চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা এবং এফডিসির আধুনিকায়নে সরকার অর্থ বরাদ্দ করেছে প্রায় দু বছর আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এগুলোর কোনোটিই আলোর মুখ দেখেনি বা চলচ্চিত্রকাররা এসব সুযোগ সুবিধা পায়নি। তাই কিভাবে বদলে যেতে পারে এফডিসি। এ বিষয়ে তরুণ চলচ্চিত্রকারদের পরামর্শ তুলে ধরেছেন আলাউদ্দীন মাজিদ
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
আমাদের চলচ্চিত্রকে বদলাতে সরকারের জরুরী উদ্যোগ প্রয়োজন। যদিও চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু এতে শুধু সিনেমা হলেরই কর মওকুফ করা হয়েছে। একে আমি সাধুবাদ জানাই। কারন সিনেমা হল বেচেঁ থাকলেই চলচ্চিত্র বাচঁবে। কিন্তু এর পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজকদেরও বাচাঁতে হবে। কারন সিনেমা বানাবে প্রযোজকরা। তাই প্রযোজক না বাচঁলে চলচ্চিত্র শিল্প বলেতো কিছুই থাকবেনা। কর প্রদান থেকে হল মালিকরা রেহাই পেয়েছে কিন্তু প্রযোজকদের কর রেয়াত দেওয়ার কথা কি সরকার কখনও ভেবেছে। কারন প্রযোজকরাইতো সিনেমাকে বাচিঁয়ে রাখবে। দ্বিতীয় কথা হল পৃথিবীর যে কোনো দেশেই ছবি রিলিজ হলে টিকেটের মূল্য থেকে প্রযোজক ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ টাকা পায়। আর আমাদের দেশে ছবির বড় বাজার হচ্ছে ঢাকা। এখানে টিকেটের দামও বেশি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি ঢাকার বড় হল গুলোতে তিনশত টাকার টিকেট থেকে প্রযোজক পায় মাত্র ৪৬ টাকা। যা শতকরা ১৫ ভাগের মতো। এই অন্যায্য বন্টন নীতি সরকার যদি পরিবর্তন না করে তাহলে সিনেমা বাচাঁনো কঠিন হবে। তাছাড়া দেশের সত্যিকারের দর্শক সংখ্যা নিরূপন করা জরুরী। এ ক্ষেত্রে সরকার প্রযোজকদের জন্য চীনের ফমর্ূলা প্রয়োগ করতে পারে। আমার কথা পরিস্কার, হল মালিকদের বাচাঁতে হবে। কর রেয়াতের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা তাদের দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রযোজকদের বাচাঁতে হবে। এই দুই দল বাচঁলে আমাদের সিনেমা বাচঁবে। তৃতীয়ত সেন্সর বোর্ডকে উদার ও যুগ উপযোগি হতে হবে। সেন্সরের পরিবর্তে গ্রেডেশন প্রথা চালু করতে হবে। নির্মাতাদের স্বাধীনতা না দিলে এদেশের চলচ্চিত্রে বৈচিত্র্য আসবেনা। চতুর্থত এফডিসিতে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি স্থাপন করা জরুরী। পাশাপাশি সিনেমা হলে আধুনিক প্রজেকশন মেশিন না বসালে সবই মাঠে মারা যাবে। সরকারের কাছে অনুরোধ নূন্যতম টুকে প্রজেকশন মেশিন বসানোর জন্য হল মালিক ভাইদের বিনা সুদে যেন ঋণ দেওয়া হয়। উল্লেখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারলেই আমাদের চলচ্চিত্র এবং এফডিসি অচিরেই বদলে যাবে।
স্বপন আহমেদ
এফডিসি বদলে যেতে পারে যদি আমাদের কনসেপ্ট বদলায়। হলিউড- বলিউডের ক্যামেরা এবং টেকনোলোজি আমাদের দেশেই আছে। সমস্যা হলো কনসেপ্টের অভাব। আমরা পুরাতন ধ্যান- ধারনা থেকে বের হতে পারছিনা। এ কারনে আমাদের দর্শক হলিউড-বলিউডের ছবি দেখে এদেশের ছবি যে একঘেঁেয়, পুরাতন এবং নকল এগুলো বুঝে ফেলছে। তাই এদেশের ছবির প্রতি তাদের আগ্রহও কমছে। যদি আমরা প্রত্যেকে নতুন কিছু ভাবি, নতুন কনসেপ্ট নিয়ে সিনেমা বানাই তাহলে এফডিসি বদলে যাবে। শুধু টেকনোলজি আমদানী করে এই শিল্পের পরিবর্তন করা যাবেনা, প্রয়োজন কনসেপ্টেরও পরিবর্তন করা।
রেদোয়ান রনি
যে কোনো দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থাই সিনেমাকে সাপোর্ট দেয়। কিন্তু আমাদের এফডিসি থেকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট পাইনা বলেই নির্মাণ কাজে বিদেশ যেতে হয়। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রারও অপচয় হচ্ছে। এফডিসিতে আধুনিক টেকনিক্যাল সাপোর্টের পাশাপাশি এমন পরিবেশ গড়ে তোলা দরকার যাতে বিদেশী চলচ্চিত্রকাররা এখানে আসতে পারে এবং তাদের সঙ্গে ভালো পরিবেশে বসে উন্নত চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে আলাপ আলোচনা শেয়ার করা যায়। এজন্য এফডিসিতে ফিল্ম লাইব্রেরী, ক্লাব, ক্যফেটরিয়ার এবং স্ক্রিনিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরী। মানে সার্বিকভাবে পরিবেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে বিদেশ যাওয়া থেকে শুরু করে নির্মাণ কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে চরম দুভর্োগ পোহাতে হয়। মান সম্মত সিনেমা নির্মাণে এই জটিলতার অবসান হওয়া জরুরী।
দেবাশীষ বিশ্বাস
চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করা হলেও শিল্পের কোনো সুবিধা এখনো পায়নি আমাদের চলচ্চিত্র। পার্শ্ববতী কলকাতার কথাই যদি ধরি সেখানে নির্মাতারা ব্যাংক লোন পাচ্ছে। তাই স্বাচ্ছন্দ্যে তারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারছে। একবার বলা হয়েছিলো ৬০ লাখ টাকা করে চলচ্চিত্র নির্মাণে লোন দেওয়া হবে। কিন্ত এ সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিনেও বাস্তবায়ন হয়নি। এটি হলে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের আমূল পরিবর্তন ঘটতো। বর্তমানে ডিজিটাল চলচ্চিত্র নির্মাণ হলেও তা পুরোপুরি এ প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে না। কারণ এফডিসিতে এ কাজের সাপোর্টের অভাব। এফডিসিতে শুধু টেকনোলোজির পরিবর্তন করলেই চলবে না। দক্ষ টেকনিশিয়ানও আনতে হবে, আধুনিক ক্যামেরা আনতে হবে, ফ্লোর ভাড়া কমাতে হবে, বিভিন্ন কাজের জন্য পৃথক পৃথক অযৌক্তিক চার্জ কমাতে বা বাতিল করতে হবে, শুটিং ফ্লোরসহ পুরো এফডিসি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, বহিরাগতদের প্রবেশের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। নাহলে এখানে কাজ করা যাবে না। আর এফডিসিতে চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ করতে না পারলে মনেই হবে না চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি। ফলে চলচ্চিত্র শিল্পও ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ এফডিসি হচ্ছে চলচ্চিত্র নির্মাণের সূতিকাগার।
শিরোনাম
- জেরুজালেমে বন্দুকধারীর গুলিতে হতাহত ১৭
- ফিলিস্তিনি বন্দিদের পর্যাপ্ত খাবারও দিচ্ছে না ইসরায়েল: সুপ্রিম কোর্ট
- নেত্রকোনায় আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে আলোচনা সভা
- নেপালে ‘জেন-জি’ বিক্ষোভে ভয়াবহ সংঘর্ষ, নিহত ১৪
- ‘দীপ্যমান নক্ষত্র সম্মাননা ২০২৫’ পেলেন যারা
- প্রথমবারের মতো বিশ্ব রেডিওথেরাপি সচেতনতা দিবস উদযাপন
- ডাকসু নির্বাচনে বন্ধ থাকছে ঢাবি মেট্রোরেল স্টেশন
- স্পেনে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
- ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশে বেকার থাকবে না’
- সিলেটে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে নারী-পুরুষ গ্রেফতার
- সিলেট উইমেন চেম্বারের সভাপতি শম্পা, পরিচালক সামা
- মিয়ানমারে সিলিকন ভ্যালির আদলে কুখ্যাত ক্রাইম সিটি!
- সিলেটে সীমান্তে সোয়া কোটি টাকার চোরাচালান জব্দ
- ডাকসু নির্বাচনে নিরাপত্তার স্বার্থে শেখ মুজিবুর হলের পকেট গেইট বন্ধ
- সুনামগঞ্জে জমিয়ত নেতা খুনের আসামি সিলেট থেকে গ্রেফতার
- বুড়িচংয়ে গ্রামভিত্তিক মৌলিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধন
- সুবর্ণচরে মেঘনার ভাঙন আতঙ্কে লক্ষাধিক পরিবার, মানববন্ধন
- র্যাব দেখে নদীতে ঝাঁপ, মাদক ব্যবসায়ীর মৃত্যু
- নবীনগরে জমজমাট ধানের চারার হাট
- ফটিকছড়িতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের কর্মবিরতি, দুর্ভোগ চরমে
যেভাবে বদলে যাবে আমাদের চলচ্চিত্র
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর