শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : অপু বিশ্বাস

সময়ই বলে দেবে কোনটা সত্য আর কোনটা গুঞ্জন

সময়ই বলে দেবে কোনটা সত্য আর কোনটা গুঞ্জন

ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। প্রযোজনায়ও নাম লিখিয়েছেন তিনি। এবার অভিনয় করছেন ওয়েব ফিল্মে।  বড় পর্দার বাইরেও রয়েছে তাঁর একটি আলোচিত ব্যক্তিজীবন। এসব বিষয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ

 

একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করছেন, হঠাৎ এ মাধ্যমে কেন?

শুরুতেই বলব, ওয়েব প্ল্যাটফরম হচ্ছে বর্তমান সময়ের আধুনিক প্রদর্শন ব্যবস্থা। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবাইকে নতুন পথে হাঁটতে হবে। পুরনো ব্যবস্থা নিয়ে পড়ে থাকা মানে নিজেকে পিছিয়ে রাখা। তাই নতুন ও আধুনিক পথে হাঁটতেই ওয়েব ফিল্মে কাজ করছি। তাছাড়া এই ওয়েব ফিল্ম ‘ছায়াছবি’র গল্পে টুইস্ট আছে। সবমিলিয়ে মনে হলো এটি আমার সঙ্গে যায়, তাই স্বাচ্ছন্দ্যে এতে কাজ করছি।

 

আগামীতেও কী ওয়েব ফিল্মে আপনাকে পাওয়া যাবে?

হ্যাঁ, যদি গল্পে টুইস্ট থাকে এবং তা এমন গল্পের হতে হবে যা দেখে দর্শক বলবে, হ্যাঁ এটি অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসের সঙ্গে যায় এবং যথার্থ হয়েছে।

 

নিজের প্রযোজিত ও অভিনীত ‘লালশাড়ি’ ছবিটি এখন কোন পর্যায়ে আছে?

‘লালশাড়ি’র কাজ প্রায় ৮০ ভাগ শেষ করে এনেছি। শুটিং-এডিটিং প্রায় শেষ। এখন ডাবিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী বছরই একটি শুভ ও বিশেষ দিন দেখে ছবিটি মুক্তি দেব।

 

‘লালশাড়ি’ দর্শক কেন দেখবে?

প্রথমেই বলব, এটি বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী বিষয় নিয়ে নির্মিত হচ্ছে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। তাঁতশিল্প ও তাঁতিদের জীবনযাপন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ রয়েছে এই ছবিতে। অন্যদিকে আমাকে দর্শক রোমান্টিক চরিত্রেও দেখতে অভ্যস্ত। তাই প্রেম ও সুস্থ বিনোদনে ভরপুর বলে ছবিটি দর্শক পূর্ণ তৃপ্তি নিয়ে দেখবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

অভিনেত্রী হিসেবে দর্শকগ্রহণযোগ্যতা আগেই পেয়েছেন। এবার নির্মাতা হিসেবে সফলতার প্রত্যাশা কেমন?

দেখুন, দর্শক আমাকে এতদিন শুধু অভিনেত্রী হিসেবেই ভালোবাসায় সিক্ত করেনি, তারা আমাকে একজন সন্তানের মা রূপেও সাদরে গ্রহণ করেছে।মানে আমার প্রিয় দর্শকের কাছে আমি একজন চিরদিনের ভালোবাসার মানুষ। আর এই অর্জন আমার সততা ও দক্ষতার ফসল। তাই এবার প্রযোজক হিসেবেও নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রেখে দর্শকের মনে স্থান গড়ে নিতে পারব বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

 

অভিনেত্রী অপুর ব্যক্তিজীবনে অনেক চড়াই-উৎরাই চলছে। এর মাঝেও দর্শকের কাছে অভিনেত্রী অপু এখনো কতটা প্রিয়?

আমার প্রিয় দর্শকরা এখনো আমাকে আগের মতোই ভালোবাসে। আসলে ভুলভ্রান্তি নিয়েই মানুষের জীবন। আমার জীবনেও নানা টানাপড়েন গেছে। তারপরও দর্শক জানে তাদের অপু কতটা দায়ী বা নির্দোষ। তাই তারা আগের চেয়েও আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। এর প্রমাণ পেলাম সম্প্রতি আমার লালশাড়ি ছবির শুটিং করতে যখন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর গেলাম, সেখানে। অবিশ্বাস্য ছিল দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আমাকে দেখতে ছুটে এসেছে। একটি মেয়ে দুই দিন স্কুলে না গিয়ে আমার জন্য আচার বানিয়ে এনেছে। ফরিদপুর থেকে চার দম্পতি এসেছিল। আমার মা যখন মারা যান তখন থেকেই নাকি তারা আমাকে সান্ত্বনা দিতে, দেখতে চেয়েছিলেন। তাই তারা এবার সুযোগ পেয়ে আমার প্রিয় খাবার ইলিশ মাছ ও খিচুড়ি নিয়ে এসেছেন। তারা নাকি আমার নামে কোরবানি দেন, আমার জন্য নামাজ-রোজা করে দোয়া করেন বলেও জানিয়েছেন। তারা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন আমরাই তোমার বাবা-মা। আমার প্রতি আজও দর্শকের এই ভালোবাসা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার হয়ে থাকবে। সাধারণ পুরস্কারের ওপর একসময় সময়ের ধুলা জমে। কিন্তু মানুষের ভালোবাসার এই পুরস্কার সব সময় ধুলাবিহীন জ্বলজ্বলে হয়ে থাকবে। আমার দর্শকদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।

 

দেশীয় চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন দেখছেন?

দেশীয় চলচ্চিত্রে গত কয়েক বছর ধরে যে খরা চলছিল তার অবসান হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমার অভিনীত দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু’ ছবিটি দিয়ে। এরপরই দেশীয় ছবির সুদিন আবার শুরু হয়।  সেই ক্ষেত্রে আমাদের ছবিটিকে বলব শুভ সূচনাকারী একটি লক্ষ্মী ছবি।

 

এবার ব্যক্তিগত বিষয়ে আসি। সম্প্রতি নায়িকা বুবলী বলেছেন শাকিবের সঙ্গে আপনার বিয়ের খবর তিনি জানতেন না, এ বিষয়ে কী বলবেন-

দেখুন, মানুষের জীবনে ব্যক্তিত্ব হচ্ছে বড় সম্পদ। যার কোনো ব্যক্তিত্বই নেই তার কোনো কথার জবাব দেওয়া মানে তার কাছ থেকে আরও বড় আক্রমণের শিকার হওয়া। তাই তার কথার কোনো জবাব দেওয়ার রুচি আমার নেই। সব সময় ব্যক্তিত্ব রক্ষার শিক্ষা আমি আমার পরিবার থেকে পেয়েছি। তাই ব্যক্তিত্বহীন কারও কথার জবাব দিয়ে নিজের ব্যক্তিত্বহানি করতে চাই না।

 

শাকিব খানের সঙ্গে ফের গাঁটছড়া বাঁধতে যাচ্ছেন এমন গুঞ্জন এখন চাউর, কী বলবেন?

দেখুন, বিষয়টি আমার একান্তই ব্যক্তিগত। তাই সব ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে সব জায়গায় মুখ খোলা যায় না। এ বিষয় নিয়ে এখনই কোনো কথা বলতে চাই না।  সময়ই বলে দেবে কোনটা সত্য আর কোনটা গুঞ্জন।

 

তাহলে বলা যায় যে, যা রটে তার কিছু বটে?

না, এমনটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়টি নিয়ে আর কোনো কথা না  এগোলেই ভালো হয়।

সর্বশেষ খবর