জনপ্রিয় অভিনেতা, নির্মাতা মীর সাব্বির। প্রায় দুই যুগের অভিনয় ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্র। নিজের নির্মিত অনুদানের সিনেমা ‘রাতজাগা ফুল’-এ গান লিখেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। উপস্থাপক হিসেবেও তাঁর মুনশিয়ানা চোখে পড়েছে সবার। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
কেমন আছেন? আজ বাসায়, নাকি শুটিং স্পটে?
অনেক অনেক ভালো আছি। না, আজ বাসায় আছি। একটু পর বের হব। কাজিনের মেয়ের বিয়ে, তাই একটু ব্যস্ত রয়েছি।
নচিকেতার গান ‘যখন সময় থমকে দাঁড়ায়...’ ক্যাপশন দিয়ে সম্প্রতি কিছু বিষণ্ন মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে দিয়েছেন। কোনো রহস্য আছে?
কোনো রহস্য নেই। এগুলো ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে তোলা ‘রাতজাগা ফুল’-এর শুটিং প্রিপারেশনের সময়কার। তখন আপলোড দেইনি। হঠাৎ নচিকেতার গান শুনছিলাম। তাই মনে হলো এই খোঁচা খোঁচা দাড়ির সঙ্গে নচিকেতার এই গানের কিছু লাইন দিয়ে ফেসবুকে আপ দেই।
‘হারলেও ব্রাজিল, জিতলেও ব্রাজিল’- এই ব্রাজিল দলের সমর্থন কবে থেকে শুরু? সাপোর্ট করার কারণ কী?
ছোটবেলা থেকেই ব্রাজিল দলের সমর্থন করি। যখন থেকে ফুটবল খেলা একটু একটু করে বুঝতে শিখেছি। তখন পেলে, জিকো, সক্রেটিসদের খেলা দেখতাম। আসলে পেলের খেলায় মুগ্ধ হয়েই ব্রাজিল দল করা। তখন পাঠ্যপুস্তকেও পেলেকে পড়েছি। যখন সিক্স-সেভেনে পড়তাম, তখন ম্যারাডোনার খেলাও দেখেছি। আসলে ভালোবাসার তো কোনো কারণ লাগে না। তাই ব্রাজিলকে ভালোবেসেছি কোনো কারণ ছাড়াই।
অন্য প্রসঙ্গে আসি, নতুন কী কাজ করছেন?
বেশ কিছু কাজ চলছে। কিছু টিভিসি নির্মাণ করেছি, আরও কিছু কাজ সামনে রয়েছে। অভিবাসীদের নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি।
এতে অভিনয়ও করেছি। সামনে বিআরটিসির একটি টিভিসিতে অভিনয় করব। আর নাটক নির্মাণ ও অভিনয় তো চলছেই।
ইদানীং বেশ কিছু ধারাবাহিকে কাজ করছেন। একক নাটকে কাজ কি কম করছেন?
আমার নির্মাণে বিটিভিতে ‘বিদেশি ছেলে’ প্রচার হতো। সেটির প্রচার সম্প্রতি শেষ হয়েছে। অন্যদিকে ‘চিটার অ্যান্ড জেন্টলম্যান’-এ অভিনয় করছি। আরও চারটি সিরিয়ালের শুটিং শেষ করেছি। অন-ইয়ারের প্রস্তুতি চলছে। পরিচালক কায়সার আহমেদ, নাহিদ নিয়াজী, বিপ্লব হায়দারের সঙ্গে কাজগুলো করেছি। আর একক নাটকে অভিনয় কমিয়ে দিয়েছি, তা নয়; করছি। অফার আসে। ভালো লাগলে করি, না হলে করি না। সেটা হোক একক কিংবা ধারাবাহিক। এখন তো নানারকম স্বাদের একক নাটক হচ্ছে। যা আমার সঙ্গে যায় না।
ভিউ আর জনপ্রিয়তা নিয়ে আপনার ব্যাখ্যা কেমন?
আমি ভিউ বুঝি না। এটা এখনকার প্রচলিত শব্দ। মানুষ যা ভালোবাসে, তা কীভাবে নির্ধারণ হবে? এখন তো মোবাইলে ভিউ দিয়ে সবকিছু বিচার করে। তা আমার কাছে অবান্তর মনে হয়। এই যে কোটি কোটি মানুষের হৃদয় দখল করল- তা নির্ধারণ করবে কে? যে কর্ম মানুষের হৃদয়ে দীর্ঘদিন থাকে, তা তো চোখে দেখা যায় না।
‘রাতজাগা ফুল’-এর পর নতুন কোনো সিনেমা আসছে?
নতুন সিনেমা তৈরির প্রস্তুতি চলছে। তা নিয়েই মূলত ব্যস্ত ১৫ থেকে ১৮ দিন ধরে। অনুদানের জন্য জমাও দিয়েছি।
দেখা যাক, কী হয়! এরপর ঘোষণা দিতে চাই। আর এটা বলতে চাই, ২০২১ সালে আমার ‘রাতজাগা ফুল’ সিনেমা দিয়েই কিন্তু সিনেমা হল খুলেছিল, দর্শক হলে গিয়েছিল। এরপর তো নানারকম সিনেমার জয়জয়কার। এটাই হওয়া উচিত একটি দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির। এ ধারা সামনেও অব্যাহত থাকুক।
অনুদান কারা পায়? এ নিয়েও তো বিতর্ক রয়েছে...
‘রাতজাগা ফুল’ করেছি। এটি নিয়ে অপব্যবহার কিন্তু দেখিনি। একেবারে সহজ পথে অনুদানের জন্য জমা দিয়েছি। এরপর পেয়েছিও। তবে এটা বলতে পারব না, বিতর্কের কিছু নেই। আসলে ‘যে পায় সে বলে না, যে পায় না সেই বলে’। তবে অনুদানের প্রচুর সিনেমা রয়েছে, যেগুলো ভালো হয়েছে। আসলে ভালো নিয়ে আলাপ একটু কম হয়।
ওটিটিতে কেন কাজ করছেন না?
এখনো ডাকেনি কেউ। ডাকলে করব। তবে হ্যাঁ, মাঝে একটা কাজের অফার এসেছিল। তবে চরিত্র ও গল্প পছন্দ না হওয়ায় করিনি। আমার সঙ্গে যায় না এটি। আমি নিজেও ওটিটির জন্য কিছু কনটেন্ট বানাতে চাই। তবে যে প্রক্রিয়ায় হচ্ছে তা পছন্দ নয়। এ প্রক্রিয়াকে আবার সিন্ডিকেটও বলতে চাই না। সিন্ডিকেট খারাপ কিছু নয়, ভালো। সব সেক্টরেই তো সিন্ডিকেট রয়েছে। এটি যার যার প্রসপেক্টিভ।
সাম্প্রতিক ‘বিতর্কিত মন্তব্য’ নিয়ে পাঠকদের কাছে একটু খোলাসা করবেন?
বিষয়টি নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না। আমি এ নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য আমার পেজ থেকে পরিষ্কারও করেছি এবং সুন্দর ব্যাখ্যাও দিয়েছি। এ বিষয়ে আর কোনো কথা নয়।