দর্শক দীর্ঘদিন তাদের প্রিয় অভিনেত্রী পপির অভিনয় দেখা থেকে বঞ্চিত, এই প্রশ্নের উত্তরে কী বলবেন?
কষ্টটা কিন্তু আমারও। এখন চলচ্চিত্র বা নাটক সব ক্ষেত্রে বাজেট আর গল্পের বড় আকাল। প্রযোজক বিজনেস করতে আসেন ঠিক, কিন্তু তার প্রপার ইনভেস্ট করতে জানেন না, ফলে ফিডব্যাক পান না। পরিচালক কন্ট্রাক্ট ব্যসিসে কাজ করেন, শিল্পীর অভাব নেই। নতুন মুখের ছড়াছড়ি। তাদের মধ্যে আগ্রহ থাকলেও ধৈর্য নেই। অল্প পরিশ্রমে তারকা হতে চান। ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মানহীন চলচ্চিত্র ও নাটকের কারণে মিডিয়ার সম্মান নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় কাজ করব কীভাবে।
ধরে নিন মিডিয়াতে মনের মতো কাজ পাচ্ছেন না, এ জগৎ ত্যাগ করলেন, এর পর পপিকে কীভাবে পাওয়া যাবে?
মিডিয়া ছেড়ে দেব এমন কথা ভুলেও ভাবি না। এখানে এখনো আমার প্রচুর ভালো কাজ করার বাকি আছে। সুযোগের অপেক্ষায় আছি। 'কোনো একদিন ভালো কাজের দেখা পাবই' এই লোভ আর বিশ্বাস সব সময় আমার মধ্যে কাজ করে। আমি চাই নিজেকে ভেঙেচুরে বার বার নতুন করে গড়তে। দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দিতে। কারণ দর্শকের ভালোবাসায় আজ আমি অভিনেত্রী পপি হয়েছি। তাদের কখনো বিমুখ করতে চাই না। মিডিয়ায় কাজের পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজ করে যেতে চাই। 'মানুষ মানুষেরই জন্য'- এই কথাটা আমার প্রাণের মাঝে সারাক্ষণ বাজে।
স্বাপ্নিক দৈহিক সৌন্দর্য এবং অভিনয় গুণ সবই আছে আপনার মধ্যে, মিডিয়ায় এর মূল্যায়ন কতটা পেয়েছেন?
দুঃখটা আমারও। মানসম্মত কাজ করে গেছি অবলীলায়। সেই অনুপাতে মূল্যায়ন পাইনি। যদিও রাষ্ট্র আমাকে একাধিকবার সম্মান দিয়েছে আর দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি কিন্তু বরাবরই মিডিয়ায় নোংরা পলিটিক্সে শিকার হয়েছি। বিদেশে কাজের সুযোগ পেয়েও এই পলিটিক্সে কারণে যেতে পারিনি। যদিও আমার বিদেশ প্রীতি নেই, তারপরও বিদেশে কাজ করতে পারলে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনার চেষ্টা করতাম। দুঃখ, সেই সুযোগ পেলাম না।
বিদেশে কাজের ব্যাপারে জানতে চাই-
প্রখ্যাত বলিউড নির্মাতা মহেশ ভাট, পার্থ ঘোষ আর টালিগঞ্জের অপর্ণা সেন একাধিকবার আমাকে কাজের প্রস্তাব দেন। মহেশ ভাট বলেছিলেন 'তুমি আস, ৬ মাস কোর্স কর। তোমাকে আমার ছবিতে প্রমোট করব'। অপর্ণা সেন যখন প্রস্তাব দিলেন তখন এখানে আমি যে নির্মাতার ছবিতে কাজ করছিলাম তিনি কোনোভাবেই আমাকে যেতে দিলেন না। অথচ শিডিউল মেনটেইন করে দুটো ছবিতেই কাজ করতে পারতাম। আমি যাতে ভারতের ছবিতে কাজ করতে যেতে না পারি সে জন্য এফডিসিতে অনেকে মিটিং পর্যন্ত করেন। এসব কষ্ট কখনো ভুলতে পারব না।
এবার হালকা বিষয়ে আসি, বাঙালির প্রিয় ষড়ঋতুর মধ্যে পপির পছন্দ কোনটি?
এক কথায় বর্ষাকাল। বৃষ্টির শব্দ আমার মনে নূপুরের ধ্বনি হয়ে বাজে। পানি আমাকে বড় কাছে টানে। খুলনার বাড়িতে তিনটি পুকুর ছিল। ছোটবেলায় এক পুকুর থেকে অন্য পুকুরে ঝাঁপ দিতাম, মাছ ধরতাম। বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। জ্বর আর মা-বাবার বকার ভয়কে তুচ্ছ করে পুকুরে সাঁতরে বেড়াতাম। ডুব দিয়ে অনেক সময় থাকতে পারতাম। এ কারণে স্কুলে সুইমিং চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এ ছাড়া শেষ বিকেল আর নতুন ভোর আমার খুব প্রিয়। এ সময়গুলোতে আনমনে স্বপ্নের ভেলায় ভেসে বেড়াই... উফ কী যে রোমান্টিক ব্যাপার, বলে বোঝাতে পারব না।
আলাউদ্দীন মাজিদ