জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসনসহ ন্যায্য দাবিগুলোর যৌক্তিকতা যাচাই করে দেখবে শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়, পাশাপাশি যুক্ত থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকেও জুলাই গণ-আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা রাখা জবি শিক্ষার্থীদের দাবির একটি স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বিষয়টি তিনি নিজেই বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
তিনি জানান, গত পরশু রাতে জবির শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিসংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগ করলে গতকাল রাত ৯টায় নিজের বাসায় আলোচনার আমন্ত্রণ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা সকালেই আন্দোলনে অংশ নিয়ে যমুনা টেলিভিশনের সামনে জড়ো হন। তিনি বলেন, “দুপুর থেকে ভিসি স্যারের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। রাতে এক ঘণ্টার প্রস্তুতি শেষে আমরা তিনটি আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করে কাকরাইল মোড়ে যাই।”
ঘটনাস্থলে শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সেখানে গিয়ে আমি যখন বক্তব্য শুরু করি, তখনই এক শিক্ষার্থী বোতল নিক্ষেপ করেন। এই আচরণ ইচ্ছাকৃত অন্তর্ঘাত কি না, তা প্রশাসন তদন্ত করে দেখবে বলে আমি আশা করছি।”
ঘটনার পর হতাশ হয়ে ফিরে আসেন এবং সহকর্মীদের সামনে নিজের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি দলের নিয়মিত আক্রমণ ও হত্যার হুমকির কারণে আমরা পূর্বধারণা করেছিলাম—এটি সেই দলের পক্ষ থেকে করা হতে পারে।”
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “আক্রমণের ফলে আন্দোলনের ন্যায্যতা বিতর্কিত হয়েছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি চেয়েছিলাম জবির শিক্ষার্থীদের আবাসনের দাবির দ্রুত সমাধান হোক।”
তিনি আরও বলেন, “পরবর্তীতে আমি ৫০ মিটার দূরে একটি সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা, দাবিপূরণের রোডম্যাপ ও পুলিশি হামলার বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস প্রদান করি।”
জবির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি লেখেন, “আশা করি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা যৌথভাবে একটি ফলপ্রসূ সমাধানে পৌঁছাবে।”
জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম বলেন, “জুলাই আমাদের মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের আত্মিক বন্ধন তৈরি করেছে। জবি থেকে তখন দুইজন শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন অনেকে।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে লিখেছেন, “আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনেই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আমি পাশে থাকব। আমি ডিএমপি কমিশনারকে বলেছিলাম, জোরপূর্বক যেন শিক্ষার্থীদের সরানো না হয় বা কোনো আক্রমণ না চালানো হয়।”
পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, “ভুল হলে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। সবার সুমতি হোক।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক