বাংলাদেশের সিনেমায় ববিতা একটি উজ্জ্বল তারকার নাম। অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের সিনেমায় অভিনয় করে আন্তর্জাতিক অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি পান ববিতা। এক সাক্ষাৎকারে ববিতা বলেন, ‘তখন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়াতে থাকি। দুই কি তিনটি সিনেমা করেছি। হঠাৎ আমাদের বাসার ঠিকানায় আমার নামে একটি চিঠি এলো। চিঠির বিষয় ছিল- সত্যজিৎ রায়ের মতো বিখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে ছবির ব্যাপারে দেখা করতে যেতে হবে ভারতে। চিঠি পড়ে হাসতে হাসতে চেয়ার থেকে প্রায় পড়েই গিয়েছিলাম। বিশ্বাসই হচ্ছিল না। কিছুদিন পর বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাস থেকে বাসায় ফোন করে আবারও বলা হয়- সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে। তখন আমরা সবাই সিরিয়াস হলাম। ভাবলাম, ওটা মজা ছিল না, সত্যি ছিল। তখন আমার বয়স ১৬ বছর। তারপর সুচন্দা আপাকে নিয়ে কলকাতায় যাই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা করতে। মনে পড়ে, একসময় স্ক্রিপ্ট হাতে পাই। তারপর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়া হয়। সাধারণ একটি শাড়ি পরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই। সত্যজিৎ রায় বলেন, ‘মেয়েটি তো দারুণ ফটোজেনিক’! তার হাত ধরে জয়া ভাদুড়ী, শর্মিলা ঠাকুর সিনেমায় আসেন। আমারও যাত্রা শুরু হলো তার ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় কাজ করার মাধ্যমে। অভিনয়জীবনে বহু দেশ থেকে নিমন্ত্রণ পেয়েছি বড় বড় ফেস্টিভ্যালে যাওয়ার জন্য। মনে আছে, শুধু সোভিয়েত ইউনিয়নে আট থেকে দশবার নিমন্ত্রণ পেয়েছিলাম এবং সেখানে গিয়েছিলাম শিল্পী হিসেবে। সেখানকার অনেক স্মৃতি রয়েছে। সেখানে গিয়ে একবার ভাত খেতে না পারার জন্য মন খারাপ করে ছিলাম। তারপর সেখানকার বাংলাদেশি ছাত্ররা আমাকে নিমন্ত্রণ করে ভাত খেতে দেয়। কী যে শান্তি পেয়েছিলাম তখন। রাশিয়াতে একবার ট্যাক্সি করে ঘুরছি। ড্রাইভার আনন্দে চিৎকার করে বলেন, ‘ববিতা, ববিতা’। আমি তো অবাক। ড্রাইভার আমাকে চিনলেন কেমন করে। পরে জেনেছি বিমানবন্দরে কয়েকটি বিলবোর্ডে আমার ছবি ছিল। আমার কয়েকটি ছবি রাশিয়াতে ওদের ভাষায় ডাবিং করে সেই সময় দেখানো হয়েছে। এ জন্য ড্রাইভার আমাকে চিনতে পেরেছিলেন। আমি তো সামাজিক, বাণিজ্যিক সব ধরনের সিনেমা করতাম। শুটিং করার সূত্রে কয়েক মাসের জন্য বেরিয়ে যেতাম। কত সুখের স্মৃতি রয়েছে আউটডোরে শুটিংয়ের। নায়করাজ রাজ্জাকের পরিচালনায় ‘অনন্ত প্রেম’ সিনেমার শুটিং করেছিলাম কাপ্তাইয়ের দিকে একটি জঙ্গলের ভিতরে এবং পাহাড়ে। শেষ দৃশ্যটি ছিল আমি ও রাজ্জাক কাছাকাছি আসি। ভীষণ রোমান্টিক দৃশ্য ছিল সেটি। একই সঙ্গে খুব ইমোশনাল দৃশ্যও ছিল। তারপর আমরা মারা যাই। শুটিং শেষ করে ফিরে আসব, তখন আমি কান্না শুরু করি। রাজ্জাক ভাই আমাকে সান্ত্বনা দিতে থাকেন। এ ঘটনাটিও খুব মনে পড়ে। এরপর কাপ্তাইয়ের সেই জায়গাটিতে গিয়েছিলাম বেড়াতে। যাওয়ার পর আমি তো রীতিমতো মুগ্ধ এবং অবাক হয়ে যাই। ওখানে গিয়ে জানতে পারি, যে পাহাড়ে শুটিং করেছিলাম সেই পাহাড়টির নাম হয়ে গেছে ‘ববিতা পাহাড়’! আমি শুটিং করেছিলাম বলে একটি পাহাড়ের নাম আমার নামে হয়ে গেছে, এটি আমাকে কী যে আনন্দ দিয়েছিল তা বলে বোঝাতে পারব না। পেছনে ফিরে তাকালে অভিনয়জীবনের এ রকম শত শত গল্প আজও মনে পড়ে। স্বর্ণালি দিনের সিনেমায় কী সুন্দর দিন-ই না কাটিয়েছি!
শিরোনাম
- নিজের ব্যাটারি নিজেই বদলাতে পারে চীনা রোবট
- স্কটল্যান্ডে শুরু স্পাইডারম্যানের নতুন সিনেমার শুটিং
- রাজশাহীতে ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা আসিফ
- মহাকাশ স্টেশন থেকে পৃথিবীতে যাত্রা শুরু পাঁচ নভোচারীর
- ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে পরীক্ষায় পাস করলো শুধু লিডসের পিচ
- কত ফলোয়ারে মিলবে ইনস্টাগ্রামে লাইভ করার অনুমতি?
- চুপ থাকা কেন জরুরি?
- হোয়াইট হাউসে আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের শান্তি চুক্তি
- গোসাইরহাটে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
- নবীনগরে কৃষকদলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন
- ইসরায়েলি বিমানবন্দরসহ তিন স্থাপনায় হুথির ড্রোন হামলা
- পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক
- পৃথিবীতে ফেরার পাঁচ মাসের মধ্যে নাসা ছাড়লেন মহাকাশচারী
- ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ফেরত পেয়েছেন হজযাত্রীরা
- মাদকচক্র ভাঙতে সহায়তা করলো কথা বলা তোতা পাখি
- যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ও বিমান কেনা আপাতত বন্ধ করল ভারত, দাবি রিপোর্টে
- স্মার্টফোন দীর্ঘদিন ভালো রাখতে যা করবেন
- পেয়ারা পাতায় লুকিয়ে আছে অনেক ঔষধি গুনাগুন
- এক ম্যাচ নিষিদ্ধ ফ্লিক, সঙ্গে জরিমানা ২০ হাজার ইউরো
- নিজেকে খুঁজে ফেরার গল্পে ‘ঘোমটা’