বর্তমান প্রযুক্তির সহজসভ্যতার যুগে লুকিয়ে পর্নো ছবি দেখেন না, এমন মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে কমই হবে বলা যায়। তাছাড়া নীলছবি তো কোনো বয়সের ধার ধারে না। মোহময়ীদের ছবি একটু হলেও নিষিদ্ধ পথে পা বাড়াতে উস্কে দেয় অনেকসময়। তাদের রূপ-যৌবন-ক্রিয়াকর্ম যেন সর্বক্ষণ তাদের দিকে টানতে থাকে। তবে নীলছবির নায়িকাদের বাইরে থেকে যেরকম মনে হয়, ভেতর থেকে দেখতে ছবিটা কিন্তু একেবারেই সেরকম নয়। তাদের লাইফস্টাইল দেখলে বদলে যাবে আপনার চিন্তাধারা। এমনটাই বলছে, ভারতের কলকাতা টোয়েন্টি ফোর ডট কম। চলুন জেনে নেওয়া যাক নীল ছবির নায়ক-নায়িকাদের তেমনই কিছু কষ্টের কথা।
১) কোটি কোটি মানুষের যৌনাকাঙ্ক্ষায় সাময়িক আনন্দ দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত এই নীল দুনিয়ার তারকারা। নীল ছবির চাহিদাই এই ছবির নায়ক নায়িকাদের বাধ্য করে আরও বেশি করে এই কাজ করতে। কিন্তু যে কাজটি একেবারেই ব্যক্তিগত একটি বিষয়, প্রতিমুহূর্তে লজ্জাকে জয় করে, দিনে বারবার বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে সেই কাজটিই করে যদি বিশ্ববাসীকে আনন্দ দিতে হয়, তার থেকে কষ্টের কি আর কিছু হতে পারে?
২) শুধু নারীই নয়, পুরুষের ক্ষেত্রেও এটি খুবই কষ্টসাধ্য কাজ। শট ওকে না হওয়া পর্যন্ত তাকেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা একঘর লোকের সামনে সর্বশক্তিটুকু দিয়ে তৈরি করতে হয় একটি উত্তেজনাপূর্ণ ভিডিও।
৩) যেভাবে ছবিতে কোন আইটেম নম্বরের শুটের আগে নিজেকে স্লিম অ্যান্ড ট্রিম দেখানোর জন্য অনেকসময় নায়ক-নায়িকারা খাবার খান না, তেমনই নীলছবির নায়িকারাও কিন্তু শুট হওয়ার আগে থেকে শুরু করে শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রায় কিছুই খান না। এমন ক্রিয়াকলাপের জন্য খালি পেট না থাকলে, শুটিংয়ের সময় শারীরিক দিক থেকেও সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলেই এমনটা করে থাকেন তারা।
৪) পর্নো ছবির শুটিং চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এক দিনে অনেক সময়ই একের পর এক ভিডিও শুট করা হয়ে থাকে। তাই পর্নোস্টারদের ফ্রেশ দেখানোর জন্য চলে ওষুধ খাওয়ানোর পর্বও।
৫) ছবিতে কাজ করার আগে যেমন অডিশন দিতে হয়, তেমন পর্নোফিল্মে কাজ করার সুযোগ আসে অডিশন দিয়ে, তাতে সফল হলে, তবেই অভিনয়ের সুযোগ। আর সেই পর্ব বোধ হয় সবথেকে কঠিন। সঙ্গে পর্নো ছবিতে কাজসংক্রান্ত আপনার অভিজ্ঞতা স্বরূপ একটি সিডি।
৬) এই পেশায় জীবনের ঝুঁকি সর্বক্ষণ আপনাকে তাড়া করে বেড়াবে। মরণব্যাধী এইডস যখন তখন আপনাকে কব্জা করতে পারে। এমন ঘটনা যে ঘটেনি তা নয়, তবে এই পেশার ক্ষেত্রে মন সব ঘটনা সামনে এলে তাতে প্রভাব পড়বে, তাই এই সব রোগীদের কথা চেপে দেওয়া হয় গোড়াতেই। আর যদি একেবারে প্রাথমিক স্টেজে ধরা পড়ে এই রোগের কথা, তাহলে চিকিৎসার মাধ্যমে অনেকটাই সুস্থ করে তোলা হয় এদের।
৭) অফিসে কাজ করতে করতে সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা ঘুরতে যাওয়ার ছুটি নেন না, এরকম বোধ হয় কেউই নেই। কিন্তু জানেন কি, এই পর্নোস্টারদের ছুটি পাওয়া বেশ দুষ্কর। শরীর অসুস্থ হোক বা মনমেজাজ বিগড়ে থাকুক, ছবির শুট করতেই হয়। কখনও কখনও টানা সাত দিন পর্যন্ত চলে এই অকথ্য শুটিং পর্ব।
তবুও টাকার প্রয়োজনে, অথবা বাধ্য হয়ে, কিংবা নিছকই কৌতুহলের বশে যারা এই পেশায় ঢুকে পড়েছেন, তারাই জানেন এর পেছনে কতটা কষ্ট লুকিয়ে রয়েছে। অথচ যারা পর্নোফিল্ম দেখেন, তারা একবারের জন্যও টের পান না, তাদের চাহিদাই কতটা চাপে ফেলছে এই নীল দুনিয়ার তারকাদের।
বিডি-প্রতিদিন/৩০ অক্টোবর, ২০১৬/আলম-১২