাটি চোখের আরাম দেবে। সিনেমায় এমন এমন সংলাপ রয়েছে, যা দর্শকদের ইমোশনাল করে দেবে। ২ ঘণ্টা ১৮ মিনিট দর্শক শুধুই বিনোদিত হবে। সিনেমায় আমাকে প্রেমিক মজনু আর মাহিকে লাভলী চরিত্রে দেখা যাবে।
মজনু চরিত্রটি নিয়ে কিছু বলুন।
নামেই চরিত্রের সার্থকতা অনেকখানি। সেটি দর্শক পর্দায় দেখবে পাবেন। মাহির প্রেমে পাগল বলা ঠিক হবে না মজনুকে। ভালোবেসে পাগল, তবে দুজনের মধ্যে অনেক ব্যবধান। মাহি এলাকার সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ীর মেয়ে। উদার মনের, দিলখোলা। তার প্রেমে পড়ে মজনু। তবে কেন পড়ে সেটা চমকই থাকুক।
মাহির সঙ্গে প্রথম কাজ করলেন। কেমন লেগেছে?
প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে অনেক সাপোর্ট পেয়েছি। আসলে সহশিল্পীদের সহযোগিতা ছাড়া ভালো কাজ সম্ভব নয়। প্রথম সিনেমার ক্ষেত্রে বুবলীর কাছ থেকেও একই রকম সহযোগিতা পেয়েছি। এক্ষেত্রে আমাকে লাকি বলতে পারেন।
মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
মানিক ভাই সিনেমা জানা মানুষ। তিনি চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবেন অনেক। কাজটিও হয়েছে খেলাধুলার মতো। কোনো প্রেসার ছিল না। এর আগেও তাঁর সঙ্গে ‘স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’ নামে একটি সিনেমা করেছি। সেটি আগে মুক্তি না পেলেও ‘যাও পাখি বলো তারে’ আগে মুক্তি পাচ্ছে। বাকিটা দর্শক দেখবে পর্দায়।
অভিনেতা ও প্রযোজক। স্বাচ্ছন্দ্য কোথায়? ঠিক কী কারণে প্রযোজনায় এলেন?
অভিনেতা হিসেবে ছোট পর্দায় কাজ করেছি। সিনেমার একটা পোকা মাথায় ঢুকে ছিল। সবারই নিজস্ব শিল্পমনের ক্ষুধা থাকে, চরিত্রের ক্ষুধা থাকে। আমারও রয়েছে। সে সব কাজের ক্ষুধা মেটানোর জন্য, নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য এই মাধ্যমে যুক্ত হওয়া। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ক্লিওপেট্রা ফিল্মস’ হুটহাট হয়নি। প্রথমে ছোট ছোট কাজ, নাটক, শর্টফিল্ম নির্মিত হয়েছে। এরপর বাণিজ্যিকভাবে সিনেমা তৈরি ‘যাও পাখি বলো তারে’র মাধ্যমে। চরিত্রের ক্ষুধা, সেই সঙ্গে বাণিজ্যিক সাফল্য সহজভাবে বললে এ কারণেই প্রযোজনায় আসা।
প্রথম সিনেমা চরিত্রের ক্ষুধা ও বাণিজ্যে কতটা সফল?
সৈকত নাসির পরিচালিত তালাশ নিজের প্রথম সিনেমা হিসেবে আমাকে সর্বোচ্চ দিয়েছে। অভিষেকে আমি সন্তুষ্ট। প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যার মধ্যে ‘তালাশ’ হলে মুক্তি পায়। অভিনয় করা থেকে শুরু করে মুক্তির আগে প্রমোশনে অনেক কষ্ট করেছি। তবে ‘তালাশ’ যারা দেখেছেন, ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এটি আমার জন্য বড় পাওয়া। হল, টিভি রাইটস আর সবশেষ বায়োস্কোপের কাছে অ্যাপ রাইট বিক্রির পর ওঠে এসেছে লগ্নিও। তাই আমি খুশি। আসলে আমার জার্নিটা অনেক লম্বা ছিল। তালাশের জন্য নাটক টিভিসি করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পুরো টিম অনেক খেটেছে। আমি চকলেটবয় ইমেজ ভেঙে ফেলে আমার সর্বোচ্চ প্রিপারেশন নিয়েছিলাম। ক্যারিয়ারে প্রথম ছবিতেই দর্শকের ভালোবাসা ও পরিচিতি সত্যিই অপ্রত্যাশিত।
অনেকে বলে আদর আজাদকে দেখতে কেজিএফের যশের মতো...
আমাকেও অনেকেই বলেছে। বিশেষ করে তালাশ মুক্তির পর এই কথাটা বেশি শুনেছি। শুনতে ভালো লাগে, তবে আমি আদর আজাদ হয়েই এগিয়ে যেতে চাই।
নতুন কাজের কী অবস্থা?
আপাতত যাও পাখি বলো তারের প্রমোশন নিয়েই আছি। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে একাধিক বড় ছবি। আমার ইনহাউস একটি কাজ রয়েছে। এটির নাম ‘লোকাল’। বুবলী আমার সহশিল্পী। বেঙ্গল মিডিয়ার প্রযোজনায় আলোক হাসানের ‘নাকফুল’-এর ডাবিং শেষ করেছি। এখানে আমার সহশিল্পী পূজা চেরি। ছবিটি ফেব্রুয়ারিতে মুক্তির কথা রয়েছে। মানিক ভাইয়ের ‘স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’ মার্চে রিলিজ পেতে পারে। অন্যদিকে ইফতেখার চৌধুরী ‘মুক্তি’র আমার অংশের কাজ শেষ করেছি। আরও কয়েকটি ছবির আলাপ চলছে।
সিনেমা নিয়ে নিজস্ব ভাবনা কী?
সিনেমাটা আমার কাছে একটা পাগলামি। এই পাগলামিটাই আমি করে যেতে চাই। এই পাগলামির কারণে ২০১৮ সাল থেকে ছোট পর্দায় কাজ ছেড়ে দিই। এরপর শুধু ফিল্ম নিয়েই পড়েছিলাম। এখন ফিল্ম নিয়েই বসবাস। বিশ্বাস করি, পরিশ্রমের ফল দর্শক এক দিন ঠিকই দেবে।