ঈশ্বরকণার আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত সার্নের লার্জ হার্ডন কোলাইডার (এলএইচসি) থেকেও দ্বিগুণ বড় কোলাইডার বানাতে চায় চীন। ওই কোলাইডারের মধ্যে পুরো একটি শহরও ধরে রাখা যাবে!
পৃথিবীর আর সব কোলাইডার তখন বামন কোলাইডার হিসেবে বিবেচিত হবে। চীনা বিজ্ঞানীরা ঠিক এরকমই স্বপ্ন দেখছেন। এরইমধ্যে দৈত্যাকার কোলাইডারের ছক আঁকা শুরুও হয়ে গেছে। কোলাইডার শব্দটি আগে স্পষ্ট হওয়া দরকার। এর শাব্দিক অর্থ সংঘর্ষকারী। হ্যাঁ, ঠিক তাই। তবে এখানে মানুষে মানুষে সংঘর্ষ বাঁধে না। এখানে সংঘর্ষ ইচ্ছা করেই বাধানো হয়, তবে তা কণায়-কণায়। এই কণা দিয়েই গড়া আমি-আপনি, আমাদের পায়ের নিচের ধুলোকণা থেকে মহাকাশের গ্রহ-তারা, পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ডই। কণাদের নানান জাত আছে, পাত আছে। আছে আলাদা আলাদা নাম।
এরকম তিনটি কণার নাম প্রোটন, ইলেকট্রন, নিউট্রন। এদের মৌলিক কণা বলা হয়। যে কোনো বস্তুর একটি পরমাণুতে এরা তিনজন স্থায়ী বাস করে। কেন্দ্রে যুগল হয়ে বাস করে প্রোটন ও নিউট্রন। আর ইলেকট্রন তাদের চারপাশে চক্কর খেতে থাকে। প্রোটন ধনাত্মক কণা। ইলেকট্রন ঋণাত্মক। নিরপক্ষে হলো নিউট্রন। বাস্তব বিশ্বে এই কথাগুলো সত্যি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমনও এক বিশ্বের কথা জানেন, যেখানে ইলেকট্রন থাকে কিন্তু তার মান ধনাত্মক। প্রোটনও থাকে, কিন্তু ঋণাত্মক। ওই উল্টো বিশ্বের ইলেকট্রনকে বলা হয় পজিট্রন।
সুইজারল্যান্ডের সীমান্তে সার্নের এলএইচসিতে ঈশ্বরকণার জন্ম দিতে বিজ্ঞানীরা সংঘর্ষ ঘটিয়েছিলেন। আর চীনা বিজ্ঞানীরা যে বিশালাকার কোলাইডার তৈরির পরিকল্পনা করছেন সেখানে সংঘর্ষ ঘটানো হবে ইলেকট্রন-পজিট্রনের। এজন্যই কোলাইডারটির নাম দেওয়া হয়েছে সার্কুলার ইলেকট্রন পজিট্রন কোলাইডার, সংক্ষেপে সিইপিসি। এর পরিধি হবে ৮০ কিলোমিটার। চীনের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে এই প্রকল্পে কাজ করবেন পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা। প্রকল্পের অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী গাও জি বলেছেন, 'এটা বিশ্বের মেশিন। বিশ্বের জন্য কাজ করবে এটি।' আল জাজিরা।