২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:০৮

আসলে সিগারেট ফোকার জন্য বিষয়টা বলা না

কাজী ওয়াজেদ আলী

আসলে সিগারেট ফোকার জন্য বিষয়টা বলা না

কাজী ওয়াজেদ আলী

বাসার পাশের স্কুলে এসএসসি পরীক্ষা চলছে। বাসা থেকে বের হতেই দেখলাম অভিভাবকরা খুব উদ্বিগ্ন অবস্থায় বাচ্চাদের নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হলো দোয়া দরুদও পড়ছে। একটু সামনে গিয়ে বিপরীত চিত্রও লক্ষ্য করলাম। তিনটি ছেলে কোন এক স্কুলের ড্রেস পরে একটু আড়ালে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুকছে। হাতে স্বচ্ছ ফাইলে প্রবেশপত্র দেখা যাচ্ছে। বোঝা গেল ওরাও কিছুক্ষণের মধ্যে পরীক্ষার হলে ঢুকবে। 

আসলে সিগারেট ফোকার জন্য বিষয়টা বলা না। এই বয়সের ছেলেদের মধ্যে একটু হিরোইজন ভাব থাকে। হয়তো জীবনের একটা পর্যায়ে তাদের জন্য এটা বড় একটা গল্পের খোরাক হবে যে, এসএসসি পরীক্ষার হলে ঢোকার আগেও তারা সিগারেট ফুকেছিল। আর সেই ভাবনা থেকেই হয়তো তারা সেটা করছে। অমন বয়সে বাবার প্যাকেট থেকে সিগারেট চুরি করে বা টাকা চুরি করে সিগারেট কিনে একটু চেখে দেখেনি এমন জন হয়ত খুব কমই আছে। কিন্তু বিষয়টা হলো, জীবনের প্রথম সবচেয়ে বড় পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে সিগারেট ফোকাটাকেই তাঁরা আদর্শ মনে করছে কিনা! যদি ওদের এই বিষয়টা শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ না থেকে অন্য কিছু ঘটে? শঙ্কাটা সেখানেই। ওরা যদি নিজেদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে একটু আপডেট ভার্সনে চলে যায় তাহলে তো সর্বনাশ! কোমলমতি এই ছেলেগুলো যদি সিগারেট থেকে মাদকের নেশার জগতে চলে যায়! 

থানায় যখন কাজ করতাম তখন দেখেছি অনেক অভিভাবক থানায় গিয়ে তার মাদকাসক্ত সন্তানকে জেলে পুরে রাখা বা সেভ কাস্টডিতে রাখার জন্য অনেক কাকুতি মিনতি করেন। নেশার টাকার জন্য তার ছেলে তাদেরকে মারধর করে, বাইরে চুরি-ছিনতাই করে বলে জানান। ভিতরে পুরে না রাখলে যেকোন সময় তাদের মেরে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করেন। বাবা-মায়ের সেই ভয়াবহ কথাবার্তাগুলো সব সময় চোখের সামনে ভাসে।

যে ছেলেগুলোকে এভাবে দেখলাম নিশ্চয়ই তাদের বাবা-মা আছে। তারা কতটুকু সচেতন আমি জানিনা। তবে একটু নিয়ন্ত্রণে না রাখলে কিন্তু অবুঝ ছেলেগুলো যেকোনো সময় বিপদগামী হয়ে যেতে পারে। তখন পুরো পরিবার ভয়ানক বিপদে পড়ে যেতে পারে। এমন আশঙ্কা সত্য না হোক কামনা করি। ওদের জন্য শুভকামনা রইল।

লেখক : পুলিশ কর্মকর্তা।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর