শনিবার, ১০ মে, ২০১৪ ০০:০০ টা

আড়াই বছরেও ডিজাইন হয়নি ইসির স্মার্ট কার্ডের

বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদ

ভোটারদের হাতে আধুনিক পরিচয়পত্র তুলে দিতে নির্বাচন কমিশনের নেওয়া 'স্মার্ট কার্ড' প্রকল্পের বেহালদশা। প্রকল্পের মেয়াদ আড়াই বছর পার হলেও এখনো নতুন কার্ডের ডিজাইনই করতে পারেনি ইসি। কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এদিকে ইসি কাজ সময়মতো শেষ করতে পারবে না বলে আগেভাগেই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যানসিং অ্যাকসেস টু সার্ভিসেস (আইডিয়া) তথা স্মার্ট কার্ড প্রকল্পকে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক।

ইসির প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,

বিশ্বব্যাংক আগামী জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চেয়েছে। স্মার্ট কার্ড প্রকল্প সম্পর্কে জানতে আগামী মাসে বিশ্বব্যাংকের একটি পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। সফরকারী দলের প্রতিবেদনের ওপর প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের বিষয়টি নির্ভর করছে। তারা বলেন, প্রকল্পের অগ্রগতির জন্য স্মার্ট কার্ড দেওয়ার বিষয়ে অন্য দেশের অভিজ্ঞতা অর্জন করতেই সিইসিসহ তিন নির্বাচন কমিশনারের ধারাবাহিক সফর চলছে। প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানান, এ প্রকল্পের জন্য প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ। আড়াই বছরে এ প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। প্রকল্পের কার্যক্রম দেখাতে নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তড়িঘড়ি করে স্মার্ট কার্ড তৈরি ও বিতরণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রকল্পের মূল কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে পরামর্শকও নিয়োগ দিয়েছে ইসি। অন্যদিকে প্রকল্পের নতুন কাজের অংশ হিসেবেই সিইসিসহ অন্য নির্বাচন কমিশনাররা সফর শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুর সফর করেছেন। এর আগে সিইসিও দীর্ঘ দেড় মাসের সফর করেন। বর্তমানে যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফরে রয়েছেন কমিশনার আবু হাফিজ, ভারপ্রাপ্ত সচিব সিরাজুল ইসলাম ও অন্য কর্মকর্তারা। এরপর আরও একজন কমিশনারের ১৫ থেকে ২৬ মে-র মধ্যে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর করার কথা রয়েছে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর আইডিয়া প্রকল্পের অনুমোদন হয়। শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে। প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয় এক হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প-সাহায্য এক হাজার ৩৬৫ কোটি এবং সরকারের ১৪ কোটি টাকা। তবে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংক নিবন্ধন আইন পর্যালোচনা করে আইন ও বিধিতে সংশোধনী আনতে বললেও ইসি তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি। যদিও এখন তা সংশোধনের জন্য জোর চেষ্টা চলছে। এ প্রকল্পের বিষয়ে একাধিক নির্বাচন কমিশনারের কাছে জানতে চাইলেও তারা এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে প্রকল্পের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেছেন, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ ও জুনের মধ্যে অগ্রগতি দেখানো অসম্ভব। তিনি বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে। আর প্রকল্পের কাজ দেখাতে কমিশনাররা বিদেশ সফর করছেন। ইসির কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে ভোটারদের যে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে তা-ই সবাইকে দেওয়া সম্ভব্য হয়নি। এমনকি গত বছরের হালনাগাদের পরিচয়পত্র এখনো অনেকে পাননি। বিশেষ করে নাটোরের নবগঠিত নলডাঙ্গা উপজেলায় ভোট হবে ৯ জুন। কিন্তু এ এলাকার অনেকেই এখনো পরিচয়পত্র পাননি বলে ইসিতে অভিযোগ এসেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর